ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে লাউতারো মাটিনেজের ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হয়েছিল জুলিয়ান আলভারেজের ম্যানচেস্টার সিটি। দুজনের সামনেই ছিল ইতিহাস গড়ার হাতছানি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টাইন সতীর্থ মার্টিনেজকে হারিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন আলভারেজ। প্রথম আর্জেন্টাইন এবং দশম ফুটবলার হিসেবেই তিনি একই মৌসুমে বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার গৌরব অর্জন করেছেন।

যদিও ম্যাচটিতে নামার সুযোগ হয়নি আলভারেজের। ইন্টার মিলানকে ১-০ গোলে হারানোর ম্যাচে পুরো সময় মাঠে ছিলেন আর্লিং হলান্ড। আলভারেজও ওই একই পজিশনে খেলেন বলে নিয়মিত একাদশে থাকার সুযোগ মেলে কম। যেহেতু ম্যানসিটির প্রধান স্ট্রাইকার হিসেবে হলান্ড আগে থেকেই খেলে আসছেন। তবে কম সুযোগ পেলেও আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আলভারেজ সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৯ ম্যাচে ১৭ গোল পেয়েছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০ ম্যাচ খেলে লক্ষ্যভেদ করেছেন তিনবার।

ইন্টারকে হারিয়ে ২০২২-২৩ মৌসুমে ‘ট্রেবল’ও পূর্ণ করেছে ম্যানসিটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পাশাপাশি তারা জিতেছে প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ। এই তিনটি শিরোপা উঁচিয়ে ধরার আগে আলভারেজ পান বিশ্বকাপের মধুর স্বাদও। গত বছরের ডিসেম্বরে কাতারের মাটিতে ফ্রান্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। আলবিসেলেস্তেদের তৃতীয়বারের মতো বিশ্বসেরা হওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন আলভারেজ। সেমিফাইনালে জোড়া গোলসহ তার পা থেকে মোট চারটি গোল আসে।

আরও পড়ুন >> ট্রেবলজয়ী গার্দিওলা যেখানে অনন্য

কাতারে শিরোপা জয়ের মঞ্চে আর্জেন্টাইন দলে ছিলেন লাউতারো মার্টিনেজও। সেই কারণে আলভারেজের মতো তার সামনেও একই মৌসুমে দুটি বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের সুযোগ ছিল। জাতীয় দলের চেয়ে মার্টিনেজ ক্লাবে বেশি ধারাবাহিক ছিলেন। তার দুর্দান্ত প্রতিভায় ১৩ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছিল ইন্টার মিলান। চলতি মৌসুমে মার্টিনেজ সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৬ ম্যাচে ২৮ গোল ও ১১ অ্যাসিস্ট করেছেন। দলকে সামনে থেকে এগিয়ে নেওয়া তার নৈপুণ্যে ইতালিয়ান লিগের দুটি শিরোপা জয়ের পর ইন্টারও ট্রেবল জয়ের দৌড়ে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি আর পূর্ণ হয়নি।

এখন পর্যন্ত ৯ জন ফুটবলার একই মৌসুমে বিশ্বকাপ ও ইউরোপসেরা হওয়ার গৌরব গায়ে মেখেছেন। দশম ফুটবলার হিসেবে এমন কীর্তিতে নিজের নাম তুলতে পারতেন দুই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এর আগে একসঙ্গে একই মৌসুমে বিশ্বকাপ ও ইউরোপসেরা হওয়ার কীর্তি গড়েছেন ৬ ফুটবলার। ১৯৭৪ বিশ্বকাপ জেতার পর এই ছয় ফুটবলার বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জিতেছিলেন ইউরোপিয়ান কাপ। তারা হলেন সেপ মেয়ার, পল ব্রাইটনার, হানস-গিয়োর্গ শোয়ারজেনবেক, ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার, জার্ড মুলার ও উলি হোয়েনেস।

আরও পড়ুন >> র‌্যাংকিংয়ে ২৫-এর বাইরে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল কোথায়?

পরবর্তীতে ভিন্ন ভিন্ন মৌসুমে আরও তিনজন দুটি মেগা ট্রফি জয়ের ইতিহাস গড়েন। তারা হলেন ক্রিস্টিয়ান কারেম্বু (ফ্রান্স ও রিয়াল মাদ্রিদ, ১৯৯৮), রবার্তো কার্লোস (ব্রাজিল ও রিয়াল মাদ্রিদ, ২০০২), রাফায়েল ভারানে (ফ্রান্স ও রিয়াল মাদ্রিদ, ২০১৮)।

এএইচএস