ঝাঁকড়া চুল দুলিয়ে হ্যাংলা গড়নে তিনি সব প্রতিপক্ষ ফুটবলারকে কাটিয়ে সামনে এগোতেন। মাঠে তার ম্যাচ থাকা মানেই পায়ে কারিকুরির ঝড়। এ দৃশ্য বর্তমান মহাতারকা লিওনেল মেসির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন। তবে তারও আগে একই কায়দায় কসরত দেখিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনালদিনহো। মেসির সঙ্গে তার এখনো বেশ ভালো সখ্যতা। তবে রোনালদিনহোর পথ ধরে তার ছেলে জোয়াও মেন্দেস দা আসিস মোরেইরা বার্সেলোনাতেই যোগ দিয়েছেন।

বাবাও একসময় বার্সেলোনার হয়ে খেলেছেন। তবে জুনিয়র রোনালদিনহো সরাসরি ক্লাবটিতে আসেননি। প্রথমে তিনি ট্রায়াল দিতে এসেছিলেন বার্সেলোনায়। তার প্রতিভার জানান দেওয়ার পরই তাকে ক্লাবের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে যুক্ত করা হয়েছে।

১৪ বছর বয়স থেকে খেলা শুরু করেন মেন্দেস। তার বাবাকে ফুটবলে আনার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল চাচা রবার্তো দা আসিসের। রবার্তো এবার ভাতিজার ফুটবলের হাতেখড়ি দিয়েছেন। বাঁ পায়ের খেলোয়াড় মেন্দেস ফরোয়ার্ড লাইনে যেকোনো পজিশনেই খেলতে পারেন। মেন্দেস প্রথমে ফ্ল্যামেঙ্গো, পরে ভাস্কো দা গামা হয়ে নাম লেখান বোয়া ভিস্তার যুব দলে। ২০১৯ সালে আরেক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ক্রুজেইরোর স্কাউটদের নজরে পড়েন নিজের প্রতিভার গুণে। এরপর থেকে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ক্রুজেইরোর যুব দলেই ছিলেন। এ বছরই সে চুক্তি বাতিল করে স্পেনে পা রেখে বার্সায় যোগ দিলেন মেন্দেস।

মাঠের বাইরে বাবা-ছেলের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ

যেখানে তার ট্রায়ালে চোখ রেখেছিলেন বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। বর্তমানে বার্সেলোনার দূত হিসেবে কাজ করা রোনালদিনহোর সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলেছেন বেশ কয়েকবার। গত জানুয়ারি মাস থেকেই মেন্দেস বার্সেলোনায় ট্রায়ালে ছিলেন।

রোনালদিনহোর মতো বিশাল মাপের তারকা ফুটবলারের সন্তান হওয়ার কারণে মেন্দেসের ওপর প্রচ্ছন্ন চাপ আছে বলে মনে করেছিলেন বার্সা সভাপতি। তবে তার শঙ্কা ছিল, সেই চাপ না আবার উল্টো ফল দেয়। লাপোর্তা অবশ্য আশা করছেন, সেই চাপ থেকে বের করে এনে রোনালদিনহোর ছেলেকে দারুণ এক ফুটবলার হিসেবে গড়ে তোলার কাজটাই করবে বার্সেলোনা।

বিশ্ব ফুটবলে বর্তমানে আধিপত্য দেখাচ্ছেন মেসি-রোনালদোরা। তবে তারা আসার আগের সময়টা ছিল রোনালদিনহোদের। অর্থাৎ তৎকালীন ব্রাজিল দলে তখন তারকার ছড়াছড়ি। রোনালদো নাজারিও, রিভালদো ও রবার্তো কার্লোসদের নিয়ে ২০০২ সালের বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর জাতীয় দলের বাইরে রোনালদিনহো বেশিরভাগ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ক্যাম্প ন্যু-তে।

বিশ্ব ফুটবলে অন্যতম সেরা এই তারকা ক্যারিয়ারের ১৭ বছরের ৫ বছরই বার্সায় কাটিয়েছেন। জিতেছেন দুটি লা লিগা ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ। একবার ব্যালন ডি’অর আর দুবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারও হয়েছিলেন রোনালদিনহো। বার্সার জার্সিতে ২০৭ ম্যাচে রোনালদিনহো ৯৪টি গোল করেন।

এএইচএস