বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামাল।

বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারের ব্যাপারে কার্যকরি উদ্যোগ নিয়েছে দেশের ফেডারেশনগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ইতোমধ্যে এই পুরস্কারের জন্য খসড়া নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম এই শীর্ষ প্রতিষ্ঠানটি। 

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (অতিরিক্ত সচিব) মাসুদ করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সর্বশেষ নির্বাহী সভায় শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারের খসড়া নীতিমালা অনুমোদিত হয়েছে। কিছু পর্যবেক্ষণসহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে নীতিমালা প্রেরণ করা হয়েছে। তারা নীতিমালা অনুমোদন করলে আমরা পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ, যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করব।’

ক্রীড়াবিদ, সংগঠক, উদীয়মান ক্রীড়াবিদ, আজীবন সম্মাননা, ফেডারেশন অ্যাসোসিয়েশন, ক্রীড়া সংস্থা এই কয়েকটি ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। ৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস। প্রতি বছর এই দিনেই পুরস্কার জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে চায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। 

তবে এই বছর ৬ এপ্রিল দেওয়াটা সম্ভব নয় জানালেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিব, ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নীতিমালা চূড়ান্ত করব। এরপর আবেদন গ্রহণ, বাছাই ও চূড়ান্ত কারণে সময় প্রয়োজন। আমাদের ইচ্ছে ২০২১ সাল থেকেই পুরস্কার প্রদান করা। চলতি বছর সুবিধাজনক সময়ে আমরা এই পুরস্কার প্রদান করতে চাই।’ 

পুরস্কার প্রদানে সর্বশেষ বছরের পারফরম্যান্স বিবেচনা হবে। গত বছর করোনার জন্য তেমন খেলা না হওয়ায় ২০২০ সালের পরিবর্তে ১৯ সালের পারফরম্যান্স বিবেচিত হবে না ২০২২ সাল থেকে পুরস্কার প্রদান শুরু করবে ২১ সালের পারফরম্যান্স বিবেচনায় এই বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

চূড়ান্তভাবে মনোনীত প্রত্যেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কারের পাশাপাশি সনদ, ক্রেস্ট দেয়া হবে। খেলোয়াড় ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ পাঁচ জন ও সংগঠক ক্যাটাগরিতে দুই জন পুরস্কৃত হবেন। এছাড়া উদীয়মান ক্রীড়াবিদ, আজীবন সম্মাননা, ফেডারেশন/এসোসিয়েশন,ক্রীড়া সংস্থায় একটি করে পুরস্কার পাবেন।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন হলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করবে। প্রাপ্ত আবেদন প্রাথমিকভাবে যাচাই বাছাই করবে একটি কমিটি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আহ্বায়ক করে এই কমিটিতে থাকবেন মহাপরিচালক বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ), জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক ক্রীড়া, সরকার মনোনীত দুই জন বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একজন উপ সচিব। 

এই কমিটি যাচাই বাছাই করে সুপারিশ আকারে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিশেষ কমিটির কাছে পাঠাবে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, সদস্য সচিব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব, এছাড়া সদস্য হিসেবে থাকবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক, বিকেএসপির মহাপরিচালক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের একজন প্রতিনিধি, দুই জন বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ।

আশির দশকে বছর পাঁচেকের মতো এই পুরস্কারের প্রচলন ছিল। ১৯৯১ সালের পর আর এনএসসির পুরস্কার প্রদান হয়নি। বর্তমান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী পুনরায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর সন্তান ও বিশিষ্ট ক্রীড়া অনুরাগী, ক্রীড়া সংগঠক শহীদ শেখ কামালের নামে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়েছে।

দেশের ক্রীড়াঙ্গনে সর্বোচ্চ পুরস্কার জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। এর সঙ্গে এই পুরস্কারের মর্যাদা এবং পার্থক্য কিভাবে নিরুপণ করবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। 

এজেড/এটি/এমএইচ