ক্রিকেটে ভারত যতটা শক্তিশালী, ফুটবলে ততটা নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ফুটবলের হাঁকডাকও নেহাত কম না। নিজেদের ফুটবলে ব্যাপক আকারে বিনিয়োগ করেছে দেশটি। কাজ করেছে স্প্যানিশ, ইতালিয়ান কিংবা ইতালিয়ান লিগের ক্লাবের সঙ্গে। তাতে উন্নতির ছাপও পড়েছে তাদের ফুটবলে। দেশটি এবার খেলতে গিয়েছে এশিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। 

মাস দুয়েক আগেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছিল ভারত। ফুটবলে সুযোগ ছিল প্রতিশোধের। যদিও শক্তির পার্থক্য দুইদলের মধ্যে বিস্তর। মাঠের খেলাতেও সেটা বোঝা গেল স্পষ্ট আকারে। অস্ট্রেলিয়ার আক্রমণের মুখে ভারত কেবল রক্ষ্মণই সামলেছে বড় সময় জুড়ে। তবে বাংলাদেশকে ৭-০ গোলের লজ্জা দেওয়া অস্ট্রেলিয়াকে ভারত যেভাবে আটকেছে, তাতে প্রশংসা পেতেই পারে ইগর স্টিমাচের দল। 

কাতারের দোহায় এশিয়ান কাপ ফুটবলে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত হেরেছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। সুনীল ছেত্রী ম্যাচের শুরুতেই মিস না করলে হয়ত অন্য কিছুও হতে পারতো তাদের জন্য। ভারতের কোচ স্টিমাচ নিজে ছিলেন ডিফেন্ডার। তাই ডিফেন্স সামাল দিতেই মরিয়া ছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পুরো মনোযোগ রক্ষ্মণেই দিয়েছে তারা। অতি রক্ষ্মণাত্মক ফুটবলে অবশ্য সফল হওয়া কষ্টকর। ভারতেরও তাই হলো দিনশেষে। 

প্রথমার্ধে ভারত গোল না খেলেও সুবিধা করতে পারেনি সেই অর্থে। বল ক্লিয়ারেন্সেই পার হয়েছে পুরোটা সময়। প্রথমার্ধে প্রচুর কর্নার পেলেও গোল করতে পারেননি হ্যারি সাউটাররা। ভারতের রক্ষণে ৫-৬ জন ডিফেন্ডারের উপস্থিতি খানিক হলেও আটকেছে তাদের। 

দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলিয়ার আসল খেলা বেরিয়ে এল। এবার আর পাস বা ক্রস না। গতিতেই পরাস্ত করে দিল ভারতীয়দের। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে গোল করে অস্ট্রেলিয়া। বাঁ দিক থেকে ক্রস ভেসে এসেছিল। গোলকিপার গুরপ্রীত সরাসরি করলেন ফিস্ট। বক্সের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকা জ্যাকসন আরভিন ভুল করলেন না। বল রিসিভ করেই বাঁ পায়ের শটে গোল। 

গোল খেয়েই কিছুটা দমে গেল ভারত। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ফুটবলারদের মনোবলের ভাঙন। উল্টো দিকে, অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলারেরা তখন আরেকটা গোলের সন্ধানে। সেটাও এসে গেল খানিক বাদে। সকারুজরা গতিতে বারেবারেই পরাস্থ করছিলেন ভারতকে। সেই গতিতেই বাজিমাত করলেন রিলি ম্যাকগ্রি। ডান দিক থেকে গতিতে লালেংমাউইয়া রালতেকে পরাস্ত করে নীচু বল বাড়ালেন বক্সে। আনমার্কড জর্ডান বস অনায়াসে বাঁ পায়ের টোকায় গোল করেন। 

শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া গোলের ব্যবধান বাড়াতেই পারত। কিন্তু মরিয়া ডিফেন্স এবং গুরপ্রীতের সেভ ভারতকে বাঁচিয়ে দেয়। আর প্রথমার্ধে সুনীল ছেত্রীর গোল মিসের পর সেই অর্থে ভারতকে আক্রমণই করতে দেয়নি অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচটাও শেষ হয়েছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। 

জেএ