কাঁদতে কাঁদতেই বিদায় নিলেন সুয়ারেজ
বয়সটা ৩৫ ছুঁয়ে ফেলেছেন। বার্সেলোনার জার্সিতে মাত্র কয়েক বছর আগেই স্বপ্নযাত্রা পার করে এলেও সেই ফর্মটাও নেই এখন আর। বলতে গেলে, এটাই শেষ বিশ্বকাপ ছিল লুইস সুয়ারেজের। কিন্তু দেশের হয়ে সেই শেষ বিশ্বকাপটাও রাঙানো হল না উরুগুয়ের তারকা এই ফরোয়ার্ডের। নিজের সম্ভবত শেষ বিশ্বকাপ থেকে তাকে বিদায় নিতে হল অশ্রুসিক্ত নয়নে।
লাতিন আমেরিকার শক্তিশালী দল উরুগুয়ে এবারের বিশ্বকাপে ছিল বেশ খাপছাড়া। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচেই বর্ণহীন ছিল কাভানি-সুয়ারেজদের দল। ফলাফলও এসেছে তেমনই। গ্রুপের প্রথম দুই ম্যাচের একটিতেও জেতেনি দলটি। নকআউট পর্বের টিকেট কাটতে তাই গ্রুপের শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না লাতিন দেশটির।
বিজ্ঞাপন
বাঁচা-মরার এমন লড়াইয়ে শুক্রবার ঘানার বিপক্ষে মাঠে নামে উরুগুয়ে। এদিন ম্যাচের শুরুতেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে সুয়ারেজরা। প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করে শেষ ষোলর আশাও ভালোভাবেই টিকিয়ে রাখে তারা। বিপত্তিটা হয় দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে।
উরুগুয়ের শেষ ষোল নিশ্চিত করা নির্ভরশীল ছিল দক্ষিণ কোরিয়া-পর্তুগালের ম্যাচের ওপর। সে ম্যাচের ৯০ মিনিট পর্যন্ত খেলা ছিল ১-১ গোলে সমতায়। ম্যাচ যদি এভাবেই শেষ হতো তবে সহজেই নক আউটে উঠে যেত উরুগুয়ে। কিন্তু ৯০ মিনিটে পর গোল করে বসে কোরিয়া।
উরুগুয়ের ম্যাচের তখন ৮৫ মিনিটের মতো চলে। হঠাৎ করেই বিহ্বল হয়ে পড়েন উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা। লুইস সুয়ারেজ, দারউইন নুনেজদের চোখ ভরে এলো জলে। হতাশা, উৎকণ্ঠা বোঝা গেল স্পষ্ট। বেঞ্চ থেকে সুয়ারেজ যেন সতীর্থদের বলতে চাইলেন, যেভাবেই হোক আরেকটি গোল দাও। ৩৫ বছর বয়সী এ ফুটবলারের যে তখন কিছু করারও নেই, কারণ জয় প্রায় নিশ্চিত বলে আগেভাগেই তাকে তুলে নিয়েছিলেন কোচ। শেষমেষ গোল আর এলো না, তাই বিদায়ও এড়াতে পারল না উরুগুয়ে।
অথচ উরুগুয়ের কোচ দিয়েগো আলোন্সো যখন তাকে তুলে নিচ্ছিলেন, তখনও হাসি মুখে বেরিয়েছেন সুয়ারেজ। দল এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। কিন্তু পর্তুগালের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়া এগিয়ে যেতেই চোখে পানি এসে পড়ে তার।
তবে সুয়ারেজ জানতেন, আরও একটি গোল করলেই পরের রাউন্ডে যেতে পারবেন তারা। তবে এডিনসন কাভানিরা অনেক চেষ্টা করেও গোলটা করতে পারেননি। একটা করে গোল মিস হয়েছে, সুয়ারেজের মুখ তত কালো হয়েছে। জার্সি দিয়ে অর্ধেক মুখ ঢেকে বসেছিলেন কয়েক মিনিট। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল জল। খেলার শেষ বাঁশি বাজতেই জার্সিতে মুখ ঢেকে ফেলেন তিনি। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কাঁদছেন। আরও একটি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের যন্ত্রণা তখন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল তাকে।