এক ‌‘চুমু-কাণ্ড’ এখনও অস্বস্তির পরিস্থিতিতে আটকে রেখেছে স্প্যানিশ ফুটবলকে। আবেগে উচ্ছ্বসিত হয়ে ফাইনালের মঞ্চে দলটির তারকা ফরোয়ার্ড জেনিফার হারমোসোকে ঠোঁটে চুমু দিয়ে বসেন নিজেদের ফুটবল প্রধান লুইস রুবিয়ালেস। ইতোমধ্যে সেই ঘটনায় রুবিয়ালেসকে ৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। যদিও এখনও বিতর্কিত এই স্প্যানিশ ফেডারেশনের সভাপতি পদত্যাগ করতে রাজি নন। তবে রুবিয়ালেসের ভবিষ্যৎ ফিফার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন উয়েফা প্রধান আলেকজান্ডার চেফেরিন।

ফিফার সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত বলে মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উয়েফা সভাপতি, ‘নিশ্চিতভাবেই, সে (রুবিয়ালেস) যে কাজটি করেছে তা ছিল অনুপযুক্ত। আমরা সবাই এটা জানি। আশা করছি, সেও জানে এটা যে অনুচিত ছিল। এই মুহূর্তে এটাই যথেষ্ট, কারণ আইন-শৃঙ্খলা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।’

এর আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগপর্যন্ত অভিযুক্ত রুবিয়ালেস এবং আরএফইএফ সদস্যদেরকে ফুটবলার হারমোসোর সঙ্গে যোগাযোগ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয় ফিফা। এক বিবৃতিতে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি আরও বলছে, পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত আসার আগপর্যন্ত স্প্যানিশ নারী ফুটবলার হারমোসোর সঙ্গে রুবিয়ালেস, আরএফইএফ কিংবা তৃতীয় কোনো পক্ষই যাতে যোগাযোগ না করে। এমনকি তার ঘনিষ্ঠ কারও সঙ্গে কোনো সংযোগ রাখা যাবে না।

গত ২০ আগস্ট নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। কিন্তু তাদের সেই প্রাপ্তি আড়ালে পড়ে যায় রুবিয়ালেসের বিতর্কিত চুমু কাণ্ডে। ফরাসি দৈনিক লেকিপের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই কারণে হতাশা প্রকাশ করেন চেফেরিন। যদিও রুবিয়ালেসের শাস্তি নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি এই উয়েফা প্রধান, ‘আমি একজন আইনজীবী এবং ফিফার সহ-সভাপতিদের একজন। তার (রুবিয়ালেস) ঘটনাটি আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের আইন-শৃঙ্খলা বিভাগের হাতে। আমি কোনো মন্তব্য করলে তা চাপ সৃষ্টি করবে।’

রুবিয়ালেসের ঘটনাটি যৌন নিপীড়নের অপরাধ কিনা, তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে দিয়েছে স্প্যানিশ প্রসিকিউটরা। তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্পেন সরকারও। স্পেনের ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের প্রধান ভিক্টর ফ্রাঙ্কোস গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ক্রীড়া আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে সাময়িক নিষিদ্ধ হবেন রুবিয়ালেস।

এর আগে রুবিয়ালেস পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর বিশ্বকাপজয়ী দলের ২৩ সদস্যসহ ৮১ জন ফুটবলার আর স্পেনের হয়ে না খেলার ঘোষণা দেন। সেই ধর্মঘটের পর স্পেন নারী দলের প্রধান কোচ জর্জ ভিলদা ছাড়া পদত্যাগ করেছেন কোচিং স্টাফের বাকি সবাই। এমনকি বিভিন্ন বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছয় জন কোচও দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন।

এএইচএস