প্রায় তিন বছর বিরতি নেওয়ার পর আবারও কোচিংয়ে ফেরার আভাস দিয়েছেন ফরাসি কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। এর আগে থেকেই তিনি বায়ার্ন মিউনিখের কোচ হতে পারেন বলে গুঞ্জন চলছে। তবে রিয়াল মাদ্রিদের এই কিংবদন্তিকে পেতে আগ্রহ দেখাচ্ছে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও। শেষ পর্যন্ত কাদের সঙ্গে দফরফা হয় জিদানের, অথবা মাঠের বাইরে তার বিরতি আরও দীর্ঘ হয় কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

সম্প্রতি ইতালির বিশ্বকাপজয়ী কোচ মার্সেলো লিপ্পিকে নিয়ে বানানো একটি প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন জিদান। যেখানে তিনি নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন। সাবেক এই রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কোচিংয়ে ফেরা নিয়ে জানান, ‘কেন নয়, যেকোনো কিছু হতে পারে। এ মুহূর্তে আমি অন্য কিছু করছি কিন্তু দেখা যাক কী হয়। আমি নিশ্চিতভাবেই আবারও বেঞ্চে (কোচিং) ফিরতে চাই।’ 

এর আগে জিদানের কোচিংয়ে ফেরার গুঞ্জন শুরু হয় বায়ার্ন থেকে থমাস টুখেলের বরখাস্তের পর। চলতি মৌসুমে বাজে পরিস্থিতিতে পড়া বুন্দেস লিগার সর্বোচ্চবারের চ্যাম্পিয়নরা এই কোচকে বছরের মাঝামাঝিতে ছেড়ে যেতে বলেছে। তার আগেই তার চাকরি যাওয়ার আগাম বার্তা দিয়েছিল স্কাই স্পোর্টস জার্মানি। একইসঙ্গে তারা জানায়— দলের নতুন কোচ হিসেবে সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ ওলে গুনার সুলশার কিংবা সাবেক রিয়াল কোচ জিদানকে আনার কথা ভাবছে বায়ার্ন।

এদিকে, ম্যানইউ’র মালিক জিম র‌্যাটক্লিফও রেড ডেভিলদের বর্তমান কোচ এরিক টেন হাগের জায়গায় জিদানকে আনার স্বপ্ন দেখছেন। ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফুট মার্কাতোর দাবি– জিদান র‌্যাটক্লিফের বহুল কাঙ্ক্ষিত প্রার্থী। যদি জিজু দলটির ডাগআউটের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ দেখান, তাহলে তারা এই ফ্রেঞ্চম্যানের সার্ভিস পেতে চায়। তবে তাদের চিন্তার জায়গায় রয়েছে আরেকটি বিষয়। তিন বছর আগে জিদান যখন রিয়াল ছাড়েন, তখন আরেকটি ক্লাবের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। একই অভিজ্ঞতায় পড়তে চায় না ম্যানইউ।

মাঠের বাইরে থাকা জিদান মাঝে একবার ফ্রান্স জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন। তবে ফরাসিরা বিশ্বকাপজয়ী কোচ দিদিয়ের দেশমের মেয়াদ বাড়ানোয় তার ইচ্ছা সেই দফায় পূরণ হয়নি। এর মাঝে ভাষা ও সংস্কৃতিগত কারণে জিদান ব্রাজিলসহ একাধিক দেশের কোচিংও করাবেন না বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়। সবমিলিয়ে আবারও কোনো ক্লাবেই তাকে দেখা যাওয়ার জোর সম্ভাবনা।

জিদানের কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা এখন পর্যন্ত কেবল রিয়ালের ডাগআউটে হয়েছে। যেখানে তার পুরো সময়টাই ছিল সোনায় মোড়ানো। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ের এই নায়ক রিয়াল মাদ্রিদের সহকারী কোচ হিসেবে নতুন অধ্যায় শুরু করেন ২০১৩ সালে। এরপর ‘বি’ দল হয়ে দায়িত্ব নেন রিয়ালের মূল দলের। প্রথম দফায় দায়িত্ব নিয়ে তিনি রিয়ালকে টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতান। ২০১৬-১৭ মৌসুমে জেতান লা লিগা শিরোপাও। এরপর দ্বিতীয় দফায় ফিরে ২০১৯-২০ মৌসুমে লিগ জেতান রিয়ালকে। ২০২১ সালে লস ব্লাঙ্কোসদের ডেরা ছাড়েন ফরাসি কিংবদন্তি জিদান।

এএইচএস