ফুটবল বিশ্বকাপের আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। আজ থেকে আর ৫ মাস পরই মাঠে গড়াবে ফুটবলের মহাযুদ্ধ। ফুটবল বিশ্বকাপ মানে দর্শক সমর্থকদের বিশাল এক মিলনমেলাও। তার অনুষঙ্গ হিসেবে সবসময়ই থাকে রাতভর উদ্দাম পার্টি। বিশ্বকাপকে ঘিরে যৌনকর্মীদের রমরমাও থাকে বেশ। তবে কাতারে এমন কিছুর দেখা মিলছে না। দেশটির পুলিশ জানাচ্ছে, এমন কিছু ঘটলে ৭ বছরের জেল হবে পরিণতি।

সবশেষ দুই বিশ্বকাপ অর্থাৎ ব্রাজিল আর রাশিয়ার ফুটবলের মহাযজ্ঞকে ঘিরে লক্ষাধিক যৌনকর্মী ছিলেন ভেন্যুর আশেপাশে, দেশদুটোর পথে-ঘাটে। তবে কাতারে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আইনসিদ্ধ নয়। ফলে এই বিশ্বকাপে এমন কিছুর দেখা মিলবে না। যদি আইন ভেঙে কোনো পর্যটক এমন কিছু করেও বসেন, সেটার পরিণতিও খারাপ হবে, জানাচ্ছে স্থানীয় পুলিশ। 

পুলিশের এক মুখপাত্র সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘স্বামী-স্ত্রী জুটি না হলে বিশ্বকাপ দেখতে এসে যৌন সম্পর্ক গড়া যাবে না। এবারের আসরে ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’ থাকবে না। কোনও পার্টি করা যাবে না। নিয়ম না মানলে জেল হতে পারে। বিশ্বকাপে প্রথম বার এভাবে যৌনমিলন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। সমর্থকদেরকে তাই খুব সতর্ক থাকতে হবে।’

কাতারে বিবাহ-বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে আছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। সমকামী সম্পর্কও দেশটিতে নিষিদ্ধ। সে দেশে এই ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি হতে পারে সাত বছর পর্যন্ত জেলে থাকার।

ফিফা অবশ্য জানিয়েছিল, ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে এই প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রিত সবাই। তবে দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, ফিফার এই আমন্ত্রণের তোয়াক্কা করছে না কাতার, দেশটিতে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন না সমকামী-রূপান্তরকামীরা। 

বিষয়টা অস্বীকার করলেন না কাতার বিশ্বকাপে ফিফার মুখ্য নির্বাহী নাসের আল খাতেরও। তিনি জানালেন, সমর্থকদের নিরাপত্তার জন্যই এই পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে তাদের। বললেন, ‘প্রত্যেক সমর্থকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু জনসম্মুখে ব্যক্তিগত ভালবাসার প্রকাশ ঘটানোটা আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে নেই। সেটা সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য।’

সমর্থকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে কাতারের সুপ্রিম কমিটির পক্ষ থেকেও। কাতার ফুটবল সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মানসুর আল আনসারি বলেন, ‘কাতার খুব রক্ষণশীল দেশ। এখানে অনেক কিছুই সম্ভব নয়। সমকামিতা নিয়ে আপনি আপনার মতাদর্শ যদি প্রকাশ করতে চান, তাহলে সেটা এমন জায়গায় দেখান, যেখানে এটা আইনসিদ্ধ।’

এনইউ/এটি