আন্দ্রে ওনানাকে ইন্টার মিলান থেকে বেশ বড় রকমের প্রত্যাশা নিয়েই উড়িয়ে এনেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ এরিক টেন হাগ। ২০১৯ সালে আয়াক্স রূপকথায় ওনানা যে টেন হাগেরই অধীনে ছিলেন। কিন্তু ইউনাইটেডে এসে ওনানা যেন নিজের খেলাটাই ভুলে গেলেন। বল প্লেয়িং গোলরক্ষক খুঁজতে গিয়ে, টেন হাগ যে গোল আটকানোর কাজটাই করাতে পারছেন না। ফলাফল হিসেবে এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ের প্রান্তে আছে ইউনাইটেড। 

ম্যানচেস্টারের লাল প্রান্তে যখন বিষাদ, তখন উত্তর লন্ডনের লাল অংশে চলছে উৎসব। ফ্রেঞ্চ প্রতিপক্ষ লেঁসকে ছয় গোলে উড়িয়ে দিয়ে শেষ ষোলোতে টিকিট কেটেছে আর্সেনাল। 

গালাতাসারাই ৩ - ৩ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

মৌসুমের শুরু থেকেই নড়বড়ে ক্যামেরুনের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। শেষ কয়েক সপ্তাহ খানিক ভাল খেললেও ওনানা নিজেকে পুরোপুরি খুঁজে পাননি। এমন ধারাবাহিক ভুলের শেষটা দেখা গেল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে। মরক্কোর মিডফিল্ডার হাকিম জিয়েখের দুটো ফ্রিকিক ঠেকাতে পারতেন। দ্বিতীয় ফ্রিকিকে তো নিজেই বল জালে ঢুকিয়ে দিলেন। 

অথচ ম্যাচের শুরুতেই দুই গোলের লিড পেয়েছিল রেড ডেভিলরা। আগের ম্যাচেই দারুণ গোল করা আর্জেন্টাইন তরুণ আলেহান্দ্রো গার্নাচো গোলের দেখা পেয়েছেন এই ম্যাচেও। গালাতাসারাইয়ের ঘরের মাঠে গোল করতে তার সময় লেগেছে মোটে ১১ মিনিট। রাসমুস হয়লান্ডের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ানের পর ব্রুনো বল দেন এই আর্জেন্টাইনকে। ফাঁকায় দাঁড়ানো গার্নাচো গোল করতে ভুল করেননি। 

পরের গোল ব্রুনো ফার্নান্দেজ নিজেই। ডিবক্সের অনেকটা বাইরে থেকে তার নেওয়া শট ঠেকানোর সাধ্য ছিল না গালাতাসারাই গোলরক্ষকের। গোল হজমের পর হাল ছাড়েনি স্বাগতিকরা। ম্যাচের ২৮ মিনিটে হাকিম জিয়েখের ফ্রিকিক কোন এক অজ্ঞাত কারণে ঠেকাতে পারেননি ওনানা। বলের দিক বুঝতেই তালগোল পাকিয়েছেন। গালাতাসারাইকে উপহার দেন এক গোল। 

ম্যাকটমিনে ৫৫ মিনিটে মিনিটে লিড বাড়ালেও ম্যান ইউনাইটেড তা ধরে রাখতে পারেনি। সেটাও ওনানার কল্যাণে। ৬২ মিনিটে আবারও হাকিম জিয়েখের ফ্রিকিক। এবারেও বলে হাত লাগালেও, তা চলে যায় নিজেদের জালে। আর আকতুরুগ্লুর ৭১ মিনিটের গোলে নিশ্চিত করেছে ম্যাচের ড্র। তাতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের সবার নিচে চলে গেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। 

আর্সেনাল ৬ - ০ লেঁস

আগের দেখায় ঘরের মাঠে লেঁসের কাছে ১-০ গোলে হেরে এসেছিল আর্সেনাল। সেই যন্ত্রণা ভোলার দরকার নিশ্চয়ই ছিল গানার্সদের। সে কারণেই বোধকরি ঘরের মাঠে রীতিমত লজ্জায় তারা ডুবিয়ে দিয়েছে ফ্রেঞ্চ প্রতিপক্ষকে। গুণে গুণে ৬ গোল দিয়েছে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা। তাতে নিশ্চিত হলো শেষ ষোলোটাও। 

এই ম্যাচে ছোটখাটো ইতিহাসও করেছে নর্থ লন্ডনের ক্লাবটি। চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ম্যাচের প্রথমার্ধেই গোল করেছেন আর্সেনালের পাঁচজন খেলোয়াড়। আর্সেনাল অবশ্য ৫ গোলেই থামেনি, দ্বিতীয়ার্ধে আরও এক গোল করে মাঠ ছেড়েছে। 

আর্সেনালকে প্রথম গোল এনে দেন কাই হাভার্টজ। গ্যাব্রিয়েল জেসুসের বাড়ানো বল জালে জড়ান এই স্ট্রাইকার। পরের ১৩ মিনিটের মধ্যে আর্সেনাল পেয়ে যায় আরও তিন গোল। ২১তম মিনিটে জেসুস, ২৩ মিনিটে বুকায়ো সাকা আর ২৭ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেলি গোল করে ব্যবধান নিয়ে যান ৪-০ গোলে। 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তোমিয়াসুর ক্রস থেকে বল নিয়ে আর্সেনালকে পঞ্চম গোল এনে দেন অধিনায়ক মার্টিন ওডেগার্ড। দ্বিতীয়ার্ধে ৮৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আর্সেনালের ষষ্ঠ গোলটি করেন জর্জিনহো।

জেএ