ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের রায়ের পর টুর্নামেন্ট চালুর দুয়ার খুলে গেছে ইউরোপিয়ান সুপার লিগের (ইএসএল) সামনে। এতদিন উয়েফা ও ফিফার বাধায় এই লিগটি চালু করা যায়নি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে— এই আশঙ্কা করেছিল উয়েফা। সে কারণে বিভিন্ন ক্লাব ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সুপার লিগে যোগ দিতে পারেনি। কিন্তু ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালত উয়েফা ও ফিফার এমন আচরণকে বেআইনি বলে রায় দিয়েছে। এরপরই লিগের ফরম্যাট ঘোষণা করেছে সুপার লিগ কর্তৃপক্ষ। যেখানে অংশ নেবে ৬৪টি দল।

ইএসএল আপাতত ছেলেদের ফুটবলের ফরম্যাট প্রকাশ করেছে, যেখানে ইউরোপীয় দলগুলোর সমন্বয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গতিশীল একটি টুর্নামেন্ট চালুর প্রত্যাশা আয়োজকদের। এর ফরম্যাট প্যান-ইউরোপিয়ান পিরামিড আকৃতির থ্রি টায়ারে সাজানো হয়েছে। ৬৪টি দল তিনটি ভিন্ন স্তরের লিগে খেলবে। শীর্ষ লিগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্টার লিগ’, যেখানে দুই ভাগে ভাগ হয়ে ১৬টি দল খেলবে। দ্বিতীয় স্তরের ‘গোল্ড লিগে’ একইভাবে দুই ভাগে ভাগ হয়ে খেলবে ১৬টি দল। আর তৃতীয় স্তরের ব্লু লিগে দল থাকবে ৩২টি। এরা চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। খেলায় নিজেদের অবস্থানের ভিত্তিতে প্রতিটি দল অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে, তবে সেখানে কোনো দলের স্থায়ী সদস্যপদ থাকবে না।

প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী— নকআউট পর্বে ওঠার আগে প্রতিটি ক্লাব ১৪টি করে ম্যাচ খেলবে। টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া প্রতিটি ক্লাব অন্তত ৪০ কোটি ইউরো করে পাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে এ২২। যেটা উয়েফার দেওয়া অংশগ্রহণ ফির চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। টুর্নামেন্টের সব খেলা হবে সপ্তাহের মধ্যে। এখন যে সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আর উয়েফার অন্যান্য লিগগুলো হয়। এছাড়া ৩২ দলের মেয়েদের টুর্নামেন্ট আয়োজনেরও পরিকল্পনা করছে এ২২।

পরবর্তীতে বছরের শেষে সুপার লিগে খেলা দলগুলোর ক্ষেত্রে উত্তরণ আর অবনমনের নিয়ম থাকবে। ইউনিফাই নামে নতুন একটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে খেলাগুলো বিনামূল্য দেখানোর ঘোষণা দিয়েছে লিগের আয়োজক প্রতিষ্ঠান এ২২ স্পোর্টস। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বার্নড রেইচার্ট এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘ফুটবল মুক্ত। উয়েফার একাধিপত্য থেকে মুক্ত। এখন নিষেধাজ্ঞার ভয় না করে সেরা পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে দলগুলো অংশ নেবে মাঠের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে। স্থায়ী কোনো সদস্য থাকবে না, ক্লাবগুলো ঘরোয়া লিগেও খেলবে।’ 

এর আগে ২০২১ সালে প্রথম সুপার লিগ আয়োজনের চেষ্টা করেছিল সংস্থাটি। যদিও তখন ১২ ক্লাব নিয়ে তাদের এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। বেশ কিছু দল সেখানে অংশ নেওয়ার ঘোষণাও দেয়, কিন্তু পরে ফিফা-উয়েফার বাধায় সেটি আর সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত কেবল অনড় ছিল রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। বিশেষ করে রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ চমকে দেওয়া সেই প্রকল্প সামনে থেকে প্রচার করে আসছেন। সেবার ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২২ সালের শেষের দিকে এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানই মূলত সুপার লিগের প্রোমোটার।

এএইচএস