‘ব্রাজিলের বর্তমান অবস্থা দেখলে পেলেও কষ্ট পেতেন’
মাঠের ফুটবলে সময়টা একেবারেই ভালো কাটছে না ব্রাজিলের। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ ফার্নান্দো দিনিজের অধীনে নিজেদের সবশেষ তিন ম্যাচেই হারের মুখ দেখেছে সেলেসাওরা। এমনকি নিজেদের ইতিহাসে তারা প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচও হেরেছে।
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এই মুহূর্তে তাদের অবস্থান ষষ্ঠ। এই অঞ্চল থেকে সরাসরি ছয়টি দল বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। বর্তমানে দলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমারকে ছাড়া সেলেসাওরা নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। হাঁটুর গুরুতর ইনজুরিতে আসন্ন কোপা আমেরিকাতেও থাকছেন না নেইমার।
বিজ্ঞাপন
ব্রাজিল জাতীয় দলের বর্তমান পরিস্থিতি দেখলে পেলেও কষ্ট পেতেন বলে মন্তব্য করেছেন কিংবদন্তি এই ফুটবলারের ছেলে এডিনহো। পেলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর প্রাক্কালে বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এডিনহো এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন
পেলের সাত সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় এডিনহো নিজেও একজন পেশাদার ফুটবলার ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তিনি পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানান। ৫৩ বছর বয়সী এডিনহো বলেছেন, ‘ব্রাজিল জাতীয় দলের এই সমস্যা এক রাতের মধ্যে হয়নি। এখানে অনেক বড় ও জটিল সমস্যা রয়েছে। আমরা একটি পতনের সম্মুখীন হয়েছি। এখনো এই দলে বেশ কিছু তারকা রয়েছে। কিন্তু অতীতে আরো উঁচু মানের খেলোয়াড়রা ছিলেন।’
১৯৭৫ সালে পেলে ও তার স্ত্রী রোজমেরির মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে এডিনহো তার মায়ের সাথে নিউইয়র্কে চলে যান। সেখানে মায়ের কাছে বড় হয়েছেন এডিনহো। যদিও পেলের জীবনের শেষ সময়ে আবারো বাবার কাছে চলে এসেছিলেন এডিনহো। অনেকটা দুঃখ করেই এডিনহো বলেছেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এই পরিস্থিতিতে যদি পেলে থাকতেন তাহলে তিনি অনেক কষ্ট পেতেন।’
পেলে তার ক্যারিয়ারের বেশীরভাগ সময়ই কাটিয়েছেন সান্তোসে। তার প্রিয় এই ক্লাবটিও বর্তমানে সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ক্লাবের ১১১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত তারা রেলিগেটেড হয়ে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে গেছে। ইতোমধ্যে ক্লাবের আর্থিক সমস্যাও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, বোর্ড সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে।
কয়েক মৌসুমে সান্তোসের গোলরক্ষক হিসেবে খেলা এডিনহো বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশতঃ আমি এখানে কোনো বিস্ময়কর কিছু দেখছি না। যারা এই ক্লাবের নিয়মিত কাজের সাথে জড়িত তারা এই ভবিষ্যদ্বাণী আগেই করে রেখেছিল। দিনের শেষে এমনটাই হওয়ার কথা ছিল।’
গত বছর ২৯ ডিসেম্বর ৮২ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফুটবল কিংবদন্তি পেলে মৃত্যুবরণ করেন। পেলের ছয় সন্তান মিলে পারিবারিক সিদ্ধান্তে শুক্রবার সান্তোসে বাবার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পেলের মৃত্যুতে পুরো পরিবারের ওপর কালো ছায়া নেমে এসেছে স্বীকার করে এডিনহো বলেছেন, ‘সে একজন ব্যতিক্রমী খেলোয়াড় ছিলেন। আমরা তাকে মিস করছি। তার মাধ্যমে দেশের নাম বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল হয়েছে, আমরা এজন্য দারুন গর্বিত।’