মেসি রোনালদোকে ছাড়া নতুন যুগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
ইউরোপিয়ান ফুটবলে তারকার অভাব ছিল না কোনকালেই। ডি স্টেফেনো-পুসকাসুরা মাতিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ, ববি চার্লটন-জর্জ বেস্টরা ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। বেকেনবাওয়ার আর গার্ড মুলাররা ছিলেন বায়ার্নের জার্সিতে। বর্তমানে আছেন হ্যারি কেন, আর্লিং হালান্ড, কিলিয়ান এমবাপেদের মত তারকারা। তবুও কেন যেন বিবর্ণ এক ভাব নিয়েই এবার মাঠে গড়াচ্ছে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের বড় আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
কিন্তু এত তারকা থাকার পরেও কেন বিবর্ণ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। এর উত্তরে অবধারিতভাবেই আসবে দুজনের নাম। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসি। দুজন মিলে দেড় দশক ফুটবল বিশ্বকে শাসন করেছেন। ফুটবলের প্রায় সব রেকর্ডের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে এই দুজনের নাম।
বিজ্ঞাপন
২০০৩ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে অভিষেক হয়েছিল রোনালদোর। পরের বছর বার্সার জার্সিতে ইউসিএলে দেখা যায় মেসিকে। এরপর দুজন পাড়ি দিয়েছেন অনেকটা পথ। তাতে কিংবদন্তি বনে গিয়েছেন দুজনেই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বনেদি আসরে সবচেয়ে বেশি গোল, সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট, টানা সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ড রোনালদোর দখলে। সবচেয়ে বেশি ৫ টি শিরোপাও জয় করেছেন রোনালদো।
আবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ শিরোপা আছে মেসির। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডও তার। গ্রুপপর্বে সবচেয়ে বেশি গোল-সে কীর্তিও মেসির। এক কথায় বলতে গেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসটাই যেন দুজন মিলে বদলে দিয়েছেন শেষ দুই দশকে।
দুই তারকা মুখোমুখিও হয়েছেন প্রেস্টিজিয়াস এই আসরে। সেখানে অবশ্য মেসিই এগিয়ে থাকবেন। প্রথম দেখা ২০০৮ সালের সেমিফাইনালে। দুই লেগ মিলিয়ে জিতেছিলেন রোনালদো। একবছর পর রোমে ২০০৯ সালের ফাইনালে আবার দেখা দুজনের। সেবার অবিশ্বাস্য এক গোলে বার্সেলোনাকে জয় এনে দিয়েছিলেন মেসি। ২০১১ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও দেখা হয়েছিল দুজনের। সেবার রোনালদো ছিলেন মাদ্রিদের জার্সিতে। এবারও শেষ হাসি মেসির বার্সেলোনার। এরপর অবশ্য জুভেন্টাসে রোনালদো থাকাকালে আবার দেখা হয়েছিল দুই মহাতারকার।
রোনালদো এখন সৌদি আরবে। খেলবেন এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। মেসি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। ইন্টার মায়ামিকে প্রথমবার উত্তর আমেরিকার মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় উঠিয়েছেন তিনি। ইউরোপ এখন দুই রাজাকে হারিয়ে অনেকটা শূন্য। মেসি রোনালদো নেই, তবে উঠতি তারকার অভাবও নেই। এমবাপে, হালান্ড, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, পেদ্রি, গাভিদের দায়িত্বটা অনেক বড়। সেরাদের সেরা হয়ে থাকা দুই তারকার অভাব পূরণ করতে হবে তাদের। সেই আরাধ্য মিশনে তারা সফল হবে কিনা তা নিয়েও আছে সংশয়।
জেএ