আরও একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হতাশার দ্বারপ্রান্তে পিএসজি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে হয়তো ভাগ্য লাগে। না হলে এতো এতো টাকা ঢেলেও যে কোনো কুলকিনারা পাচ্ছে না দুটি ক্লাব। হতভাগা এই ক্লাব দুটির নাম ম্যানচেস্টার সিটি আর পিএসজি। দুই ক্লাবই সাজিয়ে বসেছে তারকার পসরা। তবে তাতে একের পর এক লিগ শিরোপাই জেতা হচ্ছে তাদের। আর ইউরোপসেরার শিরোপাটা যেন তাদের জন্য কাছে থেকেও অনেক দূরে।
ফ্রেঞ্চ ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাবের নাম প্যারিস সেন্ট জার্মেই। লিগ ওয়ানে প্যারিসের দলটির যে কতোটা প্রভাব তার প্রমাণ পাওয়া যায় একটি পরিসংখ্যান থেকেই। গত ১০ বছরের লিগ ওয়ান টুর্নামেন্টের ৮টির শিরোপাই জিতেছে পিএসজি। শুধু তাই নয় ফ্রেঞ্চ কাপেও রেকর্ড সংখ্যক শিরোপার মালিক তারা। কিন্তু এই সময়ে সব মিলিয়ে পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা- ০টি।
বিজ্ঞাপন
ইউরোপ সেরার শিরোপা জিততে অবশ্য চেষ্টার কমতি রাখেনি পিএসজি। গত কয়েক বছরে ক্লাবের চেহারাই পাল্টে ফেলেছে তারা। একের পর এক বিশ্বসেরা তারকা ভিড়িয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবাইকে পেছনে ফেলেছে তারা। কোন তারকাটা নেই তাদের। সময়ের অন্যতম সেরা তিন ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপে ও নেইমার তিনজনই খেলেন এই দলের হয়ে। আছেন স্প্যানিশ তারকা ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস। মিডফিল্ড জমিয়ে রাখছেন প্রেসনেল কিম্পেম্বে আর আশরাফ হাকিমির মতো বিশ্বসেরা তারকারা। আর গোলমুখে ডোনারুমার দেয়াল। এতোকিছুর পরেও কমতি যেন কোথাও থেকেই যাচ্ছে। একের পর এক চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।
নেইমার যোগ দেওয়ার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে কাছাকাছি যাওয়ার একটা সুযোগ তৈরি করেছিল পিএসজি। ২০১৯-২০ মৌসুমে এই লিগের ইতিহাসে নিজেদের সর্বোচ্চ সাফল্যের মুখ দেখে প্যারিসের ক্লাব। তবে ফাইনালে বায়ার্নের কাছে ১-০ গোলে হেরে হৃদয় ভাঙে লা প্যারিসিয়ানদের।
পরের মৌসুমে আবারও শিরোপার কাছাকাছি গিয়ে বঞ্চিত পিএসজি। নিজেরাও শিরোপা জিতল না, আবার এমবাপে-নেইমারদেরও শিরোপার মঞ্চে উঠতে দিল না ম্যানচেস্টার সিটি। এরপর গত মৌসুমে দুই গোলের লিড নিয়েও রিয়াল মাদ্রিদের কাছে বাজভাবে ধরাশায়ী হয়েছেন মেসি-এমবাপেরা। দুঃস্বপ্নের রাত কাটিয়েছেন দলের সবাই।
এবার প্রত্যাশাটা একটু বেশিই ছিল। বিশ্বকাপ জিতে আসা মেসি এবার গতবারের চেয়ে ছিলেন বেশ ভালো ফর্মে। গতবার চোটের কারণে মাঠেই তেমন একটা নামতে না পারা নেইমারও আছেন ভালো ছন্দে। আর এমবাপে তো গত কয়েক বছর ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই প্রত্যাশার পারদটা বেশ উপরের দিকেই ছিল।
কিন্তু এবারেও নক আউটে এসে কুপোকাত পিএসজি। আর দুঃস্বপ্নের নাম বায়ার্ন মিউনিখ। নিজেদের মাঠে পিএসজিকে কোনো সুযোগই দিল না। একের পর এক আক্রমণে শুরু থেকেই পিএসজিকে চেপে ধরা মিউনিখ জিতে আসল প্রতিপক্ষের মাঠে। ১-০ ব্যবধানের জয়টা অবশ্য খুব একটা স্বস্তির নয়। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে মেসি, এমবাপে, নেইমারের সামনে জয় ছিনিয়ে নেওয়াটা নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস জোগাবে মিউনিখের দলটিকে।
আর বাকি রইল পিএসজির কথা। নিজেদের মাঠে মেসি-নেইমার-এমবাপে-হাকিমিকে নিয়েই যারা জিততে পারেনি সেই দলটাই পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষের গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের সামনে জ্বলে উঠবে এমন আশা করাটা খব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তবে ক্রীড়াজগত অনিশ্চয়তার জায়গা। তাই পিএসজি ভক্তরা আশা করতেই পারেন ফাড়া কাটিয়ে এবারই শিরোপা জয়ের পথে হাঁটবে তাদের দল।
এনইআর