শেষ তিন চার বছর ধরেই গুঞ্জন ছিল। এরপর ইউরোপিয়ান সুপার লিগের আলোচনাটা গেল ডিসেম্বরের দিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। মাঝখানে থিতিয়ে পড়লেও রোববার রাতে আসে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদসহ মোট ১২টি দলের সম্মতিতে আসছে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ। তার কিছু আগে থেকেই নানা মন্তব্য, আলোচনা-সমালোচনায় সরগরম ছিল ইউরোপীয় ফুটবল-পাড়া। এরপর উয়েফা আর ফিফা তো বিষয়টাকে অনুমোদন দেয়ইনি উল্টো  খেলোয়াড়দের জানিয়েই দিয়েছে, যদি সুপার লিগে খেলতে চাও, তাহলে জাতীয় দলের আশা ছেড়ে দাও।

ক্লাবগুলো অবশ্য জানাচ্ছে, ফিফা ও উয়েফার সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসবে সবাই। তবে বিশ্ব ও ইউরোপীয় ফুটবলের শীর্ষ দুই প্রতিষ্ঠান এতে সায় দেয়নি। বরং আগের মতোই নিজেদের কঠিন মনোভাব ধরে রেখেছে। এদিকে তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগসহ শীর্ষস্থানীয় লিগগুলোও জানিয়ে দিয়েছে, সুপার লিগে খেললে ঘরোয়া লিগ থেকে আজীবন নিষিদ্ধ হয়ে যাবে ক্লাবগুলো। উয়েফার নিষেধাজ্ঞা তো আছেই, ফিফাও সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সুপার লিগে খেললে, খেলোয়াড়রা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষিদ্ধ হয়ে যাবেন জাতীয় দল থেকেও।

এখন পর্যন্ত ১২টি ক্লাব এতে সায় দিয়েছে। দলগুলো হলো, রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম, চেলসি, লিভারপুল, জুভেন্তাস, ইন্টার মিলান, এসি মিলান। ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যমে গুঞ্জন, এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠাতা ক্লাব হিসেবে যুক্ত হতে পারে আরও তিনটি ক্লাব। 

সব মিলিয়ে আরও আটটি ক্লাবকে প্রতিযোগিতায় আনতে চান আয়োজকরা। ২০ দলের এই টুর্নামেন্ট দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে ১৮টি করে ম্যাচ। সেখান থেকে প্রতি গ্রুপের শীর্ষ তিন দল সরাসরি পাড়ি জমাবে কোয়ার্টার ফাইনালে, আর চতুর্থ ও পঞ্চম দলগুলোর প্লে অফ শেষে আরও দুই দল আসবে শেষ আটে। বাকি সূচিটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতোই। 

শোনা যাচ্ছে ঘরোয়া লিগের খেলাগুলো ধরে রেখেই চলবে এই টুর্নামেন্ট, যদি লিগগুলোর অনুমতি মেলে তবে। লিগ কমিটির পদে আসীন হয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ, সহ-সভাপতি হয়েছেন জুভেন্তাস চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া অ্যানিয়েল্লি, আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জোয়েল গ্লেজার।
ইতোমধ্যেই এই সুপার লিগে ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগও হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। শোনা যাচ্ছে, লিগে যুক্ত হওয়ার সম্মতি দিলেই নগদ ৪২৫ মিলিয়ন ইউরো ঢুকে যাবে ক্লাবের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। বিপুল অর্থের ঝনঝনানিই মূলত এত বড় এক প্রকল্পে নামার সাহস দিয়েছে ইউরোপীয় ক্লাবহুলোকে। এত অর্থের হাতছানি অবশ্য বায়ার্ন মিউনিখ ও পিএসজিকে এ প্রকল্পে ঢোকাতে পারেনি এখনো।

তবে এ নিয়ে কেবল বিবৃতি দিয়েই বসে নেই উয়েফা। ইতোমধ্যেই দফায় দফায় চলছে বৈঠক, শোনা যাচ্ছে আজ সোমবার যে কোনো সময় আসতে পারে বড় সিদ্ধান্তও।

এনইউ/এটি