মেসিদের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে শেষ আটে নেইমারহীন পিএসজি
বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল সেই ন্যু ক্যাম্পের প্রথম লেগেই। তবু পিএসজির লড়াইটা বার্সেলোনার বিপক্ষে ছিল বলেই অনিশ্চয়তা ছিল কিছুটা, শেষ আটে যেতে হলে লিওনেল মেসিদেরকে অবশ্য অসাধ্য সাধন করতে হতো। সেটা হয়নি শেষমেশ, ১-১ গোলের ড্রতে বিদায় নিয়েছে কোচ রোনাল্ড কোম্যানের দল, শেষ আটে পা বাড়িয়েছেন কিলিয়ান এমবাপেরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটে প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে তিন গোলের ব্যবধানে হেরে পরের লেগে প্রত্যাবর্তনের গল্প ছিল না একটিও। দলে মেসি ছিলেন বলেই হয়তো কোচ কোম্যান সেটা অসম্ভব ভাবেননি একটুও। তবে তার জন্য একটা শর্তও জুড়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘সৃষ্টি করা সবগুলো সুযোগ কাজে লাগাতে হবে আমাদের। আর সেটা যদি করতে পারি আমরা, তাহলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।’
বিজ্ঞাপন
সেটা তার শিষ্যরা করতে পারল কই? পুরো ম্যাচে বড় সুযোগ কম করে হলেও আটটা পেয়েছিল দলটি, তার অর্ধেক কাজে লাগাতে পারলেও তো বর্তে যেত কাতালানরা! শুরু থেকে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ ধরে রাখা বার্সেলোনার প্রথম সুযোগটা আসে ১৮ মিনিটে। বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সে ঢুকে শট নেন উসমান দেম্বেলে, তাকে রুখে দেন কেইলর নাভাস। এর মিনিট পাঁচেক পর আবারো আক্রমণে বার্সেলোনা, সার্জিনিও ডেস্টের শটটাও সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষকের আঙুল ছুঁয়ে লাগে ক্রসবারে। এর পরের মিনিটেই দেম্বেলে সৃষ্টি করেছিলেন দারুণ এক সুযোগ, তবে তার ক্রসে পা ছোঁয়াতেই পারেননি।
খেলার এ পর্যন্ত তেমন সুযোগই পায়নি স্বাগতিক পিএসজি। সেই দলটিই ধারার বিপরীতে এগিয়ে যায় ২৮ মিনিটে। বাম প্রান্ত থেকে কুরজাওয়ার ক্রস সরাসরি গিয়ে পড়ে বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনের হাতে। তবে তার আগেই অফ দ্য বলে ক্লেমেন্ত লংলে মাউরো ইকার্দিকে বাধা দিয়ে বসলে পেনাল্টি পায় কোচ মরিসিও পচেত্তিনোর দল। সফল পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দিয়ে পুরো লড়াইয়ে ব্যবধান ৫-১ করেন এমবাপে।
এরপরই মেসির দুর্দান্ত গোল আশা ফেরায় বার্সা শিবিরে। ৩৭ মিনিটে পেদ্রি গঞ্জালেজের পাস থেকে তার দূরপাল্লার শটটা নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে। বার্সা আক্রমণেও যেন প্রাণ সঞ্চার হয় এরপর। মুহুর্মুহু আক্রমণে ভাঙছিল প্রতিপক্ষ রক্ষণ। তারই সূত্র ধরে আসে দ্বিতীয় সুযোগটা। বিরতির একটু আগে কুরজাওয়া অ্যান্টোয়ান গ্রিজমানকে করে বসেন ফাউল। পেনাল্টি পায় বার্সা। কিন্তু মেসি জোরালো শট রুখে দেন নাভাস, তা গিয়ে প্রতিহত হয় ক্রসবারে।
অধিনায়কের এই মিসের প্রভাব দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা হলেও পড়েছে বার্সার খেলায়। প্রথম সুযোগটা তৈরি করতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৬১ মিনিট পর্যন্ত। ছয় গজের বক্সে পাওয়া সুযোগটিও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন মেসি। এর মিনিট দশেক পর সার্জিও বুসকেটসের দারুণ এক হেডার থামিয়ে দেন কেইলর নাভাস।
এরপর খেলা যত গড়িয়েছে পিএসজি রক্ষণাত্মক হয়েছে আরো, ফলে মেসিদের কাজটা আরো বেশি অসম্ভব হতে থাকে। খেলাটা শেষমেশ ১-১ সমতায় থেকেই শেষ হয়েছে। তাতে টানা দ্বিতীয় মৌসুমের মতো শেষ আটের টিকিট কেটেছে পিএসজি। আর বার্সেলোনা ১৪ বছর পর বিদায় নিয়েছে শেষ ষোল থেকে।
এনইউ/এটি