কোয়ার্টারের প্রথম লেগ জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বেশ এগিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচটি চেলসি রিয়ালের মাঠেই খেলেছিল। তবে স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের মাঠে তারা প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে পারতো। কিন্তু হয়েছে তার উল্টো। যেখানে রিয়ালের জন্য ড্র কিংবা ১ গোল ব্যবধানে হারলেও সেমিতে ওঠার সহজ সমীকরণ ছিল, উল্টো ২-০ গোলে জয় নিয়ে রাজার মতোই তারা শিরোপা অর্জনের দিকে এগিয়ে গেল। এদিন জোড়া গোল করেছেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড রদ্রিগো।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) স্টামফোর্ড ব্রিজে পিছিয়ে থেকে রিয়ালকে আতিথ্য দিতে নামে চেলসি। গ্রাহাম পটারের বিদায়ের পর ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দলটি এ নিয়ে চতুর্থ ম্যাচে নামে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি সাবেক এই ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। এর আগে চেলসি সবশেষ টানা চার ম্যাচে হেরেছিল ১৯৯৩ সালে, ফলে তিন দশকের মধ্যে এটি তাদের প্রথম অভিজ্ঞতা! 

প্রিমিয়ার লিগের দলটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টিকে থাকতে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। কিন্তু এমন চাপ কীভাবে সামাল দিতে হয়, ভালোভাবেই জানা আছে কার্লো আনচেলত্তি শিষ্যদের। ইউরোপের সফলতম দলটি আরও একবার তাদের সামর্থ্য দেখাল। ম্যাচের একাদশ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগে এগিয়েও যেতে পারত চেলসি। পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়েছিলেন অরক্ষিত এনগালো কান্তে। এত কাছ থেকেও এই ফরাসি মিডফিল্ডার শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

ম্যাচে অনেকবারই রিয়ালের ত্রাতা হয়ে ওঠেন থিবো কোর্তোয়া

এরপর পাল্টা আক্রমণে যায় রিয়াল। ২০তম মিনিটে দানি কারভাহালের কাছ থেকে ডি-বক্সে বল পেয়ে যান রদ্রিগো। তবে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের বুলেট গতির শট পোস্টের বাইরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে চেলসির একের পর এক আক্রমণ ঠাণ্ডা মাথায় সামাল দিতে থাকেন এডার মিলিতাও, কারভাহালরা। একইসঙ্গে প্রতি-আক্রমণে সুযোগ পেলেই তারা ভীতি ছড়াচ্ছিলেন স্বাগতিকদের রক্ষণে। 

২৮ মিনিটে রিয়ালের আরেকটি সম্মিলিত আক্রমণ নষ্ট করেন চেলসি ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। ৩২ মিনিটে মদ্রিচের শট ঠেকিয়ে চেলসিকে বাঁচান গোলরক্ষক কেপা। ৪২ মিনিটে মদ্রিচের ক্রসে ঠিকঠাক পা লাগাতে পারলে দলকে এগিয়ে দিতে পারতেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে রিয়ালকে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। ৬ গজ দূর এই  বেলজিয়ান গোলরক্ষক থেকে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেয়ার শট ঠেকান।

দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় চেলসি। কিন্তু এ যাত্রায় মিলিতাওয়ের দেয়াল টপকাতে পারেনি তারা। স্বাগতিকেরা একের পর এক সুুযোগ হাতছাড়া করলেও সে ভুল করেনি রিয়াল। ৫৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে চেলসিকে বিদায়ের পথ দেখিয়ে দেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগো। তিনি ডানপ্রান্ত থেকে বল নিয়ে চেলসির ডি-বক্সে ভিনিসিয়াসকে বল বাড়ান। আর ভিনির কাছ থেকে ফিরতি বল পেয়ে গোল করে দলকে সেমির পথে এগিয়ে দেন রদ্রিগো।

দুটি গোলই করেছেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ রদ্রিগো

কোর্তোয়া ম্যাচের ৬৫ মিনিটে আরেকবার রিয়ালের ত্রাতা হয়ে ওঠেন। ৭০ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করে চেলসি। যদিও তাতে সাড়া দেননি রেফারি। ৮০ মিনিটে ফেদে ভালভার্দের কাছ থেকে বল পেয়ে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোলটি এনে দেন রদ্রিগো। এই গোলই নিশ্চিত করে রিয়ালের সেমির টিকিট।

এই জয়ে সর্বোচ্চ ১৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা আনচেলত্তির দল আরেকটি শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারে। দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালের জয় ৪-০ গোলে। এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম লেগে ২ বা তার বেশি গোলে এগিয়ে থাকা ১৯ বারের ১৮টিতেই পরের পর্বে গেছে রিয়াল। একই ফল তারা আবারও ফিরিয়ে আনল।

এএইচএস