আরও একবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হতাশ করেনি সর্বোচ্চ শিরোপাধারী রিয়াল মাদ্রিদকে। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে সেমিফাইনালের দুই লেগেই রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের পর তারা ১৮তম বার ফাইনালে পা রেখেছে। তবে দুই দলের লড়াইয়ে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বিশেষত দ্বিতীয় লেগে বায়ার্নের গোল বাতিল নিয়ে ক্ষুব্ধ কোচ ও ফুটবলাররা। যা নিয়ে পরে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তিও।

বায়ার্ন ডিফেন্ডার ম্যাথিয়াস ডি লিট মনে করেন, তার গোলটি ছিল সবচেয়ে ‘ক্রুশিয়াল’। কিন্তু তখনই অফসাইডের সঙ্কেত দেন সহকারী রেফারি টমাস লিস্টকিয়ুইজ, যা দেখে একই দাবিতে বাঁশি বাজান রেফারি সাইমন মারকিনিয়াক। তখন যোগ করা সময়ের ১৩তম মিনিট চলছিল, মাদ্রিদ এগিয়ে ছিল ২–১ এ এবং দুই লেগ মিলিয়ে যা দাঁড়ায় ৪–৩ গোলে। সবমিলিয়ে ওই ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাবটি।

যা নিয়ে ওই গোলটি করা বায়ার্ন ডিফেন্ডার ডি লিট বলেন, ‘আমি এটা বলতে চাই না যে, রিয়ালের পক্ষেই সবসময় রেফারি থাকে। তবে আজ ওটা বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। এটাই রিয়াল, যখন আপনি ভাববেন ওরা শেষ হিয়ে গিয়েছে, আর একটামাত্র শ্বাস নেওয়া বাকি... এজন্যই ওরা ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী দল।’

বিষয়টি একেবারেই মানতে পারছেন না বায়ার্ন কোচ থমাস টুখেল, ‘এটা যাচ্ছেতাই। একেবারেই যা তা। আর নিশ্চিতভাবেই ফুটবলের আইন ভঙ্গ করেছে। নিয়ম বলছে খেলা চালিয়ে যেতে হবে। প্রথম ভুল করেছে লাইন্সম্যান। পরের ভুলটা করেছে রেফারি। এমন একটা পরিস্থিতিতে, যখন আপনি একেবারেই নিশ্চিত না যে অফসাইড হচ্ছে, তখন আপনি কখনোই অফসাইডের পতাকা তুলতে পারেন না। কোনোভাবেই না। এমন একটা পরিস্থিতিতে, এতটা সাহস নিয়ে অফসাইড ডাকা, সত্যিই অনেক বড় কিছু।’

বার্নাব্যুতে খেলা না হলে, রেফারির সিদ্ধান্ত এমন হতো না বলেও দাবি টুখেলের, ‘রেফারি যখন দেখেছেন আমরা সেকেন্ড বল পেয়েছি, রিবাউন্ড পেয়েছি আর শট করেছি, সবকিছুই ৫ সেকেন্ডের মধ্যে হয়েছে। তার সুযোগ ছিল বাঁশি না বাজানোর। কিন্তু তিনি বাঁশি বাজানোর সিদ্ধান্ত নেন। আমি দুঃখিত (এভাবে বলার জন্য), তবে এটা সব ধরনের আইনের বিরুদ্ধে। আমরা মেনে নিচ্ছি আমরা হেরেছি। এটাই চূড়ান্ত। তবে বিষয়টা অন্যপ্রান্তে হলে সিদ্ধান্ত এমন হতো না।’

বায়ার্ন কোচ ও খেলোয়াড়ের এমন দাবির বিপরীতে মন্তব্য করেছেন রিয়াল কোচ আনচেলত্তিও। তিনি বলেন, ‘এটি (ডি লিটের অফসাইড) সম্পূর্ণ স্পষ্ট, তা দেখেই লাইন্সম্যান পতাকা তুলেছেন এবং বাঁশি বাজিয়ে থামার সঙ্কেত দিয়েছেন রেফারি। যদি তারা (বায়ার্ন) এটি নিয়ে অভিযোগ তোলে, আমরাও নাচোর গোল বাতিল হওয়া নিয়ে অভিযোগ তুলছি। কারণ তার আগে কিমিচ (বায়ার্ন ফুটবলার জশুয়া কিমিচ) ডাইভ দিয়েছিলেন, দুজনেই একে অপরকে ধাক্কা দিয়েছেন।’

দু’দলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আসলেও, ফল নির্ধারণ হয়ে গেছে বার্নাব্যুতে। এখন ফাইনাল মঞ্চায়নের অপেক্ষায় ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক ওয়েম্বলি। যেখানে ১ জুন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ১৬তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে নামবে রিয়াল। অন্যদিকে, জার্মান ক্লাবটি দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে।

জেএ/এএইচএস