সাফ চ্যাম্পিয়ন সাবিনাদের অলিম্পিক বাছাই খেলতে মিয়ানমার না যাওয়া নিয়ে সারা দেশজুড়েই চলছে আলোচনা-সমালোচনা ৷ বাফুফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘যে অর্থ প্রয়োজন তার সংকুলান করতে না পারায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ডিসিশন (সিদ্ধান্ত) হচ্ছে, আমাদের জাতীয় মহিলা ফুটবল দল অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার্সের খেলায় অংশগ্রহণ করছে না।’ এদিকে গণমাধ্যমে বিষয়টি আসার পর অনেকে নিজে থেকেই সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে চেয়েছেন। এরপর বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন তাদেরকে সাহায্য করার অনুরোধও জানিয়েছেন। 

অলিম্পিক বাছাই পর্বে মেয়েদের অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। আজ (শুক্রবার) আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষে মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে টাকার জন্য মেয়েদের খেলতে না পারার প্রসঙ্গ টেনে পাপন বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা যেতে পারল না। মাত্র বিশ লাখ টাকার জন্য (বাফুফে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে চেয়েছিল ৯২ লাখ। দল পাঠাতে ন্যূনতম অর্ধকোটির বেশি অর্থ প্রয়োজন হতো)। এর চেয়ে দুঃখ, কষ্ট...মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী কষ্টটাই না পেয়েছে। আপনারা চ্যানেলগুলোতে আছেন না, যে কোনো চ্যানেলের মালিকের কাছে গিয়ে বললেই দিয়ে দিতো। একজনের কাছে বলতে তো হবে। ’ 

‘বিশ্বাস করেন আমি কারো সঙ্গে কথা বলিনি, আমাদের প্লেয়াররা দিয়ে দিতো। খালি বলতো একবার। এ কী! এত গোপনে জিনিসটা রেখে, যে প্রসেসে করেছে এটা খুব দুঃখজনক। আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ে ফুটবল বোর্ডে যে পরিচালকরা আছে...অবিশ্বাস্য। বিশ লাখ টাকা দিতে পারে না। প্রতিদিন এদের খরচই তো বিশ লাখ টাকা। আমার কাছে এটা খুব আশ্চর্য লাগে।’

আরও পড়ুন: সিশেলস এগোলেও অপরিবর্তিত বাংলাদেশ

পাপন যোগ করেন, 'আমার মনে হয় অন্য কিছু আছে। আমি জানি না। এটা দুঃখজনক। দেশের জন্য এর চেয়ে বড় বদনাম হতে পারে না। আমরা বলছি দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সারা পৃথিবী মেনে নিচ্ছে। সে জায়গায় আমরা বলছি বিশ লাখ টাকার জন্য আমাদের দেশের মেয়েরা প্রি-অলিম্পিক খেলতে যেতে পারে না। এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর হয় না। এজন্য এই টপিক নিয়ে কথা বলতে চাই না। তাদের সঙ্গে কথা বলার কোনো প্রশ্নই আসে না। ’

এদিকে, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে শীতল সম্পর্ক চলছে বিসিবি সভাপতির। দিন কয়েক আগেও পাপনকে ইঙ্গিত করে কিছু কথা বলেছিলেন সালাউদ্দিন। যার প্রেক্ষিতে পাপন বলেন,  'প্রথম কথা হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফোন করলে আমি যেখানেই থাকি, যে অবস্থায় থাকি ফোন ধরবোই। আমি জানি না এটা নিয়ে কেন বলেছে। এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। আমি বলছি এ কারণে-এটার সঙ্গে ওটার কী সম্পর্ক আমি জানি না। আমার মনে হয় সমস্যাটা আপনাদের, আপনারা এত বাজে প্রশ্ন করলেন কেন। আপনারা হিসাব চাচ্ছেন, টাকা কী করছে। এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে যান কেন। এটা করলে তো উনার মাথা খারাপ হবে এটা সবাই জানেন। এমন প্রশ্ন করেন কেন। করলে মাথা ঠিক থাকবে?’ 

এর আগে সালাউদ্দিনের সেই সংবাদ সম্মেলনে পাপনের ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সালাউদ্দিন। এ নিয়ে পাপন বলেন, ‘সব জায়গাতেই সবরকমের জিনিস আছে। যেমন ধরেন ব্যাকগ্রাউন্ড। এখন সব ফুটবলার...ফুটবল ব্যাকগ্রাউন্ড মানেই কী নির্লজ্জ, বেহায়া, অহংকারী এটা বলা যাবে? তো? ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে সম্পর্ক কী আমি জানি। এটা ব্যক্তির ব্যাপার। তবে আপনারা এসব প্রশ্ন না করাই ভালো।’ 

তবে সালাউদ্দিনের কথায় মন খারাপ হয়নি পাপনের, ‘যে যত কথাই বলুক- আমার এগুলো নিয়ে প্রশ্নই ওঠে না মন খারাপ হওয়ার, চিন্তা করার। কে বলছে সেটা আসলে বড় কথা। এ ধরনের লোক বললে কিছু যায় আসে না।’

এসএইচ/এফআই