রাতে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি আর্সেনাল-সিটি
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে। কিন্তু ভাবা হচ্ছে আজ রাতেই শিরোপা নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে লিগটিতে। বুধবার (২৬ এপ্রিল) রাতে প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার সিটি মুখোমুখি হচ্ছে। অন্য দলগুলো তাদের চেয়ে এত পেছনে যে শিরোপার লড়াইয়ে একেবারে নেই বলা যায়। ৩২ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে আর্সেনাল। দুই ম্যাচ কম খেলে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে গানারদের কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলছে সিটি।
হাই-ভোল্টেজ দ্বৈরথে কারা এগিয়ে?
বিজ্ঞাপন
মাস দুয়েক আগেও সিটির কোচ গার্দিওলা বলছিলেন, আর্সেনাল কোনো ভুল না করলে তাদের সাধ্য নেই এই মৌসুমে লিগ জেতার। অবশ্য শেষ তিন ম্যাচে সেই ভুলটাই করে বসেছে আর্সেনাল। টানা তিন ড্রয়ে তাদের শিরোপার স্বপ্ন কিছুটা ফিঁকে হয়ে যেতে বসেছে যেন। যদিও এখনো শীর্ষেই আছে মিকেল আর্তেতার দল। সম্ভাবনা রয়েছে ১৯ বছর পর লিগ শিরোপা জয়ের। তবে তাদের সামনে এখন বড় বাধা দুরন্ত ম্যান সিটি।
ইউরোপীয় ফুটবলে ঝড় তুলছে সিটি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১৬ ম্যাচ অজেয় তারা, এর মধ্যে ১৩টি জয়, বাকি তিনটিতে ড্র। চলতি মৌসুমে ট্রেবল জয়ের পথে দারুণ গতিতে ছুটছে তারা। এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে ও এফএ কাপের ফাইনালও। হাই-ভোল্টেজ দ্বৈরথে আর্সেনালের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে সিটিই। কারণ গানারদের চেয়ে টেবিলে ৫ পয়েন্টের দূরত্ব থাকলেও সিটির হাতে দুটি বাড়তি ম্যাচও আছে। দুটিতে জিতলে তারা টপকে যাবে লন্ডনের দলটিকে।
কোচ বচন
সিটির বিপক্ষে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মানছেন আর্সেনাল বস মিকেল আর্তেতা, কিন্তু লিগ শিরোপার নির্ণায়ক মানতে রাজি নন তিনি। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আর্তেতা বলেন, বর্তমান লিগ চ্যাম্পিয়ন সিটিকে হারাতে হলে বল নিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত তাদের নিখুঁত হতে হবে। আর্সেনাল কোচ বলেন, ‘ফুটবলে নিখুঁত পারফরম্যান্স বলতে কিছু নেই। যেভাবে আর্সেনাল এতগুলো দলের বিপক্ষে খেলেছে, তাদের বিপক্ষে আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে আসলেই ভালো ফুটবল খেলতে হবে।’
আরও বলেন, ‘এ ধরনের ম্যাচগুলোতে আমরা তীব্রভাবে অনেক কিছু করার সিদ্ধান্ত নেই; ভীষণ আগ্রাসী হতে চাই, জায়গা তৈরি করতে চাই। আমি মনে করি চাপের মুহূর্তে বল পায়ে রাখার যে মান দুই দলের খেলোয়াড়দের আছে, তাতে এ ম্যাচে কোনো একক দলের ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ বল পজেশন থাকবে না।’
অন্যদিকে, গানারদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে এই ম্যাচটা ফাইনাল হিসেবেই দেখছেন সিটি বস পেপ গার্দিওলা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা জানি, ঠিক কী জন্য আমরা খেলছি; ট্রফির লড়াইয়ের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে। এটা আর্সেনালের হাতেও আছে।’
আলো কাড়তে পারেন যারা
হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটির সব আলো কেড়ে নিতে পারেন গোল মেশিন আলিং হলান্ড। দলকে বলতে গেলে একাই টানছেন আর্লিং হল্যান্ড। চলতি মৌসুমে লিগে আপাতত ৩২ গোল করে সবার চেয়ে বেশ এগিয়ে এই নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। লিগে আর মাত্র ২টি গোল করলেই প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডে ভাগ বসাবেন, সব প্রতিযোগিতা মিলে ৫০ গোল হয়ে যাবে তার।
লিগে হল্যান্ডের পর সিটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ফোডেন (৯ গোল)। তবে এই দুজন ছাড়াও আর্সেনালের জন্য ভয়ংকর হতে পারেন সিটির বেলজিয়ান ফুটবলার কেভিন ডি ব্রুইনে। চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে ১৫টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে কম ম্যাচে ১০০ অ্যাসিস্টের রেকর্ডও গড়েছেন এই বেলজিয়ান। এমন এক ম্যাচে আর্তেতাকে আলাদাভাবে নজর রাখতে হবে তার দিকে।
এদিকে, গানারদের সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছেন ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি এবং ইংলিশ উইঙ্গার বুকায়ো সাকার। এ দুজন মিলে গোল করেছেন ২৮টি। গোল সহায়তার দিক থেকেও এই দুজনের জুড়ি নেই। সাকার ১১ অ্যাসিস্টের বিপরীতে মার্টিনেলির রয়েছে ৫টি অ্যাসিস্ট। এই দুই ফুটবলার ছাড়াও মার্টিন ওডেগার্ড ১২টি এবং চলতি মৌসুমে ম্যানসিটি থেকে আর্সেনালে আসা জেসুস করেছেন ৯টি গোল। এই চারজনের পারফর্মেন্সের ওপরই আজ নির্ভর করছে আর্সেনালের ভাগ্য।
এফআই