১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ায় মারদেকা কাপে বাংলাদেশ ফুটবল দলের অভিষেক হয়। ছবি কৃতজ্ঞতা- নাজমুল আমিন কিরণ

১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ায় মারদেকা কাপে বাংলাদেশ ফুটবল দলের অভিষেক হয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের স্কোয়াডে ছিলেন ১৭ জন ফুটবলার। সেই দলের ৭ জন ইতোমধ্যে দুনিয়া ত্যাগ করেছেন। তিন জন প্রবাস জীবনযাপন করছেন আর বাকি ৭ জন দেশেই রয়েছেন। ঐ ৭ জনের মধ্যে কায়কোবাদ, নাজির জুনিয়র খুবই অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন।

বাংলাদেশ ফুটবল দল মারদেকায় খেলেছিল ৪-২-৪ ফরমেশনে। যা এখন রীতিমতো অবিশ্বাস্যই মনে হয়। মারদেকা টুর্নামেন্টে গোলরক্ষক শহিদুর রহমান চৌধুরী সান্টু নিয়মিত ছিলেন। স্টপার পজিশনে ছিলেন অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু ও জুনিয়র নাজির। ডান দিকে আশরফ আলী ও বামে আব্দুল হাকিম। মাঝে দুই মিডফিল্ডার কায়কোবাদ ও নান্নু। ওপরে এক পাশে প্রতাপ শঙ্কর হাজরা আরেক পাশে নওশেরুজ্জামান। মাঝে দুই স্ট্রাইকার এনায়েত ও সালাউদ্দিন। মারদেকায় নিয়মিত একাদশ এরকমই ছিল। বদলি হিসেবে লেফট আউটে সুনীল, ফিরোজ কবির, লেফট ব্যাকে ফারুক, মিডফিল্ডে শরীফ নামতেন। গোলরক্ষক মোতালেব সান্টুর পরিবর্তে নামার তেমন সুযোগ পাননি। 

অভিষেক দলে ১৭ জন ফুটবলারের সঙ্গে ছিলেন কোচ, ম্যানেজার ও দলনেতা। এই তিন জনই পৃথিবী ত্যাগ করেছেন। বাংলাদেশ দলের সঙ্গে মারদেকায় রেফারিং করতে গিয়েছিলেন কিংবদন্তি রেফারি জেড আলম। তিনিও প্রয়াত। 

বাংলাদেশের ফুটবল তো বটেই, ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম ঐতিহাসিক দলের গ্রুপ ছবি ভালোভাবে সংরক্ষিত নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, ফুটবল ফেডারেশন কোথাও এই ছবি নেই অথচ জাদুঘরে অবস্থান পাওয়ার মতো একটি চিত্র এটি। জীবিতথাকা কয়েকজন ফুটবলারের কাছে মারদেকার কিছু স্মৃতি রয়েছে সেটাও ইতিহাস সংগ্রাহক এবং সাবেক চিত্রগ্রাহক নাজমুল আমিন কিরণের সৌজন্যে। 

ছবির সংরক্ষণের মতো উদাসীনতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিনিধিত্ব করাদের মূল্যায়ন নিয়েও। ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও অভিষেক দলের অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন ফুটবলারই এখনো জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাননি।

জাকারিয়া পিন্টু (অধিনায়ক) : বাংলাদেশের প্রথম ফুটবল দলের অধিনায়ক। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উভয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ৭৩ সালের পর বাংলাদেশ দলে আর সুযোগ না পেলেও ঢাকা মোহামেডানে খেলেছেন ৭৬ সাল পর্যন্ত। এরপর মোহামেডান, ফুটবল ফেডারেশন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে নানা পদে ক্রীড়াঙ্গনে যুক্ত ছিলেন। লেখালেখির জন্য ক্রীড়া লেখক সমিতি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সঙ্গেও রয়েছে সম্পৃক্ততা। ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য অবদানের জন্য স্বাধীনতা পদক পুরস্কার পান। এখন অসুস্থতার জন্য বাসাতেই বেশি সময় থাকেন। 

বয়সের ভারে ন্যুজ। বাংলাদেশের অভিষেক ম্যাচের অনেক স্মৃতিই মনে নেই প্রথম অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুর।

প্রতাপ শঙ্কর হাজরা (সহ-অধিনায়ক):  স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের মতো বাংলাদেশের প্রথম ফুটবল দলেরও সহ-অধিনায়ক প্রতাপ। পিন্টুর মতো প্রতাপও ৭৩ সালের পর আর বাংলাদেশ দলে আর খেলতে পারেননি। প্রতাপ ফুটবলের পাশাপাশি হকি,ক্রিকেটও খেলেছেন মোহামেডানের হয়ে। ফুটবল কিংবদন্তী স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে হকির সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত হওয়ায় হকি দলের কোচ, ফেডারেশনের কর্মকর্তাও হয়েছিলেন। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত এই কিংবদন্তি শারীরিকভাবে অনেকটা সুস্থ। তাঁর প্রিয় ক্লাব মোহামেডান এবং ক্রীড়াঙ্গনের অনেক অনুষ্ঠানে আসেন মাঝে মধ্যে।  

শহিদুর রহমান চৌধুরি সান্টু : আমেরিকার ডালাসে বসবাস করছেন। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ফুটবল দলে খেলা তিন ফুটবলারের মধ্যে সান্টু একজন। ৭৩-৮১ জাতীয় ফুটবল দলের নিয়মিত গোলরক্ষক। ৭৮ সালে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন। ক্লাব ফুটবলে ওয়ান্ডারার্স, মোহামেডান, ব্রাদার্সে খেলেছেন। ফুটবল ছাড়ার পর প্রবাস জীবন বেছে নেন। ২০০৯ সালে এক-দেড় বছর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টর ছিলেন।

মোতালেব : ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক ছিলেন। সান্টুর জন্য জাতীয় দলের জার্সিতে গোলপোস্টের নিচে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন কম। দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবেই কেটেছে বেশি সময়। সান্টুর অবসরের পর ১৯৮২ দিল্লি এশিয়াডে মোতালেব ছিলেন অধিনায়ক। সেই গেমসে গোলরক্ষক মহসিনের উথান এরপর আর জাতীয় দলে খেলা হয়নি মোতালেবের। ঘরোয়া ফুটবলে রহমতগঞ্জ, আবাহনীর হয়ে অসাধারণ খেলতেন। বাংলাদেশের ফুটবলে অন্যতম সেরা এই গোলরক্ষক ২০১৭ সালে পৃথিবী ছেড়ে যান। 

শেখ আশরাফ আলী : স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের মতো প্রথম জাতীয় ফুটবল দলেরও সদস্য। নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে রাইট ব্যাক হিসেবে খেলেছেন। ঘরোয়া ফুটবলে ঢাকা আবাহনীর হয়ে দীর্ঘদিন খেলেছেন। ১৯৭৭ সালে আবাহনী অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় তাঁর অধিনায়কত্বে। খেলা ছাড়ার পর ফুটবলের সঙ্গেই ছিলেন প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে। এখন বাধ্যর্ক্যজনিত কারণে পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটান মাঝে মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসেন। 

কাজী সালাউদ্দিন : বর্তমান প্রজন্মের কাছে সালাউদ্দিনের পরিচয় বাফুফে সভাপতি। ফুটবল প্রশাসকের আগে খেলোয়াড় হিসেবে ছিল তার বর্ণিল ক্যারিয়ার। ৭৩ সালে মারদেকায় প্রথম ম্যাচেই গোল করেছিলেন সালাউদ্দিন। ৭৫ সালে পরের মারদেকায় সালাউদ্দিনের অধিনায়কত্বে খেলে বাংলাদেশ। ৮৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলেছেন। স্বাধীনতার আগে দিলকুশা, ওয়ারীতে ক্যারিয়ার শুরু। ঢাকা মোহামেডানে এক বছর খেলা সালাউদ্দিন ১৯৭২-৮৫ সাল পর্যন্ত আবাহনীতে খেলেন। খেলা ছাড়ার পর আবাহনী,মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয় দলে কোচ ছিলেন। ১৯৯৪-০৪ পর্যন্ত ফুটবল থেকে দূরে ছিলেন। ২০০৪ সালে বাফুফে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েও পদত্যাগ করেন। এরপর ২০০৮-বর্তমান চারবার বাফুফে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  

এনায়েতুর রহমান : আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রথম গোলদাতা। অনেকের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের ফুটবলের সর্বকালের সেরাদের একজন। বিআইডিসি,ওয়াপদা, মোহামেডানে খেলেছেন ঘরোয়া ফুটবল। আচার-আচরণে মাঠে ও মাঠের বাইরে অনেক ঘটনার জন্মদাতা। ফুটবলের উপর রয়েছে অভিমানও।  ১৯৯৩ সাল থেকে প্রবাস জীবনযাপন বেছে নেয়া এনায়েত জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার নিতেও আসেননি। ২৮ বছর পর ২০২১ সালে এসেছিলেন। কয়েক মাস থেকে আবার কানাডায় ফিরেছেন৷

শরীফুজ্জামান: বাংলাদেশের প্রথম ফুটবল দলে সহোদরও ছিল। নওশেরুজ্জামানের ছোট ভাই শরীফুজ্জামান। দুই ভাই-ই ভালো মানের ফরোয়ার্ড ছিলেন। শরীফ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন মারদেকায়। শরীফ ইনজুরির জন্য পরবর্তীতে জাতীয় দলে বেশি খেলতে পারেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করা শরীফ কয়েক বছর ধরে কানাডায় প্রবাস জীবনযাপন করছেন।

নওশেরুজ্জামান: বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন। গোল করার অসামান্য দক্ষতা ছিল। মালয়েশিয়ায় মারদেকা কাপে প্রথম ম্যাচে গোল না পেলেও ঐ টুর্নামেন্টে অন্য ম্যাচে গোল করেছিলেন নওশের। ঘরোয়া ফুটবল লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছেন। মোহামেডানের হয়ে ফুটবল থেকে অবসর নেয়ার পর সাদা-কালোতেই ক্রিকেট খেলেছেন এক দশকের বেশি সময়। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এই কৃতি ফুটবলার।

কায়কোবাদ: ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম দলে মিডফিল্ডে খেলেছেন। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলেরও সদস্য কায়কোবাদ। ক্রীড়াঙ্গনে কায়কোবাদের মুল পরিচিতি মোহামেডানের হয়ে। এই ক্লাবের অন্যতম কিংবদন্তী দীর্ঘদিন খেলার পর কোচ, কর্মকর্তাও ছিলেন। তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিল অসম্ভব প্রখর। গত কয়েক বছর যাবৎ অসুস্থ হয়ে বাসায় বন্দি। পারকিনসন্স সহ আরো জটিল রোগে আক্রান্ত। 

মনোয়ার হোসেন নান্নু: ১৯৭৩ সালে মারদেকায় মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত দিকে আবাহনীতে মিডফিল্ডের পাশাপাশি ডিফেন্সও করছেন। বাংলাদেশের অন্যতম শৈল্পিক ফুটবলারকে ' বেকেনবাওয়ার ' ও বলা হয়।  ব্যক্তিত্ব,খেলা সব কিছু মিলিয়ে অনন্য উচ্চতার। তার ছোট ভাই শামসুল আলম মঞ্জুও জাতীয় দলে খেলেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৭৮ সালে দুই ভাই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি আবাহনী-মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত এই ফুটবলার ২০০৮ সাল মৃত্যুবরণ করেন নান্নু।

দিলীপ কুমার বড়ুয়া: স্বাধীন বাংলা দলের মতো বাংলাদেশ প্রথম ফুটবল দলেও ছিলেন দিলীপ। স্টপারে খেলা দিলীপ পিন্টু, নাজিরের পরিবর্তে প্রথম টুর্নামেন্টে কমই সুযোগ পেয়েছেন খেলার। কক্সবাজারের এই ফুটবলার তার জীবন কাটিয়েছেন চট্টগ্রামেই। সেই চট্টগ্রামেই ২০১৫ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

ফারুকুজ্জামান ফারুক : লেফট ব্যাক পজিশনে খেলতেন ফারুক। নওগায় জন্ম হলেও রাজশাহী জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে খেলেছেন। ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর করেন। কাস্টমসে চাকরিসুত্রে চট্টগ্রামে ছিলেন পরবর্তী জীবনে। সেখানেই ইন্তেকাল করেছেন কয়েক বছর আগে।  

সুনীল কৃষ্ণ দে: বাংলাদেশের প্রথম গোল এনায়েতের। সেই গোলের রচিয়তা সুনীল কৃষ্ণ দে। সুনীলের ক্রসে এনায়েত গোল করেন৷ ডান-বাম দুই প্রান্তে খেলতে পারা সুনীল মারদেকা টুর্নামেন্টে কয়েকটি ম্যাচ খেলেছেন। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত এই ফুটবলার এখনো অসুস্থ শরীরে চলে যান চট্টগ্রামের মাঠে। 

ফিরোজ কবির: লেফট আউট পজিশনে খেলতেন ফিরোজ কবির। ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব থেকে জাতীয় দলে ডাক পান এই ফুটবলার। জাতীয় দলে চুড়ান্ত স্কোয়াডে একবারই ছিলেন কবীর। ফিরোজ কবীর রাজশাহী সোনালী অতীত ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নিভৃত জীবনযাপন করা ফিরোজ পৃথিবী ছেড়েছেন কয়েক বছর আগে। 

নাজির জুনিয়র : বাংলাদেশ প্রথম ফুটবল দলের স্টপার ছিলেন। তাঁর সময়ের সেরা স্টপারদের একজন। বার্ধক্য ও নানা রোগ জটিলতার মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জে বসবাস করছেন দীর্ঘদিন। 

আব্দুল হাকিম : যশোরের ফুটবলার হাকিম ছিলেন লেফট ব্যাক। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট মারদেকায় একাদশে নিয়মিত ছিলেন।  স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়েও খেলেছেন ৷ স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিজেএমসিতেই বেশি খেলেছেন। গত বছর দুনিয়া ত্যাগ করেন এই কৃতি ফুটবলার।  

কোচ-সাহেব আলী : স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে খেলেছেন এবং কোচিং করিয়েছেন। বাংলাদেশ দলের প্রথম ফুটবল কোচের দায়িত্ব সাহেব আলীই নেন। খেলোয়াড় ছাপিয়ে কোচ সাহেব আলীর পরিচয় ক্রীড়াঙ্গনে দাগ কেটেছে বেশি। তিনি ফুটবল খেলার কলা কৌশল নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সেই বইটি বেশ সমাদৃত ছিল। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত এই কোচ ২০০৩ সালে ইন্তেকাল করেন। 

ম্যানেজার - কালু: বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রথম ম্যানেজার। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রথম কমিটির সদস্যও ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তার পরিচয়টা শুধু সংগঠক হলেও ষাটের দশকে ছিলেন দুর্দান্ত ফুটবলার। শতবর্ষী ক্লাব ওয়ারীতে খেলেছেন। ওয়ারীর কালু হিসেবেই পরিচিত। তিনিও দুনিয়া ছেড়েছেন।  

দলনেতা - সালাহউদ্দিন ইউসুফ : অনেক দেশের ফুটবল দলে দলনেতার প্রচলন সেভাবে নেই। বাংলাদেশে অবশ্য রয়েছে। প্রথম ফুটবল দলের দলনেতা ছিলেন সালাহউদ্দিন ইউসুফ। তিনি ৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতা পুর্ব থেকে মৃত্যু অবধি খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ,সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ২০০০ সালে ইন্তেকাল করেন। 

রেফারি - জেড আলম : বাংলাদেশের ফুটবলে কিংবদন্তি রেফারি জহুরুল ইসলাম চৌধুরী। যিনি জেড আলম নামে পরিচিত। ১৯৬৮ সালে তিনি ফিফা রেফারি হন। স্বাধীনতার পুর্বেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রেফারিং করেন। বাংলাদেশের অভিষেক টুর্নামেন্ট মারদেকা কাপেও বাঁশি বাজিয়েছেন।  বাংলাদেশ দলের সঙ্গেই তিনি মালয়েশিয়া যান। ২০১৭ সালে কিংবদন্তি রেফারি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। 

১৯৭৩ সালে মারদেকায় বাংলাদেশের স্কোয়াড

শহিদুর রহমান চৌধুরি সান্টু, মোতালেব ( প্রয়াত) , শেখ আশরাফ আলী, নাজির জুনিয়র, জাকারিয়া পিন্টু ( অধিনায়ক), আব্দুল হাকিম( প্রয়াত), ফারুকুজ্জামান ফারুক(প্রয়াত), প্রতাপ শঙ্কর হাজরা (সহ-অধিনায়ক) দিলীপ কুমার বড়ুয়া( প্রয়াত), কায়কোবাদ, মনোয়ার হোসেন নান্নু(প্রয়াত) ,ফিরোজ কবির ( প্রয়াত) শরীফউজ্জামান,  নওশেরুজ্জামান(প্রয়াত), সুনীল কৃষ্ণ দে, এনায়েতুর রহমান ও কাজী সালাউদ্দিন। 

কোচ : শেখ সাহেব আলী ( প্রয়াত) 
ম্যানেজার : এনএ চৌধুরী কালু ( প্রয়াত) 
দলনেতা : সালাহউদ্দিন ইউসুফ ( প্রয়াত) 
রেফারি : জেড আলম ( প্রয়াত) 

এজেড/এফআই