আচমকা দেখলে মনে হতেই পারে এ বুঝি ওয়েইন রুনির বিখ্যাত ওভারহেড গোলটাই আবার করলেন কোন এক তরুণ। আবার উদযাপন দেখলে মনে হতে পারে তুরিনে করা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর গোলটাই যেন পুনঃমঞ্চায়িত হলো এভারটনের মাঠ গুডিসন পার্কে। তবে বাস্তবতা হলো, এক গোল দিয়ে দুজন কিংবদন্তির কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন ম্যানচেস্তার ইউনাইটেডের আর্জেন্টাইন তরুণ আলেহান্দ্রো গার্নাচো। 

বেশ কিছুদিন ধরেই ছন্দে ছিল না রেড ডেভিল খ্যাত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে ধীরে ধীরে বোধকরি নিজেদের ফিরে আসার গল্পটাই আবার বলতে চাইছে রেকর্ড ইংলিশ শিরোপাধারী দলটা। আগের ম্যাচে লুটন টাউনকে হারানোর পর এদিন এভারটনকে তারা হারিয়েছে ৩-০ গোলের ব্যবধানে। গোল করেছেন গার্নাচো, অ্যান্থনি মার্শিয়াল এবং মার্কাস রাশফোর্ড। 

ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে গার্নাচোর গোলে এগিয়ে যায় রেড ডেভিলরা। রাশফোর্ড গোল করেন ৫৬ মিনিটে পেনাল্টিতে। স্পটকিক থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এই ইংলিশ স্ট্রাইকার। আর মার্শিয়ালের গোল আসে ৭৫ মিনিটে। তাতেই তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে ইউনাইটেড। উঠে আসে লিগ টেবিলের ৬ষ্ঠ স্থানে। 

তবে  ইউনাইটেডের জয় ছাপিয়ে এদিন আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন আলেহান্দ্রো গার্নাচো। লিওনেল মেসির দেশ আর্জেন্টিনায় জন্ম হলেও আদর্শ তিনি মানেন মেসির প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। উদযাপনও করেন রোনালদোর চিরচেনা ‘স্যু’ ভঙ্গিতে। আর রোববার রাতে গুডিসন পার্কে যেন রোনালদোকেই খানিক মনে করিয়ে দিলেন তিনি।

ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে দারুণ বোঝাপড়ায় বল পেয়েছিলেন ডিয়েগো দালোত। নিজের স্বভাবসুলভ ক্রসটাও করেছিলেন। তবে সেটা খানিক দূরেই ছিল গার্নাচোর জন্য। আবার উচ্চতাও ছিল কিছুটা বেশি। সাতপাঁচ না ভেবেই গার্নাচো উড়লেন শুন্যে। শরীরটাকে ভাসিয়ে যেমনভাবে গোল করলেন তাতে বিষ্মিত পুরো ফুটবল দুনিয়া। 

এক যুগ আগে এমনই এক গোল করে শিরোনাম হয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা ওয়েইন রুনি। তার সেই গোল প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা গোলের মর্যাদা পেয়েছিল। ১২ বছর পর সেই রুনির ক্লাবেরই আরেক তরুণ করেছেন অবিকল সেই বাইসাইকেল কিকের গোলটা। 

বছরের সবচেয়ে দর্শনীয় গোলের জন্য ফিফা ‘পুসকাস অ্যাওয়ার্ড’ চালু করেছে ২০০৬ সালে। দুদিন আগেই মাঝমাঠ থেকে গোল করে নিজেকে এই পুরস্কারের দাবিদার করেছিলেন রোনালদো। আর কাল রাতে যেন সেই তালিকায় নাম লেখালেন আর্জেন্টাইন তরুণ আলেহান্দ্রো গার্নাচো। 

জেএ