ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে যখন সন্ধ্যা ছয়টা তখন কানাডার এডমন্টনে মাত্র সকাল সাতট। অন্য দিনের চেয়ে আজকের সকালটা একটু ভিন্নই সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহের জন্য। কারণ তার ছেলে কাজেম শাহ কিরমানি জাতীয় ফুটবল দলে ডাক পেয়েছেন। 

ছেলের পাসপোর্ট ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতায় আগেই আঁচ করেছিলেন এমন সংবাদের। আজ আনুষ্ঠানিকতার পর তাই খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস, ‘বাবা হিসেবে আমার খুবই ভালো লাগার দিন। আমার ছেলে দেশের হয়ে খেলার জন্য ডাক পেয়েছে। এর চেয়ে খুশির খবর আর কি হতে পারে’ কানাডা থেকে বলছিলেন হালিম।

হালিমের ছেলে কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে হলেও বেড়ে উঠা কানাডায়। সেখানে পড়াশোনা করে ফুটবলের টানেই দেশে ফেরা। আবহাওয়া, সংস্কৃতি সকল প্রতিবন্ধকতা দূরে ঠেলে জাতীয় দলের স্বপ্নে খেলে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশ পুলিশের মিডফিল্ডার হয়ে দুই মৌসুম খেলছেন। গত বছর নভেম্বরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রায় ডাক পেয়ে যাচ্ছিলেন কাজেম। দল যখন প্রায় চূড়ান্ত সেই মুহূর্তে পুলিশের এক ম্যাচে আঘাত পেয়ে তালিকার বাইরে চলে যান কাজেম। 

ইনজুরি কাটিয়ে নিজেকে আবার মাঠে ফিরিয়েছেন। চলতি লিগে গোল করার পাশাপাশি করিয়েছেনও। ফর্ম, ফিটনেস ও কোচের পরিকল্পনা সকল কিছু মেলায় জাতীয় দলে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছেন পুলিশের কানাডা প্রবাসী মিডফিল্ডার কাজেম শাহ কিরমানি। জন্ম বাংলাদেশে ও কানাডার হয়ে যুব দলে না খেলায় রেজিস্ট্রেশন জটিলতায় পড়তে হয়নি বাফুফেকে। 

নব্বইয়ের দশকে ঘরোয়া ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হালিম শাহ। কয়েকটি আসরে লিগে শীর্ষ রান সংগ্রাহকের তালিকায় থাকত তার নাম। জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাথমিক তালিকায় নামও ছিল। নানা কারণে দেশের হয়ে আর মাঠে নামা হয়নি। তাই হালিমের চাওয়া, ‘এখন ছেলে ২৮ জনে এসেছে। ফুটবলে চূড়ান্ত দল ২৩ জনের হবে। নিজেকে আরো প্রমাণ করে তাকে ২৩ এ আসতে হবে। এরপর ক্রমান্বয়ে একাদশে। এখনো আরো অনেক পথ পারি দিতে হবে’।

হালিম পরিবার নিয়ে কানাডাতেই থাকেন। ছেলে ফুটবলের জন্য ঢাকায় থাকে। হালিমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন কাজেমের খোঁজখবর রাখেন। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক নির্বাচক বেশ খুশি ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সন্তানের এই খবরে, ‘কাজেম বেশ পরিশ্রমী। সে তার লক্ষ্যপূরণে চেষ্টা চালিয়ে গেছে। আজ সেটার প্রাথমিক ফল পেয়েছে। আশা করি সে আরো এগিয়ে যাবে।’

বর্তমান সময়ে তরুণরা ক্রিকেটের দিকেই ঝুঁকে। সেখানে একজন শীর্ষ ক্রিকেটারের ছেলে জাতীয় ফুটবল দলে ডাক পাওয়া দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ এক বার্তাই। এই বিষয়ে হালিমের বক্তব্য, ‘ছেলে কানাডাতে ফুটবলই বেশি খেলেছে। তার ইচ্ছে ছিল ফুটবলার হওয়া। বাবা হিসেবে ছেলের স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দিয়েছি। ফুটবল, ক্রিকেট সবই দেশের জন্য খেলা। আমার ছেলে দেশের জন্য খেলবে বাবা হিসেবে এর চেয়ে পাওয়া আর কি হতে পারে।’ 

এজেড/জেএ