মেসিদের জার্সি পেয়ে আনন্দিত মতিন
আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পতাকা টাঙাতে উঠেছিলেন ফেনীর আবদুল মতিন। যেখানে তিনি প্রায় জীবন হারাতেই বসেছিলেন। প্রাণে বাঁচলেও হারিয়েছেন চার হাত-পা। সেই সংবাদটি তখন আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমের খবরেও উঠে এসেছিল। তখনই মহাতারকা মেসির জার্সি উপহার হিসেবে বরাদ্দ হয় মতিনের জন্য। এবার সেই জার্সি নিতে ঢাকায় আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডাক পেয়েছিলেন তিনি। কেবল তাই নয়, তাকে অনুষ্ঠানিক নিমন্ত্রণ পাঠিয়েছে আর্জেন্টিনা সরকার।
আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। নিজের সঙ্গেই তিনি মেসির উপহারের ১০ নম্বর জার্সি এনেছিলেন মতিনের জন্য। পরে ঢাকা সফরকালে আর্জেন্টাইন দূতাবাস উদ্বোধন করেন ক্যাফিয়েরো। সেখানে মতিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
সেখানে তার হাতে জার্সি হস্তান্তর করেন ক্যাফিয়েরো। উপহার পেয়ে মতিন বেশ আনন্দিত বলে জানিয়েছেন ঢাকা পোস্টকে।
মতিনের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞাঁ উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে। প্রিয় দল আর্জেন্টিনার পতাকা উড়াতে গিয়ে চিরতরে হারিয়েছেন নিজের চার হাত-পা। পরিশ্রমী ও কর্মঠ মতিনের ছিলো সাজানো-গোছানো ব্যবসা। সুস্থ-সুন্দর শারীরিক গঠনাকৃতির মতিনের এখন আর কিছুই নেই। বেঁচে আছেন আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সাহায্য-সহযোগিতায়।
এত কিছুর পরও ফুটবলের প্রতি তার আগ্রহ কমেনি। খামতি হয়নি টিম আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসারও। খোদ মেসির উপহার পেয়ে
এরই মধ্যে আর্জেন্টিনা সরকার তার সঙ্গে ইমেইলের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন বলেও জানিয়েছেন আবদুল মতিন। তবে তার অনুরোধ, ফুটবল উন্মাদনায় এমন কিছু যেন না হয়, যার রেশ টানতে হবে সারা জীবন।
মতিন বলেন, ২০১৪ সালের মার্চ মাসের ২৮ তারিখ। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগের ঘটনা। লক্ষ্মীপুর শহরের আজিম শাহ মার্কেটের তিন তলা ছাদের উপরে অ্যালমনিয়াম রডের মাধ্যমে পতাকা টানাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিদ্যুতের প্রধান সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে লেগে যায় অ্যালমনিয়ামের রডটি। মূহুর্তেই ছিটকে পড়ি পাশের দেয়ালের ওপর। তখনই হুঁশ হারিয়ে ফেলি।
সেই সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। সেখানকার আইসিইউতে ছিলাম ২৭ দিন। সবমিলিয়ে সাড়ে তিন মাস চিকিৎসা চলে। তবে ইনফেকশান হওয়ায় কোনো হাত-পা রক্ষা করা যায়নি বলে কেটে ফেলতে হয়েছে। পুরো চিকিৎসায় ৭-৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যা শেষ করে দিয়েছে ব্যবসাও। সব হারিয়ে আমি একদম শূন্য।
এএইচএস