মেসির জন্য যেভাবে বদলেছে মায়ামি
জিততেই যেন ভুলে গিয়েছিল ইন্টার মায়ামি। লিওনেল মেসির আসার আগে সবশেষ দুই মাস কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেই জয়ের দেখা পায়নি তারা। তবে, মেসির আগমন আর নতুন কোচ টাটা মার্টিনোর অধীনে যেন অন্যরকম এক মায়ামিকেই দেখলো সবাই। নান্দনিক ফুটবল উপহার দিয়ে আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৪-০ গোলের বড় জয় তুলে নিয়েছে মায়ামি।।
আগের দিনেই কোচ মার্টিনো জানিয়েছিলেন, ইন্টার মায়ামির খেলোয়াড়রা বর্তমানে মেসি এবং বুসকেটসের খেলার ধরণ অনুযায়ী নিজেদের পরিবর্তন করার দিকে জোর দিচ্ছে। আর সেই পরিবর্তন কতটা কার্যকর হতে পারে, তারই নমুনা দেখা গেলো আটলান্টার বিপক্ষে ম্যাচে।
বিজ্ঞাপন
কোচ টাটা মার্টিনো মেসিকে নামিয়েছেন তার স্বভাবসুলভ রাইট উইং পজিশনে। তবে, মেসি প্রায়ই নিচে নেমেছেন, ডিপ লাইয়িং ফরোয়ার্ড হিসেবে দলকে বাড়তি সুযোগ দিয়েছেন। তার এমন প্লেয়িং স্টাইলের সাথে অপরিচিত নন ভক্তরা। মেসির এই ভূমিকাকে ফলস নাইন বললেও ভুল হয় না।
ম্যাচে মেসি কখনো নিজেই বক্সে ঢুকেছেন । আবার কখনও নিচে নেমে সাহায্য করেছেন দলের আক্রমণ সাজিয়েছেন। নিজের প্রথম গোলে বুসকেটসের পাস নিয়ে নিজেই এগিয়েছেন। আবার কখনোবা লেফট মিড বা রাইট ব্যাকের সাহায্য নিয়ে এগিয়েছেন। দুইক্ষেত্রেই মেসি সফল। যার প্রমাণ ছিল খেলার ফলাফলে।
প্রতিপক্ষের আক্রমণের মুখে ৪-৩-৩ ফরমেশনে খেললেও আক্রমণে ইন্টার মায়ামি কে দেখা গিয়েছে ৪-৩-১-২ অবস্থানে। আর এই ফরম্যাটে বড় সুবিধা পেয়েছেন লেফট উইং পজিশনে থাকা রবার্ট টেইলর। ফাইনাল থার্ডে মেসির কাছ থেকে একাধিক পাস পেয়েছেন। দুই গোল করে নিজের সামর্থ্যও জানান দিয়েছেন দারুণভাবে।
আরও পড়ুন: মেসি ম্যাজিকে মায়ামির বড় জয়
আক্রমণে থাকা অবস্থায় প্রায়ই ভেতরে ঢুকেছেন টেইলর। তাকে জায়গা করে দিতে স্ট্রাইকার জোসেফ মার্টিনেজও প্রায়ই ডানে সরে গিয়েছেন। মেসির দ্বিতীয় গোলটা এসেছিল এমন বোঝাপড়ার সুবাদেই।
মেসির উপস্থিতিতে খেলা বদলেছে দলের রাইট ব্যাকে থাকা ডিআন্দ্রে ইয়েডলিনের। পুরো ম্যাচে লেফটব্যাক নোয়াহ অ্যালেনের তুলনায় বাড়তি উপস্থিতি দেখা গিয়েছে তার। মেসি যখনই নিচে নেমেছেন তখনই আক্রমণে যোগ দিয়েছেন ইয়েডলিন।
৪১ টি পাস, ক্রস আর ফাইনাল থার্ডে দারুণ পারফর্ম ছিল যুক্তরাষ্ট্রের এই ফুটবলারের। মেসিকে মেসিসুলভ খেলতে দেয়ার পেছনে বড় অবদান রেখেছেন তিনি। দুই গোলদাতা টেইলর এবং মেসির পর ম্যাচের তিনিই ছিলেন সেরা তারকা।
ইয়েডলিন এবং মেসি যখন আক্রমণে তখন রাইট মিডে দলের ভারসাম্য ধরে রাখার কাজটা করেছেন ডিক্সন অরোয়ো। ৯৫ শতাংশ সঠিক পাস আর ৫ রিকোভারি দিয়ে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন এই মিডফিল্ডার।
এছাড়া সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে সার্জিও বুসকেটসের সংযোজন ইন্টার মায়ামির খেলার ধার বাড়িয়েছে অনেকখানি। দল আক্রমণে গেলেই কাউন্টার অ্যাটাক সামাল দিতে নিজের অবস্থান বদলেছেন সাবেক এই বার্সা কিংবদন্তি।
বামপ্রান্তে থাকা বেঞ্জামিন ক্রেমাশ্চিকেও দেখা গিয়েছে দারুণ ছন্দে। ১৮ বছরের এই তরুণ ফুটবলার বেশ কয়েকবারই লেফট উইং থেকে কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন। মেসির দ্বিতীয় গোলের অ্যাসিস্ট এসেছিল তারই পা থেকে।
জেএ