কোচ বদলে জয়ে ফিরল জার্মানি, ম্যাগুয়ারের দুর্দশা চলছেই
ইউরোতে কোয়ার্টার ফাইনালে হার, বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায়, জাপানের কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া, সবকিছু হয়ত আর মেনে নিতে পারছিলেন না জার্মান ফুটবলের কর্তাব্যক্তিরা। জাপান ম্যাচের পরেই তাই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হলো সাবেক গ্রেট রুডি ভোলারের হাতে। ২০০২ সালে ভোলারের অধীনেই বিশ্বকাপের ফাইনাল গিয়েছিল জার্মানি। সাবেক এই ফুটবলার পেয়েছেন অস্থায়ী নিয়োগ। তবে প্রথম ম্যাচেই যেন নিজের ঝলক দেখালেন তিনি।
ফ্রান্সের বিপক্ষে জার্মানির জয় এসেছে ২-১ গোলে। বিশ্বকাপ রানারআপদের বিপক্ষে এই ম্যাচে দীর্ঘদিন পর জার্মানি খেলল নিজেদের মত করেই। বল পাসের ছড়াছড়ি নেই। নিচে থেকে গেম বিল্ডআপের তাড়া নেই। যে যান্ত্রিক ফুটবল জার্মানিকে বারবার সাফল্য এনে দিয়েছে, সেই গতিশীল ফুটবলই কাল দেখা গেল ডর্টমুন্ড শহরের সিগন্যাল ইদুনা পার্কে।
বিজ্ঞাপন
দুই প্রান্তে জোনাথন টাহ আর বেঞ্জামিন হেনরিকস ছিলেন আক্রমণের দায়িত্বে। অভিজ্ঞ থমাস মুলার ছিলেন নিজের চেনা ‘রমডয়টার’ বা স্পেস মেকিং এর ভূমিকায়। ৪ মিনিটেই এসেছে এর সুফল। হেনরিকসের পাস ডামি করে ছেড়ে দেন ফ্যাবিয়ান রিটজ। বলের দখল নিয়ে সহজ গোল করেন মুলার।
জার্মানি অবশ্য খেলায় কিছুটা ছন্দ হারিয়েছে নিয়মিত অধিনায়ক ইকাই গুন্দোয়ানের ইনজুরিতে। ২৫ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার বদলে নেমে অবশ্য প্যাসকাল গ্রস ভালোই সঙ্গ দিয়েছেন দলকে।
পুরো ম্যাচে বল দখলে দুই দলই ছিল সমান। জার্মানিকে এদিন প্রেসিং করতে দেখা গিয়েছে বেশি। দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করায় মরিয়া ছিলেন স্ট্রাইকাররা। পজিশন বদলে বারবার ফ্রান্সকে বিভ্রান্ত করেছেন মুলার এবং রিটজ। দুই পাশে কিছুটা নিচে নেমে খেলেছেন সার্জি ন্যাব্রি এবং লেরয় সানে।
বারবার আক্রমণের পরেও অবশ্য গোল পাওয়া হয়নি তাদের। গোলের দেখা পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৮৭ মিনিট পর্যন্ত। জার্মানির গতিময় ফুটবলের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে ফ্রান্সের রক্ষণ। ফরাসিরা অবশ্য স্বান্তনার এক গোল পেয়েছে ম্যাচের ৮৯ মিনিটে। আঁতোয়ান গ্রিজমানের পেনাল্টি পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে।
জার্মানিতে যখন চলছে ফিরে আসার গল্প। স্কটল্যান্ডে তখনও চলছে হ্যারি ম্যাগুয়ারের দূর্ভাগ্যের সময়। লেস্টার সিটি থেকে রেকর্ড দলবদলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে এসেছিলেন। কিন্তু হাস্যকর সব ভুলের কারণে সমর্থকদের নিন্দার পাত্র বনে গিয়েছেন তিনি। তবু ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের ভরসা ছিল ম্যাগুয়ারের প্রতি। থ্রি লায়ন্সদের জার্সিতেও ফর্মে ছিলেন।
কিন্তু এবার যা হলো তাতে হয়ত সাউথগেটও খানিক দুশ্চিন্তায় পড়বেন। মাঠে নেমেই যে আত্মঘাতী গোল করে বসেছেন ম্যাগুয়ার। তাতে অবশ্য স্কটল্যান্ডের খুব একটা উপকার হয়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তারা ঠিকই ম্যাচ হেরেছে ৩-১ গোলে।
ইতিহাসের প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচের সার্ধশত বার্ষিকীর সম্মানে আয়োজন করা হয়েছিল এই ম্যাচ। তাতে সবটা আলো কেড়ে নিয়েছেন জ্যুড বেলিংহ্যাম। সময়টা এখন আসলেই তার। রিয়াল মাদ্রিদে একের পর এক গোল করেছেন। ইংল্যান্ডের জার্সিতেও টেনে এনেছেন সেই ফর্ম। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে দলের হয়ে স্কোরশিটে নাম লেখান এই মিডফিল্ডার। তার আগে অবশ্য আরও একটা গোল পেয়েছিল ইংলিশরা। কাইল ওয়াকারের পাস থেকে ডেডলক ভেঙেছিলেন ম্যান সিটির ফুটবলার ফিল ফোডেন।
২-০ গোলের লিড নিয়ে টানেলে ফিরেছিল দুই দল। ৪৬ মিনিটে বদলি নামেন ম্যাগুয়ার। আর ৬৭ মিনিটে নিজের জালেই বল ঠেলেন তিনি। ইংলিশরা অবশ্য ম্যাচে দুই গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেছে পরে। স্ট্রাইকার হ্যারি কেনের ৮১ মিনিটের গোলে নিশ্চিত হয় থ্রি লায়ন্সদের জয়।
জেএ