টানা দুই জয়ে লিগ ওয়ানে নিজেদের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে প্যারিসিয়ান সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। দুটি ম্যাচেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় গোল করেছেন বিশ্বজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। অথচ কে বলবে নিজের ক্লাবে একের পর এক দুয়োধ্বনিতে তিনি বিষিয়ে উঠছেন। মাঠের খেলায় তার কোনো ছাপই পড়তে দেন না সর্বোচ্চ সাতবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী। ৯ পয়েন্ট ব্যবধানে পিএসজির এগিয়ে যাওয়ার ম্যাচে কর্নার নিতে গিয়েও গ্যালারি থেকে দুয়ো শুনেছেন তিনি।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) পার্ক দ্য প্রিন্সেসে শক্ত প্রতিপক্ষ লেন্সকে হারানোর ম্যাচে এই ঘটনা ঘটেছে। ফরাসিদের ঘরের মাঠে মেসির প্রতি ক্লাব সমর্থকদের নেতিবাচক এই আচরণ নতুন কিছু নয়। পিএসজির হয়ে সাম্প্রতিক সময়ে মাঠে নামলেই তিনি একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। একদিকে যেমন বার্সেলোনার প্রতি ম্যাচেই মেসিকে পাওয়ার দাবি নিয়ে দর্শকরা আওয়াজ তুলছেন, বিপরীতে মুদ্রার অপর পিঠ দেখছেন পিএসজিতে!

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদন বলছে, পিএসজির হয়ে লেন্সের বিপক্ষে কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে দুর্দান্ত বোঝাপড়ায় গোল করেছেন মেসি। একইসঙ্গে সেই ম্যাচের আগমুহূর্ত এবং কর্নার নেওয়ার সময়ও মেসিকে উদ্দেশ্য করে গ্যালারি থেকে দুয়ো দেওয়া হয়েছে। ঠিক সেই সময়েই এক আর্জেন্টাইন ভক্ত তাকে দেখে ‘হেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’ বলে ডাক দেয়। যার জবাবও মেসি দিয়েছেন হাসির মাধ্যমে।

ম্যাচ শেষে মেসি জবাব দিয়েছেন দুয়ো দেওয়া পিএসজি সমর্থকদেরও। তবে মুখে নয়, তার জবাব ছিল জয়ের পরও দর্শকদের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা না জানানোয়। ম্যাচের ফল যাই হোক, নির্ধারিত সময়ের পর খেলোয়াড়রা স্বাভাবিকভাবেই দর্শকদের সমর্থকদের প্রতি হাত নাড়িয়ে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জবাব দেন। কিন্তু ক্রমাগত দুয়ো পেতে থাকা মেসির কাছে নিশ্চয়ই সেই আনুষ্ঠানিকতা পরিহার করাই সঠিক মনে হয়েছে! প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলারের সঙ্গে জার্সি বদল করে তিনি সরাসরি ডাগআউট ধরে ড্রেসিংরুমে চলে যান।

এদিন প্রথমার্ধেই জয়সূচক ৩টি গোল পেয়ে যায় ফরাসি জায়ান্টরা। ক্রিস্তফ গ্যালতিয়ের শিষ্যরা এরপর কোনো স্কোর করতে পারেনি। উল্টো এক গোল হজম করে তারা। তবে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে মেসির গোলটি ছিল চোখে লেগে থাকার মতো। মেসি ডি বক্সে ঢুকে বল বাড়ান এমবাপেকে। এরপর ফরাসি তারকা ব্যাকহিল ফ্লিকে বল বাড়ালে সেটি ধরে কোনাকুনি শট নেন মেসি। গোলরক্ষককে পরাস্ত করে সেটি জালে পৌঁছে যায়। এই গোলের মাধ্যমে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেছেন। এর আগে এই রেকর্ড ছিল একমাত্র রোনালদোর দখলে। এখন দুজনের গোল সংখ্যা সমান ৪৯৫টি করে।

চলতি মৌসুম শেষেই পিএসজির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ফুরোচ্ছে লিওনেল মেসির। চুক্তি নবায়ন নিয়ে রয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা। গুঞ্জন রয়েছে, পুরনো ক্লাব বার্সেলোনাতে ফেরার বিষয়েও। প্রিয় তারকাকে স্বাগত জানাতে নির্ঘুম প্রহর গুনছেন কাতালান ক্লাবটির সমর্থকরাও। প্যারিসে যখন সময়টা ভালো যাচ্ছে না মেসির, অনেকেই পরামর্শ দিচ্ছেন ক্লাবটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার। সে তালিকায় আছেন তার সাবেক সতীর্থ ও ফরাসি কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরিও। 

এএইচএস