ফ্রান্সকে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন বানানো জিনেদিন জিদান কোচ হিসেবেও সফল। এখন পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের হয়েই কোচিং করিয়েছেন এই কিংবদন্তী মিডফিল্ডার। স্প্যানিশ জায়ান্টদের হয়ে মাত্র দুই মেয়াদেই জিদান তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ কয়েকটি শিরোপা জিতেছেন। তবে ২০২১ সাল থেকেই তিনি কোনো দলের ডাগআউটে নেই। একে একে সব বড় বড় দলের প্রস্তাব ফিরিয়েছেন। তার স্বপ্ন বিশ্বকাপ জেতা স্বদেশের হয়েই কোচের দায়িত্ব পালন। প্রথম দফায় ব্যর্থ হলেও, এখনও সেই স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

সাবেক এই ফরাসি তারকা ২০২১ সালে রিয়ালের কোচের পদ ছেড়েছিলেন। এরপর তিনি আর কোনো দলে যোগ দেননি। তবে প্রস্তাব পেয়েছেন অনেক ক্লাব ও জাতীয় দলের। কিন্তু ফ্রান্সের ডাগআউটে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশের প্রথম দফায় বলতে গেলে তিনি অপমানিতই হয়েছিলেন। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের হারের পরও দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ)। 

কেবল তাই নয়, ওই সময় ফেডারেশনের সভাপতি লে গ্রেট বলেছিলেন, ‘জিদান কি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল? অবশ্যই না। আমি এমনকি তার ফোনও ধরতাম না। আমি কখনই তার সঙ্গে দেখা করিনি। আমরা কখনই দেশমের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের কথা ভাবিনি।’ গ্রেটের এই মন্তব্যেই স্পষ্ট— জিদান চাইলেও তাকে কখনও বিবেচনায় রাখেনি এফএফএফ।

তবুও দেশের হয়ে জাতীয় দলকে পরিচালনার আশা হারাননি ২০০৬ বিশ্বকাপেও ফ্রান্সকে ফাইনালে তোলা এই ফুটবলার। সেই বিষয়ে নতুন করে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন সাময়িকী জিকিউর সঙ্গে। সেখানে ৫০ বছর বয়সী জিদান বলেছেন, ‘অনেকবারই বলেছি, যখন ফ্রান্স দলে খেলবেন এবং তারপর কোচ হবেন, তখন এই ভাবনা অযৌক্তিক কিছু নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মন যা চায়, তা–ই করি। রিয়ালে আড়াই বছরের প্রথম মেয়াদে অনেক কিছু জিতেছিলাম। এরপর একটু বিরতি নেওয়ার দরকার ছিল। আট মাসের সেই বিরতি আমার কাজে লেগেছে। সভাপতি এরপর আমাকে দ্রুত ফিরতে বলেছিলেন। তখন ভেবেছিলাম, আমার যা দায়িত্ব, সেটা তো করে এসেছি। আবার সেখানে ফিরতে হবে কেন? কেন এই ঝুঁকি নেওয়া? আসলে আমি অত ভেবেচিন্তে কিছু করি না। মন যা চায়, তা–ই করি।’

এর মাঝে পিএসজি এবং ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়েও প্রস্তাব পেয়েছিলেন জিদান। তবে ভাষা এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে ব্রাজিলে যোগদানের প্রস্তাবে সাড়া দেননি তিনি। এরপর পিএসজির প্রস্তাবও ক্রমাগত এড়িয়ে গেছেন।

২০০৬ সালে খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন জিদান। নিজের সাবেক ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের ‘বি’ দলের কোচ হন ২০১৪ সালে। দুই বছর পর রিয়ালের মূল দলের কোচের দায়িত্ব নেন। রিয়াল কোচ হিসেবে প্রথম মেয়াদে (২০১৬–১৮) টানা তিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছেন জিদান। যা কোচিং জীবনের রেকর্ডবুকে তার নাম তুলে দিয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে (২০১৯–২১) এসে জিতেছিলেন লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ।

এএইচএস