উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
ম্যানসিটি-ইন্টারের ফাইনালে ট্রেবল জিতবে কারা?
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের মহারণ আয়োজনে পুরোদমে প্রস্তুত তুরস্কের ইস্তাম্বুল আতাতুর্ক স্টেডিয়াম। সারা বিশ্বের দর্শকদের চমকে দিতে ম্যানচেস্টার সিটি ও ইন্টার মিলানের জন্য নির্ধারিত ভেন্যুটি অনন্য সাজে সেজেছে। ইতোমধ্যে দুই ক্লাবের দর্শক ছাড়াও ফুটবল সংশ্লিষ্ট অসংখ্য মানুষ ভীড় জমিয়েছেন শহরটিতে। সব ছাপিয়ে সবার এক প্রশ্ন- শিরোপার ট্রেবল জয়ের দৌড়ে থাকা দল দুটোর মধ্যে কারা জিতবে? শক্তি-সামর্থ্যে অনেকে ম্যানসিটিকে এগিয়ে রাখলেও, নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবে না ইন্টারও।
পেপ গার্দিওলার সিটির জন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বরাবরই তাদের জন্য হাহাকারের নাম। এখন পর্যন্ত শিরোপা তো দূরে থাক, কেবল তারা ফাইনালই খেলেছে একবার। তাও ২০২১ সালের সেই লড়াইয়ে শিরোপা উৎসব করেছে প্রিমিয়ার লিগেরই আরেক ক্লাব চেলসি। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সিটির চেয়ে সমৃদ্ধ ইতিহাস ইন্টারের। ইতোমধ্যে তারা তিনবার ইউরোপসেরার এই শিরোপা ঘরে তুলেছে। তবে এই আসরে ফাইনালে তারা উঠেছে ১৩ বছর পর।
বিজ্ঞাপন
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ উড়ছে পেপ গার্দিওলার ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন দলটি। প্রতিযোগিতাপূর্ণ প্রিমিয়ার লিগে তারা সব ক্লাবকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে। বলতে গেলে এই টাইটেলকে তারা পরিণত করে ফেলেছে ডালভাতে! ছয় মৌসুমের মধ্যে পাঁচবারই ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছে ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি। এবারও লিগ শিরোপার পর তারা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেডকে হারিয়ে এফএ কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর মাধ্যমে সিটির সামনে ইউনাইটেডের পর দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ট্রেবল জয়ের হাতছানি দিচ্ছে।
— UEFA Champions League (@ChampionsLeague) June 9, 2023
সিটির তুলনায় ইন্টার কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, সাম্প্রতিক ফর্ম লাউতারো মার্টিনেজদের অবশ্যই সমীহ জাগাতে বাধ্য করবে। ইন্টারের পক্ষে বাজি ধরার লোক হয়তো খুব কম পাওয়া যাবে। তবে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ১১ ম্যাচের মাত্র একটিতে হেরেছে তারা, জিতেছে বাকি দশটিতে। ইতোমধ্যে তারাও জিতে নিয়েছে কোপা ইতালিয়া ও সুপারকোপা ইতালিয়ানা। ফলে সিটির মতো তাদের সামনেও ট্রেবল জয়ের সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন > সতীর্থ যখন প্রতিপক্ষ, অনন্য রেকর্ডের হাতছানি
কার কত জোর?
তবে সিটির জন্য কাজটা মোটেও সহজ হবে না। সেমিফাইনালের দুই লেগ মিলিয়ে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এসি মিলানকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে একটা বার্তা আগেই দিয়ে রেখেছে ইন্টার। তাদের জমাট রক্ষণের সামনে বড় পরীক্ষা দিতে হবে সিটিকে। তবে সিটির দুর্গেও আছে আর্লিং হলান্ড, কেভিন ডি ব্রুইনা, জুলিয়ান আলভারেজ এবং ইলকাই গুনদোয়ানের মতো তারকারা। ফাইনালে আসার আগে নকআউট পর্বের ছয় ম্যাচে স্রেফ তিনটি গোল হজম করেছে ইন্টার। এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, ইতালিয়ান দলটিকে হারাতে সেরা ফুটবলই খেলতে হবে সিটিকে।
আক্রমণভাগে পিছিয়ে নেই ইন্টারও। দলের অধিনায়ক ও আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মার্টিনেজ সামনে থেকেই তাদের টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৬ ম্যাচে ২৮ গোল ও ১১ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। ইন্টারের আক্রমণভাগে তার সঙ্গীদের মধ্যে আছেন বসনিয়ান স্ট্রাইকার এদিন জেকো ও বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু। মৌসুমজুড়ে চোট নিয়ে বেশ ভুগলেও, লুকাকু মুহূর্তেই যেকোনো রক্ষণ-দেয়াল তছনছ করে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন।
তবে অবাক করার মতো সত্যি হচ্ছে- এর আগে সিটি ও ইন্টারের কখনও মুখোমুখি দেখাই হয়নি! ১৮ বছর পর ইস্তাম্বুলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল ফেরার রাতে প্রথম সাক্ষাৎটা হয়ে যাচ্ছে দল দুটির। এই মাঠে সবশেষ ইউরোপ সেরার ফাইনালে হয়েছিল ২০০৫ সালে। সেখানেও লড়াইটা ছিল ইংলিশ বনাম ইতালিয়ান দলের। সেই লড়াই সবার কাছে পরিচিত হয়ে আছে লিভারপুলের ‘মিরাকল অব ইস্তাম্বুল’ নামে। এসি মিলানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে তিন গোল হজমের পর দ্বিতীয়ার্ধে সাত মিনিটের মধ্যে সমতা টেনে টাইব্রেকারে জিতেছিল লিভারপুল।
এএইচএস