অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবার ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেছে স্পেন নারী দল। মাত্র দ্বিতীয় দেশ হিসেবে নারী এবং পুরুষ দুই বিশ্বকাপেই শিরোপা জিতেছে তারা। তবে এমন অর্জনের পর আনন্দের চেয়ে বিতর্কই যেন বেশি চলছে স্প্যানিশ ফুটবলে। মেয়েদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ফাইনালের মঞ্চেই ফুটবলার হেনিফার হেরমোসোকে চুমু দিয়ে বসেন রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) প্রেসিডেন্ট লুইস রুবিয়ালেস।

এমন এক কাণ্ডের পর বেশ সমালোচিত হন স্পেনের ফুটবল প্রধান। দাবি উঠেছে তার পদত্যাগের। একদফা বৈঠকও হয়েছে তার সভাপতির পদ নিয়ে। তারপরও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্তব্যক্তির পদ ছাড়তে রাজি নন রুবিয়ালেস। জানিয়েছেন, নিজের সভাপতির পদ রক্ষা করতে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন তিনি। 

স্থানীয় সময় শুক্রবার রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকার, গণমাধ্যম, দর্শকদের কড়া সমালোচনার মুখে আরএফইএফ এই জরুরি সভা ডাকে। ধারণা করা হচ্ছিলো, এই বৈঠকের পরেই পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন রুবিয়ালেস। কিন্তু ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিয়ে নিজের ভাষণে তিনি চিৎকার করে বলেন, 'আমি পদত্যাগ করব না, করবো না। আমি আমার আদর্শ রক্ষার জন্য সমালোচিত হতেও প্রস্তুত। এটি একটি স্বতঃস্ফূর্ত চুম্বন ছিল। পারস্পরিক, উচ্ছ্বসিত এবং সম্মতিপূর্ণ। এটাই মূল বিষয়। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।'

আরও পড়ুন: এক চুমুতে সব হারাচ্ছেন স্পেন ফুটবল প্রধান!

চুমু কাণ্ডের পর থেকেই রুবিয়ালেস সমালোচনার শিকার হতে থাকেন। কিন্তু নিজের এমন এক আচরণের জন্য তিনি ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেননি। পরবর্তীতে একবার ক্ষমা চাইলেও তাতে নমনীয় ভাব ছিল না। সমালোচনকদের 'বোকার দল' বলেও মন্তব্য করেন এই ফুটবল প্রশাসক। 

ঘটনার পর রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি রুবিয়ালেসের পক্ষ নিয়ে একটি বিবৃতি দেয়। যেখানে হারমোসোকে চুমু খাওয়ার বিষয়টিকে স্বাভাবিক এবং পারস্পারিক সমঝোতাপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়। যদিও হেরমোসো বিষয়টি নিয়ে বলেন যে, 'আমার বিষয়টি ভালো লাগেনি। কিন্তু কী করার ছিল।'

এদিকে প্রথমে বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে নিলেও পরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হেনিফার হেরমোসো। বিশ্বকাপ জয়ী এই ফুটবলার নিজ দেশের ফুটবল প্রধানের কড়া শাস্তি দাবি করলেন। একইসময় তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পুরো স্পেন দলই। এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সভাপতি রুবিয়ালেস পদত্যাগ না করলে পুরো বিশ্বকাপজয়ী দলই অবসর গ্রহণ করবে। বিশ্বকাপের ২৩ সদস্যের নারী ফুটবল দলসহ এই বিবৃতি দিয়েছে স্পেনের ৮১ জন নারী ফুটবলার।  

এদিকে রুবিয়ালসের এমন কাণ্ডের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন সাবেক স্প্যানিশ তারকারাও। দলের সাবেক গোলরক্ষক ডেভিড ডি হায়া লিখেছেন, 'আমার কান থেকে রক্ত ঝরছে।' ২০১০ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্যাসিয়াসের মন্তব্যে ছিল আক্ষেপ। বিশ্বকাপ জয়ের ৫ দিন পর আনন্দ উৎসবের পরিবর্তে রুবিয়ালসের চুমুকাণ্ডের কারণে স্পেন বিব্রত বলেও মন্তব্য এই কিংবদন্তি গোলরক্ষকের।   

জেএ