কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সোনালী ট্রফি অর্জনের অন্যতম দাবিদার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে তিনি একের পর এক প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকিয়েছেন। কিন্তু পেনাল্টি কিকের সময় তার আচরণ নিয়ে পরে সমালোচনা তৈরি হয়। মার্টিনেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের মনোযোগ নষ্ট করার। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন (ফিফা) পেনাল্টির সময় গোলরক্ষকের জন্য নির্দেশিত নতুন আইন প্রণয়ন করে। তা নিয়ে এবার ফিফাকে খোঁচা দিয়ে বসলেন ‘দিবু’।

এর আগে মেসিদের আদরের ‘দিবু’ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স ফরোয়ার্ড কিংসলে কোম্যানের মনোযোগ নষ্ট করার জন্য পেনাল্টির আগে তাকে অপেক্ষা করিয়ে রাখেন। সে সময় তিনি অনবরত রেফারির সঙ্গে কথা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বারবার রেফারিকে বলতে থাকেন, বল ঠিকমত জায়গায় বসানো হচ্ছে কিনা, তা যেন রেফারি খেয়াল রাখেন। এভাবে খেলোয়াড়দের মনোযোগ নষ্ট করতে শ্যুট আউটে বেশ বিলম্ব ঘটান তিনি। কেবল তিনিই নন, একই আচরণ করতে দেখা যায় অন্যদেশের গোলরক্ষকদেরও। তবে মার্টিনেজ এক্ষেত্রে মাত্রা ছাড়িয়ে গেছেন বলে মন্তব্য ফুটবলবোদ্ধাদের।

আরও পড়ুন >> মার্টিনেজের কারণে বদলে গেল পেনাল্টির নিয়ম!

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘বুয়েনস আয়ার্স হেরাল্ড’-এ ফিফার নতুন আইন নিয়ে বলা এমিলিয়ানো মার্টিনেজের বক্তব্য প্রকাশিত হয়। যেখানে ফিফার নতুন আইনকে তিনি ‘অ্যান্টি দিবু ল’ বলে উল্লেখ করেছেন। রসিকতার ছলে এই গোল্ডেন গ্লাভসজয়ী গোলরক্ষক বলে বসেন, যা হওয়ার তা হয়েই গেছে। (নতুন আইন বানাতে) দেরি করে ফেলেছে ফিফা।

এমি মার্টিনেজ বলছেন, ‘তারা (ফিফা) সবসময় অজুহাত খোঁজে, আমি এটি ভালোবাসি। আমি আমার পরিবার এবং বন্ধুদের বলেছি, এটি কোনো বিষয় নয়। আমরা ইতোমধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছি। ফিফা নতুন আইন বানিয়েছে। কিন্তু তারা বড্ড দেরি করে ফেলেছে। ওই সময় আমি যা করেছি, তার দরকার ছিল। আমার নজর ছিল কেবল বল ঠেকানোর দিকে।’

এর আগে মার্টিনেজের আচরণকে গুরুত্বসহকারে নেওয়ার কথা জানায় ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফবিএ)। পরবর্তীতে ফুটবলের বিধি প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি পেনাল্টি-সংক্রান্ত নিয়মে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেয়। এরপর ১ জুলাই থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছিল আইএফবিএ।

আরও পড়ুন >> ভবিষ্যতে আর কেউ মেসি হবে না : মার্টিনেজ

পেনাল্টির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, গোলরক্ষককে অবশ্যই গোলপোস্টের নির্দিষ্ট লাইনের মধ্যে থাকতে হবে। নিয়মবহির্ভূতভাবে গোলরক্ষক এমন কোনো আচরণ করতে পারবেন না, যা পেনাল্টি শট নিতে আসা প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের মনোযোগ নষ্ট করে। একইসঙ্গে গোলরক্ষক পেনাল্টি নেওয়ার মুহূর্তে অযথা সময়ও নষ্ট করতে পারবে না। এমনকি গোলরক্ষক পোস্ট, ক্রসবার ও জালও স্পর্শ করতে পারবে না। সব মিলিয়ে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হলে পেনাল্টি নেওয়ার সময় গোলরক্ষকের গতিবিধি বেশ সীমিতই হয়ে পড়বে বলা যায়।

এএইচএস