ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে মারামারি, তদন্তে নামছে ফিফা
বিশ্ব ফুটবলের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচে এমনিতেই উন্মাদনার শেষ নেই। দুই দলের সুপার ক্লাসিকোর সবশেষ লড়াইয়ে গতকাল (বুধবার) নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। গ্যালারিতে সমর্থকদের মারামারির পর খেলা শুরু হতে বিলম্ব হয় ২৭ মিনিটের মতো। এরপর ম্যাচেও ছিল দুই দলের মারমুখী ভঙ্গি, রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে আর্জেন্টিনা মাঠ ছাড়ে ১-০ গোলের জয় নিয়ে। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রে গ্যালারির সেই ঘটনা। যেখানে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে তদন্তে নামছে ফুটবল বিশ্বের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
মারাকানা স্টেডিয়ামের এই কুরুক্ষেত্রের ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হলে বড় শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল। এক্ষেত্রে জরিমানা কিংবা পয়েন্ট কর্তনের মতো শাস্তিও পেতে পারে দেশটি। এমনিতে এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা তেমন সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। ৬ ম্যাচে মাত্র দুই জয়ে তারা টেবিলের ছয়ে অবস্থান করছে। আর্জেন্টিনার কাছে তাদের হার ঘরের মাঠে দীর্ঘ সময় পর বাছাইয়ে ব্রাজিলের জন্য প্রথম।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বুধবার নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে বলেন, ‘ফুটবল মাঠে বা মাঠের বাইরের এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। খেলোয়াড়, সমর্থক, প্রতিযোগিতায় লিপ্ত দলগুলো এবং তাদের কর্মকর্তারা একটি নিরাপদ পরিবেশের দাবিদার।’ ম্যাচ শুরুর আগে দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা এতটাই ছড়িয়েছিল যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয় সমর্থকদের ওপর।
— ge (@geglobo) November 22, 2023
পরিস্তিতি শান্ত করতে একপর্যায়ে লিওনেল মেসিসহ আর্জেন্টিনার বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় মারামারি থামানোর চেষ্টাও করেন। পরে এর প্রতিবাদে সতীর্থদের নিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান মেসি। যা নিয়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা খেলছি না, চলে যাচ্ছি’। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা পর শুরু হয় ম্যাচ।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে ফিফা ডিসিপ্লিনারি কমিটি তদন্তে নামতে যাচ্ছে। ২০২৩ সালে নতুন করে সংশোধন আনা ফিফার শৃঙ্খলা নীতিমালার ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী— হোম ক্লাব এবং ফেডারেশন ম্যাচের আগের মুহূর্ত, খেলা চলাকালীন সময় ও ম্যাচ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় পরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে যেকোনো ধরনের ঘটনার দায় স্বাগতিক বোর্ডকে নিতে হবে। অর্থাৎ, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে পুরো দায় নিতে হবে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনকে (সিবিএফ)। সে হিসেবে তাদের কোনো খুঁত থাকলে সিবিএফকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
তবে এই নিয়মটি ভঙ্গ করলে কী ধরনের শাস্তি হতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা দেয়নি ফিফা ডিসিপ্লিনারি নীতিমালা। এ নিয়ে ফিফার নির্দিষ্ট কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। সেটি হতে পারে আর্থিক জরিমানা, দর্শকবিহীন মাঠে এক অথবা দুটি ম্যাচ খেলা, নির্দিষ্ট স্টেডিয়ামে খেলায় নিষেধাজ্ঞা এবং হোম ভেন্যুর বদলে নিরপেক্ষ মাঠে খেলা এমনকি পয়েন্ট কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্তও আসতে পারে!
আরও পড়ুন
তবে সেই সিদ্ধান্ত কোন সময়ের মধ্যে ঘোষণা করতে হবে, তারও নির্দিষ্ট ডেডলাইন নেই। লাতিন আমেরিকান দেশসমূহের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের খেলা আগামী বছরের সেপ্টেম্বরের আগে আর নেই। এর আগে অবশ্য ফিফার অধীনে ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশ প্রীতি ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।
এএইচএস