রোজারিও শহরটাই যেন অপরাধের আস্তানা। প্রতিনিয়ত নানা অপরাধে ঢেকে আছে আর্জেন্টিনার এই শহর। সেখানেই জন্ম আর বেড়ে ওঠা ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসির। ফুটবলের সুবাদে সুদূর স্পেনে চলে গিয়েছিলেন শৈশবে। তবে এখানেই পেয়েছেন জীবনের ভালোবাসা আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোকে। মেসির সুবাদে রোকুজ্জো এখন অন্য এক জগতের বাসিন্দা। কিন্তু রোজারিওতে ঠিকই রয়ে গিয়েছে তাদের পারিবারিক সুপারশপটা। আর সেটাই যেন অপরাধী চক্রের টার্গেট। 

গত মার্চে রোকুজ্জোর এই সুপারশপে গুলি করা হয়েছিল। হুমকিও দেওয়া হয়েছিল মেসিকে। এবার রীতিমত ডাকাতি করা হলো সেখানে। অবশ্য সরাসরি সুপারশপে হানা দেয়নি দুর্বৃত্তরা। তবে সুপারশপের টাকা ব্যাংকে রাখতে যাওয়ার সময় তাদের গাড়িতে আক্রমণ করা হয়। ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। 

জানা যায়,  গত মঙ্গলবার সকালে আর্জেন্টিনার রোজারিওতে পারিবারিক সুপারমার্কেট টাকা নিয়ে গাড়িতে করে স্থানীয় ব্যাংকে জমা দিতে যাচ্ছিলেন রোকুজ্জোর কাজিন অগাস্তিনা স্কালিয়া। তার সঙ্গে ছিলেন সুপারমার্কেটের দুজন কর্মী। তবে ব্যাংকে যাওয়ার আগেই ঘটে বিপত্তি। রোজারিওর রাস্তায় পেলেগ্রিনি অ্যাভিনিউয়ে দুজন বন্দুকধারী তাদের গাড়ি থামিয়ে প্রায় ৮ মিলিয়ন আর্জেন্টাইন পেসো ডাকাতি করেছে। যা প্রায় ২২ হাজার ৫০০ ডলারের সমান বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম।

আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী, সুপারমার্কেট থেকে ৪৫ ব্লক দূরে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সাদা রঙের একটি গাড়িতে করে এসেছিল দুষ্কৃতকারীরা। স্কালিয়াদের গাড়ি থামিয়ে তারা গুলি ছুড়েছে। গুলি গাড়ির কাচ ভেদ করে গেলেও কেউ হতাহত হয়নি। দুষ্কৃতকারীরা দুটি ব্যাগে থাকা টাকা নিয়ে গেছে। 

গাড়িতে থাকা এক কর্মী জানান, ‘টাকা রাখতে আমরা সুপারমার্কেট থেকে ব্যাংকে যাচ্ছিলাম। ওরা আমাদের জানালা ভেঙে টাকা নিয়ে গেছে। গাড়িতে করে এসেছিল। ঘটনার শুরুতে গুলির শব্দ শুনেছি। গাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বুলেটের ছিদ্র দেখেছি।’ 

এই ঘটনায় এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি মেসি। তবে তার স্ত্রী অগাস্তিন স্কালিয়ার ইন্সটাগ্রাম পোস্টে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। 

এর আগে গত মার্চে আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে রোকুজ্জোদের পারিবারিক সেই সুপারশপে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গেছে দুজন লোক মোটরসাইকেলে করে সেই দোকানের সামনে আসেন। পরে তাদের একজন নিচে নেমে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। তবে দোকানের দরজা বন্ধ থাকলেও সেটি ভেদ করে ভেতরের গ্লাসও ভেঙে যায়।

পরে হামলাকারীরা একটি চিরকুট ফেলে যান বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেখানে তারা মেসিকে হুমকি দিয়ে লেখেন, ‘মেসি আমরা তোমার অপেক্ষায় আছি। জাভকিন (রোজারিওর মেয়র) একজন মাদক চোরাকারবারি। সেও তোমাকে বাঁচাতে পারবে না।’

জেএ