বিশ্ব ফুটবলের জনপ্রিয় ত্রয়ী কোনটি- এ প্রশ্নের উত্তরে ওপরের দিকে থাকবে মেসি-নেইমার ও সুয়ারেজের নাম। ‘এমএসএন’ খ্যাত তিন বার্সা ফুটবলার আক্রমণভাগকে করে তুলেছিলেন অপ্রতিরোধ্য। একসঙ্গে দলে তাদের উপস্থিতি মানেই প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের আতঙ্কে থাকার দশা। গোলরক্ষকদেরও মুহুমুর্হু পরীক্ষার মুখে ফেলতেন তারা। একসঙ্গে তারা লিগ, ক্লাব ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও জিতেছেন। তাই ভক্তদের মতো সতীর্থরাও চেয়েছিলেন তাদের এই রসায়ন দীর্ঘ হোক। নেইমারকে সতীর্থরা বার্সাতেই রেখে দিতে চেয়েছিলেন।

২০১৭ সালে রেকর্ড মূল্যে কাতারি ব্যবসায়ী নাসের আল খেলাইফির পিএসজি নেইমারকে দলে ভেড়ায়। ফলে ভেঙে যায় শক্তিশালী এমএসএন ত্রয়ীর সেই রসায়ন। মাঠের বাইরেও এই তিনজনের সম্পর্ক ছিল বেশ উষ্ণ। নেইমারের বার্সা ছাড়ার খবর শুনে বাধা দিয়েছিলেন উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ। নেইমারকে তিনি কাতালান ক্লাবটিতে থেকে যেতে বলেন। অথবা বার্সা ছাড়লে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন সুয়ারেজ।

ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মার্কাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন সুয়ারেজ। তিনি বলেন, ‘নেইমার যদি বার্সাতে থাকত, তবে সে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের খেতাব জিতত। আমি নিশ্চিত সে ওই ক্লাবে খেলা চালিয়ে গেলে এক সময় ব্যালন ডি’অর পেত। আমার মতামত ছিল এরকম, আমিসহ থাকলে সেটি জিততে পারত নেইমার।’

প্রতিপক্ষ দলের জন্য ‘এমএসএন’ ত্রয়ী ছিল বেশ ভয়ঙ্কর!

পিএসজিকে বেছে নেওয়া নেইমারের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে উল্লেখ করেন সুয়ারেজ। সে বিষয়টি বোঝাতে মেসিসহ নেইমারের কাছে গিয়েছিলেন সুয়ারেজ, ‘আমরা নেইমারের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম ‘নেই’ (সতীর্থদের ডাকা সংক্ষিপ্ত নাম) তুমি এখানে থাকলে সবকিছু জিততে পারবে। এখানে এমন কিছু পরিস্থিতি থাকে, যা কখনো কখনো নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন।’

এই উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড আরও বলেন, ‘আমরা বন্ধু হিসেবে তাকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু মূল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার তার ও পরিবারের হাতে। আমরা তাকে বলেছিলাম, ছাড়তে চাইলে ইংল্যান্ড বেটার। ম্যানচেস্টার সিটি ভালো হতে পারে, কিন্তু ফ্রান্স কেন?’

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের লক্ষ্যেই মূলত পিএসজিতে নেওয়া হয় নেইমারকে। তার নিজেরও সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগ্রহ ছিল। কিন্তু এরপর থেকে লিগ আঁ এবং ওয়ানের শিরোপা জিতলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছে না ক্লাবটি। একাধিকবার সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। এতে অবশ্য নেইমারের চোটের ভূমিকাও কম নয়। পিএসজিতে চার বছরে মোট ৪ বার অ্যাঙ্কলের ইনজুরিতে পড়েছেন তিনি। সর্বশেষ ১৯ ফেব্রুয়ারি লিলের বিপক্ষের ম্যাচেও তিনি চোট পান। এতে ইতোমধ্যে তিনি একাধিক ম্যাচ মিস করেছেন। আগামী বুধবারের আসন্ন বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচেও খেলতে পারবেন না এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

এএইচএস