রিয়াল মাদ্রিদের জন্য লজ্জাজনক একটি রাতই বলা চলে। প্রায় ৭৬ বছর আগের একটি দিন ফিরিয়ে আনল যেন বার্নাব্যু ফুটবলাররা। লা লিগার ১১ নম্বরে থাকা জিরোনার কাছে তারা হেরে বসেছে ৪-২ গোলে। তাও আর্জেন্টাইন ফুটবলার ভালেন্তিন কাস্তেয়ানোস একাই চারটি গোল করেছেন। এর আগে সর্বশেষ ১৯৪৭ সালে রিয়ালের বিপক্ষে চার গোলের নজির ছিল, যদিও ২০০৬ সালেই দলটি সমান সংখ্যক গোল হজম করেছিল কোপা দেল রে-তে। তবে সর্বশেষ পরাজয়ের ম্যাচ শেষে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি।

রিয়াল সমর্থকরা রাগে ফেটে পড়ারই কথা। কেননা ইউরোপের পরাশক্তি সব দলের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফর্ম করছিল রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু তারা স্প্যানিশ লিগে খেলতে নেমেই বারবার হোঁচট খাচ্ছে। জিরোনা ম্যাচের আগে লা লিগায় বার্সেলোনার চেয়ে ১১ পয়েন্টে পিছিয়ে থেকেও নিজেদের সম্ভাবনা দেখছিলেন আনচেলত্তি। কিন্তু এই ম্যাচে হারের পর আনচেলত্তি নিজেও কি আর সে আশা করবেন? এই হারে প্রদীপের শেষ আলোটুকুও নিভে গেল রিয়ালের!

আরও পড়ুন >> রিয়ালকে একাই ধসিয়ে দিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবলার

বিধ্বস্ত এমন হারের পর কী আর বলা যায়! সমর্থকদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ অনুভব করতে পারছেন আনচেলত্তি। তাদের কাছ তাই অকপটে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ। তিনি নিজেও দলের পারফরম্যান্সে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। দলের এমন লজ্জার ফলের জন্য কোচ রক্ষণভাগকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন।

৭ ম্যাচ হাতে রেখে ১৪ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকার পর আনচেলত্তি শুধু অলৌকিক কোনো কিছুরই প্রত্যাশা করতে পারেন। পরিস্থিতি যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, তা আনচেলত্তিও বুঝে গেছেন। নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে কোচ বলছেন, ‘এই ম্যাচ রিয়াল মাদ্রিদকে ফুটিয়ে তুলতে পারছে না। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী, তবে আমাদেরকে সামনে তাকাতে হবে।’

একইসঙ্গে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় জানিয়েছেন এই ইতালিয়ান কোচ, ‘আমি বুঝতে পারছি, আপনারা কষ্ট পেয়েছেন। আপনারা ক্ষুব্ধ। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে। তবে সমর্থকরা জানেন যে, কোপা দেল রে ফাইনাল ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে আমরা ঘুরে দাঁড়াব। আমাদের দ্রুত জেগে উঠতে হবে, কারণ এখনও অনেক কিছু পাওয়ার আছে। আমরা জেগে উঠব।’

আরও পড়ুন >> ব্রাজিল-রিয়াল দুই দলেই গুরু আনচেলত্তিকে চান ভিনিসিয়াস

ম্যাচ হারের দায় পুরোপুরি রক্ষণের ওপর চাপিয়ে আনচেলত্তি বলছেন, ‘সবশেষ সাত ম্যাচের ছয়টিতেই আমরা গোল হজম করিনি। আজকে আমাদের জালে চারটি গোল ঢুকেছে, কারণ রক্ষণের নিবেদনে ঘাটতি ছিল। বল পায়ে আমাদের শুরুটা ভালো ছিল, কিন্তু বল ছাড়া আমরা অনেক বেশি জায়গা ফাঁকা রেখেছি। এজন্যই তারা প্রথম দুই আক্রমণেই দুটো গোল করে বসে। আমরা ভেবেছিলাম, প্রথমার্ধ শেষে বিরতিতে আমরা নিজেকে গুছিয়ে নেব। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আরেকটি গোল খেয়ে বসি।’

এএইচএস