ইরাক এবং ইরানের মধ্যেকার বিরোধের প্রসঙ্গ নতুন কিছু না। ভূ-রাজনৈতিক কারণে দুই দেশের মধ্যেকার উত্তেজনা বেড়েছিল বহুবারই। এবার ফুটবলের মাঠে দেখা গেল এমন বিরোধের বহিঃপ্রকাশ। এশিয়ান কাপ ফুটবলে ইরানি রেফারি আলিরেজা ফাগহানির বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এসেছে। তার পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের কারণেই জর্ডানের কাছে নাটকীয় হার ইরাকের। 

এশিয়ান কাপের শেষ ষোলোয় ইরাকের বিপক্ষে জর্ডানের ৩–২ গোলে জয়ের ম্যাচে আপাতত আলোচনায় রেফারি আলিরেজা ফাগহানি। বিশেষ ভঙ্গিতে গোল উদযাপন করায় তিনি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন ইরাকের স্ট্রাইকার আয়মান হুসেইনকে। এশিয়ান কাপে এবার ইরাকের ৪ ম্যাচে ৬ গোল করেছেন আয়মান। আর তার লালকার্ড যে ইরাকের পরাজয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, সেটা বলাই বাহুল্য। 

শেষ ষোলোর লড়াইয়ে প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ে করা গোলে এগিয়ে গিয়েছিল জর্ডান। সেসময় জর্ডানের খেলোয়াড়রা দলবদ্ধভাবে মাঠে বসে ঘাস খাওয়ার ভঙ্গিতে উদযাপন করেছিলেন। গণমাধ্যমের দাবি, জর্ডানের খেলোয়াড়েরা তাদের জাতীয় খাবার ‘মানসাফ’ খাওয়ার ভঙ্গিতে গোল উদ্‌যাপন করেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত এখান থেকেই। বিরতির পর দুই গোল করে ম্যাচে এগিয়ে যায় ইরাক। ৭৬ মিনিটে করা গোলটি আয়মানের। গোল করার পর মাঠে টাচলাইনের কাছাকাছি বসে ঘাস খাওয়ার ভঙ্গি করেন। ঠিক যেমনটা জর্ডানের খেলোয়াড়েরা করেছিলেন প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ে। 

গোল উদযাপন করার পর উঠে দাঁড়িয়ে আয়মান নিজেদের অর্ধে ফিরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু রেফারি আলিরেজা ফাগহানি তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ১০ জনে পরিণত হওয়া ইরাককে শেষদিকে চেপে ধরে জর্ডান। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের যোগ করা সময়ে ২ গোল করে জয় তুলে নেয় জর্ডান। শেষ বাঁশি বাজার পর জর্ডান দল আবারও মাঠে ঘাস খাওয়ার ভঙ্গিতে জয় উদযাপন করেছে। 

তবে দুইবারই জর্ডানের এমন আচরণে নির্বিকার ছিলেন ম্যাচের ইরানি রেফারি আলিরেজা ফাগহানি। বিপরীতে একই উদযাপনের জন্য লালকার্ড দেখতে হলো ইরাকের গুরুত্বপূর্ণ তারকা আয়মান হুসেইনকে। 

ইরাক কোচ জেসাস কাসাস শেষপর্যন্ত রেফারির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। কাসাস বলেন, ‘লাল কার্ডটি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। যেকোনো বড় টুর্নামেন্টেই খেলোয়াড়েরা গোল উদযাপন করে। রেফারি এ জন্য লাল কার্ড দেখাতে পারেন না। জর্ডানও একইভাবে উদ্‌যাপন করেছে কিন্তু তাদের কোনো কার্ড দেখানো হয়নি।’

ইরানি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেফারি আলিরেজা ফাগহানি ২০০৮ সাল থেকে তিনি ফিফার তালিকাভুক্ত আন্তর্জাতিক রেফারি। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল, এএফসি এশিয়ান কাপ ফাইনাল, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ফাইনাল, ২০১৬ অলিম্পিক ফুটবল ফাইনাল, ফিফা কনফেডারেশনস কাপ ছাড়াও ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনা করেছেন ফাগহানি।