হদিস নেই দেশের দুই ঐতিহাসিক ট্রফির!
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জাতীয় পুরুষ ফুটবল দলের (সিনিয়র) সাফল্য খুবই কম। ১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকায় অভিষেক হওয়া বাংলাদেশ ফুটবল দলের গত ৫০ বছরে চ্যাম্পিয়ন ট্রফির সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকটি। এর মধ্যে দুটি ঐতিহাসিক ট্রফির (১৯৯৫ সালে মিয়ানমারের চার জাতি এবং ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সাফ ফুটবল) সন্ধান নেই দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে।
এ নিয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ হতাশার কণ্ঠেই বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অর্জিত ট্রফিগুলো ভবনেই রয়েছে। পুরনো অনেকগুলো রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। ১৯৯৫ সালের মিয়ানমার এবং ২০০৩ সালের সাফেরটা আমরা বেশকিছু দিন ধরে ভবন ও সংশ্লিষ্ট নানা জায়গায় অনুসন্ধান করেছি কিন্তু পাইনি।’
বিজ্ঞাপন
স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত অর্জিত ট্রফির প্রায় সবই বাফুফের সংরক্ষণে রয়েছে। কিছু ট্রফি ব্যাংকে, কিছু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে; সিংহভাগ ফুটবল ফেডারেশন ভবনে থাকলেও অনুপস্থিত শুধু দুই ঐতিহাসিক ট্রফি। গুরুত্বপূর্ণ ট্রফি দুটি পাওয়ার আর সম্ভাবনাও দেখছেন না বর্তমান সাধারণ সম্পাদক
আবু নাইম সোহাগ ২০০৫ সালে কম্পিটিশন ম্যানেজার হিসেবে বাফুফেতে যোগ দেন। প্রথম পেশাদার (বেতনভুক্ত) সাধারণ সম্পাদক আল মুসাব্বির সাদীর (পামেল) মৃত্যুর পর কিছু দিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে তিনি পূর্ণাঙ্গ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।
২০০৯ সাল থেকে পেশাদার সাধারণ সম্পাদকের যাত্রা শুরু। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ফুটবল ফেডারেশন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকের অধীনে মূলত পরিচালিত হয়েছে। আশির দশক থেকে বিভিন্ন সময় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা আব্দুর রহিম, হারুনুর রশিদ, মনজুর হোসেন মালু, আনোয়ারুল হক হেলাল (সিরাজুল ইসলাম বাচ্চু, প্রয়াত) কেউই এ ট্রফির সন্ধান দিতে পারেননি। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সর্বাধিক পাঁচবারের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাহী সদস্য হিসেবেও রয়েছেন বর্ষীয়ান এ সংগঠক। বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে ঐতিহাসিক দুই ট্রফির অবস্থান স্মরণ করা বেশ কষ্টসাধ্য।
এক সময় বাফুফের শীর্ষ কর্তা মনজুর হোসেন মালু ২০১২ সাল থেকে ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে সেভাবে সম্পৃক্ত নন। এরপরও তিনি স্মৃতিশক্তি হাতড়ে খানিকটা মনে করলেন। বলেন, ‘যতটুকু মনে পড়ে ফেডারেশনে এখন সিনিয়র সহ-সভাপতির কক্ষের জায়গায় আগে সেক্রেটারির রুম ছিল। সেই রুমে ছিল অনেক ট্রফি।’
আগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ছিল বাফুফে কার্যালয়। ফিফার গোল প্রজেক্ট- ১ এর আওতায় ২০০৫ সালে আরামবাগে বাফুফে ভবন নির্মিত হয়। নিজস্ব ভবন পেলেও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার এক পাশে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বাফুফে কার্যক্রম চালু রেখেছে। ১৯৮১ সালের আগাখান গোল্ডকাপ ও ১৯৮৯ সালের প্রেসিডেন্টস গোল্ডকাপের ট্রফি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অফিসেই রয়েছে
১৯৮৬-৯০ মেয়াদে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম এখনও ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে জড়িত। মালুর সঙ্গে এক মত হয়েও খানিকটা শঙ্কা পোষণ করলেন বর্ষীয়ান এ সংগঠক। বলেন, ‘এ ভবনের সেক্রেটারি রুম ও স্টোর রুমে কিছু ট্রফি-ক্রেস্ট ছিল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে নতুন ভবনে স্থানান্তরের সময় অনেক কিছু মিসিং হয়েছে।’
আগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ছিল বাফুফে কার্যালয়। ফিফার গোল প্রজেক্ট- ১ এর আওতায় ২০০৫ সালে আরামবাগে বাফুফে ভবন নির্মিত হয়। নিজস্ব ভবন পেলেও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার এক পাশে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বাফুফে কার্যক্রম চালু রেখেছে। ১৯৮১ সালের আগাখান গোল্ডকাপ এবং ১৯৮৯ সালের প্রেসিডেন্টস গোল্ডকাপের ট্রফি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অফিসেই রয়েছে।
আগাখান গোল্ডকাপে ব্যাংকক ব্যাংক ক্লাবের সঙ্গে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ব্রাদার্সের কাছে রেপ্লিকা ট্রফি থাকলেও আয়োজক বাফুফের কাছে মূল ট্রফি সংরক্ষিত ছিল। ১৯৮১ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রেসিডেন্টস কাপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয় ১৯৮৯ সালে। প্রেসিডেন্টস গোল্ডকাপে বাংলাদেশের দুটি দল খেলেছিল (সবুজ ও লাল)। কানন-কায়সারের (লাল দলের অধিনায়ক ছিলেন গোলরক্ষক সাঈদ হাসান কানন। প্রথম ম্যাচে ইনজুরিতে পড়লে ডিফেন্ডার কায়সার হামিদ বাকি টুর্নামেন্টে অধিনায়কত্ব করেন) নেতৃত্বে লাল দল চ্যাম্পিয়ন হয়। একই টুর্নামেন্টে দুই দল খেলায় এবং বিদেশি দলগুলো জাতীয় দল না হওয়ায় এটি আন্তর্জাতিক ট্রফির হিসেবে স্বীকৃত নয় কিন্তু বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এ ট্রফিও বেশ গুরুত্ববহ। কারণ, স্বাধীনতা-পরবর্তীতে দলীয় কোনো খেলায় এটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। এত গুরুত্বপূর্ণ ট্রফিটি দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের তৃতীয় তলায় ছিল (সম্প্রতি বাফুফে ভবনে আনা হয়েছে)।
গত অর্ধযুগে ফুটবলের আলোকবর্তিকা শুধু নারীদের হাতে। অনুর্ধ্ব ও সিনিয়র পর্যায় মিলিয়ে ডজন খানেকের বেশি ট্রফি নারী দলের। সেই ট্রফিগুলো বাফুফে ভবনেই রয়েছে। তবে, সুশৃঙ্খলভাবে নেই। একেক ট্রফি একেক কর্মকর্তার কক্ষে
১৯৯৫ সালে মিয়ানমারের চার জাতির টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি হিসেবে স্বীকৃত। সেই টুর্নামেন্টের অধিনায়ক মোনেম মুন্না ও ম্যানেজার মোয়াজেম্ম হোসেন উভয়ই প্রয়াত। ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে গোলদাতা সাবেক জাতীয় ফুটবলার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব বলেন, ‘ফাইনালে আমার গোলে বাংলাদেশ জিতেছিল। আমি ম্যান অব দ্য ফাইনাল হয়েছিলাম। সেই ক্রেস্টটি এখনও বাসায় যত্ন করে রেখেছি। চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটিও আমরা দেশে এনেছিলাম। ট্রফিটি এখন কোথায় আছে, কেউ জানে না শুনে হৃদয় ভেঙে গেল।’
সেই সময় ফুটবল ফেডারেশনের কমিটিতে ছিলেন নজরুল ইসলাম (কাবাডি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক)। ট্রফিটি পরবর্তীতে কোথায় সংরক্ষিত হয়েছে, তিনি সেটি স্মরণ করতে না পারলেও মিয়ানমার থেকে ট্রফি বাংলাদেশে এসেছিল— সেটি নিশ্চিত করেছেন। বলেন, ‘অনেক দিন আগের কথা। এখন আমার বয়সও আশির কাছাকাছি। ট্রফিটি বাংলাদেশে এসেছিল, এরপর কোথায় এবং কীভাবে ছিল বা আছে, জানা নেই।’
মিয়ানমারের চার জাতি টুর্নামেন্টের চার বছর পর কাঠমান্ডুতে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সাফ গেমস ফুটবলে স্বর্ণ জেতে। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হলেও ট্রফি পায়নি। কারণ, গেমসে চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফির বদলে স্বর্ণপদক পায়। সেই গেমসে স্বর্ণজয়ী দলের অধিনায়ক জুয়েল রানা এখন আমেরিকা প্রবাসী। বাংলাদেশের ফুটবলে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক দুটি ট্রফির হদিস না পাওয়ায় সুদূর আমেরিকা থেকে ফেডারেশনের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়েছেন সাবেক এ অধিনায়ক। বলেন, ‘আমাদের ফুটবল ফেডারেশন কতটুকু উদাসীন, তার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ গুরুত্বপূর্ণ দুই সম্পদের (ট্রফি) একটিও এখন তাদের কাছে না থাকা!’
২০০৩ সালের সাফের প্রস্তুতির জন্য ২০০২ সালের শেষের দিকে জর্জ কোটানের দল ভুটানে একটি টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিল। সেই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয় এবং এর প্রতিফলন ছিল সাফ টুর্নামেন্টেও। ভুটানের সেই ট্রফি এখন বাফুফে ভবনের নিচতলায় স্টোর রুমে অবহেলিতভাবে রয়েছে।
২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। ওই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক রজনী কান্ত বর্মণ থাকলেও ফাইনালে অধিনায়কত্ব করেছিলেন হাসান আল মামুন। দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফে বাংলাদেশ একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়। সেই চ্যাম্পিয়ন ট্রফির কোনো হদিস না থাকায় চরম ব্যথিত চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক। বলেন, ‘আমার হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি উঠেছিল। ট্রফি পেয়ে যে পরিমাণ আনন্দিত হয়েছিলাম, ঠিক সমপরিমাণ ব্যথিত হলাম ট্রফির হদিস না থাকায়।’
সেই চ্যাম্পিয়ন ট্রফির রেপ্লিকা বাংলাদেশের কাছে যেমন নেই, তেমনি মূল ট্রফিও উধাও! সাফের এখন নিজস্ব কার্যালয় থাকলেও আগে ‘ব্রিফকেস’ সংগঠন ছিল। তাই মূল ট্রফিটি ছিল স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস গ্রুপের কাছে। বাফুফের কাছে সেই তথ্যই রয়েছে। বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল ২০১৪ সাল থেকে সাফের সাধারণ সম্পাদক। ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস গ্রুপের কাছে ২০০৩ সালের ট্রফি নেই বলে নিশ্চিত করেছেন সাফের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস গ্রুপ সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানির কাছে সবকিছু হস্তান্তর করেছে। তাদের কাছে সাফের কোনো ট্রফি নেই। ২০১৮ সাল থেকে সাফে নতুন মডেলের ট্রফি ব্যবহার হচ্ছে।’
২০০৩ সালের পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের (সিনিয়র) আর কোনো সাফল্য নেই। ফুটবলের বড় সাফল্যের মধ্যে রয়েছে ২০১০ সালে ঢাকায় এসএ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এটি অবশ্য অলিম্পিক দল (অনূর্ধ্ব- ২৩) এবং ট্রফির বদলে ফুটবলারদের ব্যক্তিগতভাবে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। ২০১০ সালের পর থেকে বিগত এক যুগ ধরে সিনিয়র পুরুষ ফুটবল দলে কেবল চলছে ব্যর্থতার সাতকাহন।
ফেডারেশনে যেমন কোনো ট্রফি কর্নার নেই, তেমনি নেই ঐতিহাসিক অর্জনের কোনো ছবিও। সুবিশাল ভবনের কোথাও কোনো চ্যাম্পিয়ন দলের গ্রুপ ছবি নেই। চার জাতি ও সাফ গেমসজয়ী সব ফুটবলারের কণ্ঠেও একই আক্ষেপের সুর, ‘ফুটবল ফেডারেশন এখন নিজস্ব ভবনে। আমাদের অর্জনের একটি ছবিও নেই। ব্ল্যাটার, হাম্মাম নানা সময় নানা কর্নার দেখি, কিন্তু আমাদের ছবি থাকে না। অনেক সময় সাবেক ফুটবলারদের ফেডারেশনে ঢুকতেও সমস্যা হয়। গ্রুপ ফটো থাকলে সবাই আমাদের চিনত ও জানত...
গত অর্ধযুগে ফুটবলের আলোকবর্তিকা শুধু নারীদের হাতে। অনুর্ধ্ব ও সিনিয়র পর্যায় মিলিয়ে ডজন খানেকের বেশি ট্রফি নারী দলের। সেই ট্রফিগুলো বাফুফে ভবনেই রয়েছে। তবে, সুশৃঙ্খলভাবে নেই। একেক ট্রফি একেক কর্মকর্তার কক্ষে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব অর্জন একত্রে সংরক্ষণের জন্য একটি ট্রফি কর্নারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান আবু নাইম সোহাগ। বলেন, ‘জাতীয় (পুরুষ ও নারী) ও বয়সভিত্তিক দল মিলিয়ে অনেক ট্রফি রয়েছে। আমরা সেগুলো একত্রিত করে ট্রফি কর্নারের পরিকল্পনা করেছি। এ খাতে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের একটি বাজেটও রয়েছে। সেই বাজেটের জন্য আবেদন করা আছে। অনুমোদন পেলে নির্বাহী কমিটির নির্দেশনায় একটি ট্রফি কর্নার হবে।’
অন্যদিকে, ফেডারেশনে যেমন কোনো ট্রফি কর্নার নেই, তেমনি নেই ঐতিহাসিক অর্জনের কোনো ছবিও। সুবিশাল ভবনের কোথাও কোনো চ্যাম্পিয়ন দলের গ্রুপ ছবি নেই। চার জাতি ও সাফ জয়ী সব ফুটবলারের কণ্ঠেও একই আক্ষেপের সুর, ‘ফুটবল ফেডারেশন এখন নিজস্ব ভবনে। আমাদের অর্জনের একটি ছবিও নেই। ব্ল্যাটার, হাম্মাম, নানা সময় নানা কর্নার দেখি, কিন্তু আমাদের ছবি থাকে না। অনেক সময় সাবেক ফুটবলারদের ফেডারেশনে ঢুকতেও সমস্যা হয়। গ্রুপ ফটো থাকলে সবাই আমাদের চিনত ও জানত।’
স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত অর্জিত ট্রফির প্রায় সবই বাফুফের সংরক্ষণে রয়েছে। কিছু ট্রফি ব্যাংকে, কিছু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে; সিংহভাগ ফুটবল ফেডারেশন ভবনে থাকলেও অনুপস্থিত শুধু দুই ঐতিহাসিক ট্রফি। গুরুত্বপূর্ণ ট্রফি দুটি পাওয়ার আর সম্ভাবনাও দেখছেন না বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। তাই বিকল্পও ভেবে রেখেছেন তিনি। বলেন, ‘নির্বাহী কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে ট্রফি দুটির রেপ্লিকা পাওয়া যায় কি না, সে লক্ষ্যে আমরা মিয়ানমার ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করব। সাফের সঙ্গেও আলোচনা করব। মূল ট্রফি না পেলে রেপ্লিকা হলেও আমরা পাওয়ার চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশ নারী দল কয়েক দিন পরই মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাই খেলতে যাবে। সেই সময় ১৯৯৫ সালের ট্রফি নিয়ে কাজ করতে চায় বাফুফে।
ট্রফির অবস্থান
সোনালী ব্যাংক : বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ( ১৯৯৬ চ্যা : মালয়েশিয়া এবং ১৯৯৯ চ্যা : জাপান)
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মহানগর লীগ কমিটির অফিস : আগাখান গোল্ডকাপ ( ১৯৮১ যুগ্ম চ্যা : ব্রাদার্স ও ব্যাংকক ব্যাংক) এবং প্রেসিডেন্টস কাপ (১৯৮৯ চ্যা : বাংলাদেশ)
বাফুফে স্টোর : জিগমে দর্জি (২০০২ চ্যা : বাংলাদেশ)
বাফুফে ভবন : এএফসি অ-১৪ রিজিওনাল (২০১৩), বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ রানার্স আপ (২০১৫), সাফ অ-১৬ চ্যাম্পিয়ন (২০১৫), সাফ মহিলা ফেয়ার প্লে ট্রফি (২০১৬), সাফ অ-১৮ চ্যাম্পিয়ন ও ফেয়ার প্লে (২০১৮), জকি কাপ ২০১৫, সাফ অ-১৫ (২০১৮), বঙ্গমাতা অ-১৯ (২০১৯), মুজিববর্ষ নেপাল সিরিজ ২০২০, সাফ অ-১৯ নারী চ্যাম্পিয়ন (২০২১), সাফ অ-১৮ (২০২২), নারী সিরিজ (২০২২), সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন (২০২২), সাফ অ-২০ চ্যাম্পিয়ন (২০২৩)।
এজেড/এএইচএস/এফআই