ইন্টার মায়ামির জন্য সময়টা হয়তো ঘোরের মধ্যে কাটানোর মতো মনে হতে পারে। টানা ১১ ম্যাচ হারা দলটি কিনা টানা পঞ্চম জয় পেয়েছে। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসিই যে তাদের জন্য জ্বলন্ত প্রদীপের মতো হাজির হয়েছেন। তার সামনে থেকে দেওয়া নেতৃত্ব আরও একবার দেখল মায়ামি সমর্থকরা। পেনাল্টির সুযোগ পেয়েও সতীর্থের জন্য ছেড়ে দেওয়া এবং নিজ চেষ্টাতেই শেষদিকে গোল করলেন মেসি। শেষ পর্যন্ত শার্লটকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে লিগস কাপের সেমিফাইনালে উঠে গেল মায়ামি।

আজ (শনিবার) ভোরে ঘরের মাঠ ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে ফ্লোরিডার ক্লাবটি শার্লটকে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে আতিথ্য দেয়। যেখানে দল বড় জয় পাচ্ছে সেখানে মেসির গোল না পাওয়াটা কিছুটা বেমানানই বটে। কারণ জয়খরায় ভোগা দলটাকে যে তিনিই এতদূর টেনে আনলেন। তবে তাকে আক্ষেপে রাখেননি ফুটবল বিধাতা! রেফারির শেষ বাঁশি বাজার আগমুহূর্তেই কয়েকজনের ফাঁকা জায়গায় দারুণ ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়ান মেসি। সমর্থকদের উল্লাসেও যেন এটি পূর্ণতা দিয়েছে!

মায়ামির হয়ে বাকি দুটি গোল এসেছে জোসেফ মার্টিনেজ এবং রবার্ট টেইলরের পা থেকে। এছাড়া শার্লট ডিফেন্ডারের ভুলে আরেকটি আত্মঘাতি গোল উপহার পান মেসিরা। আমেরিকান ক্লাবটির হয়ে যাত্রা শুরুর পর এ নিয়ে দুটি পেনাল্টি সতীর্থ মার্টিনেজের জন্য ছেড়ে দিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। তিনিও সফলভাবে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়েছেন।

এদিন প্রথমার্ধের ১২ মিনিটেই প্রথম স্কোরশিটে নাম তুলতে পারতেন মেসি। তবে সেখানে ঠাণ্ডা মাথার নিখুঁত শটে স্পট কিক থেকে মায়ামিকে লিড এনে দেন মার্টিনেজ। এরপর আক্রমণ ও বল দখলে এগিয়ে থাকা দলটি ৩২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে। ডেয়ানড্রের বাড়ানো বলে কোনাকুনি শট নেন টেইলর। যার গতিপথ বুঝে উঠতে পারেননি শার্লট গোলরক্ষক। ২-০ ব্যবধান নিয়ে এরপর দুদল বিরতিতে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধে গোল পেতে মরিয়া শার্লট বেশ কয়েকবার মায়ামির ডি-বক্সে হানা দেয়। তবে গোলরক্ষকের বাধা পেরোতে পারছিল না সফরকারী ফুটবলাররা। একইসঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়ানোর চেষ্টায় ছিল মায়ামি। মেসিকে এদিন অনেকটা আটকে রাখতে পারলেও ৬৯তম মিনিটে তিনি প্রায় গোল করে বসছিলেন। তবে তার নেওয়া শট প্রতিপক্ষ ফুটবলারের গায়ে লেগে বাইরে চলে যায়। এরপর সাবেক পিএসজি তারকা আক্রমণেই আসে তৃতীয় গোলটি। বল ক্লিয়ার করতে গিয়েই শার্লট ডিফেন্ডার ভুল করে বসেন। বল জড়িয়ে পেলেন নিজেদের জালে।

মেসি কি তাহলে গোল পাবেন না, এমন প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খেতেই ৮৭ মিনিটে দর্শকদের নতুন করে জাগিয়ে তোলেন তিনি।  ডি–বক্সের ভেতর বল পেয়ে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন ইন্টার মায়ামি অধিনায়ক। মায়ামির জার্সিতে পাঁচ ম্যাচে এটি তার ৮ম গোল।

এর আগের চার ম্যাচে মায়ামি যেমন জয় পেয়ে এসেছিল, তেমনি শার্লটের যাত্রাটাও সমান জয় নিয়ে। তবে পঞ্চম ম্যাচে তারা মেসিদের সামনে ধরা পড়েছেন। ৪-০ গোলে বড় জয় নিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল মেসি-সার্জিও বুসকেটস ও জর্দি আলবাদের মায়ামি।

আগামী ১৫ আগস্ট তারা লিগস কাপের ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নের মুখোমুখি হবে।

এএইচএস