বাস-রেল স্টেশন মানেই কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে চিত্র এ রকমই। এশিয়ার অন্যতম ধনী দেশ কাতারের চিত্র একেবারে ভিন্ন। 

দোহার মেট্রো স্টেশনগুলোও বিলাসবহুল ধাঁচের। স্টেশনগুলোতে কোনো কোলাহল নেই। আল রিফা মেট্রো মলে অপেক্ষা করতে দেখা গেল তিন জনকে। এক-দুই মিনিটের মধ্যে এলো ট্রেন। আল রিফায় নামলেন অনেকে আবার কেউ উঠলেন অন্য স্টেশনে যাওয়ার লক্ষ্যে। মেট্রোর ভেতরের পরিবেশও বেশ শান্ত। সুন্দর চেয়ার ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। কয়েক মিনিটের মধ্যে দোহার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত যাওয়ার সুব্যবস্থা এই মেট্রো।

আয়তনে কাতার ছোট একটি দেশ। রাজধানী দোহার আয়তনও কম। এমন দেশে বিশ্বকাপের স্বাগতিক হওয়া নিয়ে প্রশ্ন চলছেই। কাতার বিশ্বকাপ উপলক্ষে আগত অতিথিদের জন্যই এই মেট্রো করেছে। 

মেট্রো স্থাপনে যেমন নান্দনিকতা আছে, তেমনি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে দারুণ দক্ষতা। মেট্রো স্টেশনের এস্কেলেটর, মেট্রো গাড়ি, দেয়াল সর্বত্রই বিশ্বকাপের ছোঁয়া। প্রতিটি মেট্রো স্টেশন অত্যন্ত চকচকে, ঝকঝকে বিন্দুমাত্র নোংরা নেই। আগত অতিথিরা যেন কোনো সমস্যায় না পড়েন এজন্য প্রতিটি স্টেশনের প্রতিটি তলায় কয়েকজন করে স্টেশনকর্মী রয়েছেন। প্রতিটি কর্মীই ইংরেজীতে বেশ দক্ষ। ফলে দোহার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাতায়াতে কোনো সমস্যাই নেই বিশ্বকাপ আগতদের।

কাতার বিশ্বকাপে কর্মরত এক বাংলাদেশির তথ্য মতে, ‘মেট্রো স্টেশনের জন্য কাতার অসংখ্য কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। এদের সম্মানীও অনেক (বাংলাদেশি টাকায় লাখের উপরে)। মেট্রো ব্যবহারকারীরা মুগ্ধ হতে বাধ্য।’ 

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেও হচ্ছে মেট্রোরেল। রাজধানীবাসী এ নিয়ে প্রত্যাশা অনেক। সেই প্রত্যাশা পূরণ নির্ভর করবে ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার উপর।

হায়াকার্ডধারীরা এই মেট্রোর সুবিধা উপভোগ করছেন বিনা পয়সায়। চেক পোস্টগুলোতে শুধু হায়া কার্ড দেখালেই প্রবেশাধিকার মেট্রোগুলোতে। মেট্রো ছাড়া বাসগুলোও ফ্রি হায়াকার্ডের জন্য।

দোহার প্রায় সব সড়কেই বাসগুলো প্রদিক্ষণ করে। বাসগুলো একদম সুনির্দিষ্ট সময় স্ব স্ব স্টেশনে হাজির হয়। কোন সময় কোন স্টেশনে বাস যাবে এর তালিকা রয়েছে কারভা বাস নামক এক অ্যাপে।

কাতারের সড়ক ব্যবস্থাপনায় ভিন্নতা আনা হয়েছে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে। অনেক রাস্তা শুধু বিশ্বকাপের অংশগ্রহণকারী দলের জন্য বরাদ্দ। কিছু রাস্তা বন্ধ থাকায় অন্য রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বিকল্প রাস্তায় চললেও যানজট তেমন নেই। গাড়িগুলো সিগন্যাল দেখেই থেমে যাচ্ছে। সিগন্যালের পর কেউ দাগ ক্রস করলে বড় অঙ্কের জরিমানা। কিছু সড়কে গাড়ির গতিসীমা ৮০ কিমি। সেই সীমা অতিক্রম করলেই জরিমানা। রাস্তায় কোনো ট্রাফিক না থাকলেও আইনের প্রয়োগ শতভাগ।

এজেড/এনইউ