মনসুর স্পোর্টিংকে নিয়েই মাঠে গড়াচ্ছে ‘নতুন’ পাইওনিয়ার
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকায় খুবই পরিচিত মুখ ছিলেন মনসুর আলী। সদা হাস্যজ্জ্বল ক্রীড়াপ্রেমী এই সংগঠক গত বছর আকস্মিকভাবে পৃথিবী ত্যাগ করেন। মনসুরের মৃত্যুর পর তার শুভাকাঙ্খীরা মনসুর স্পোর্টিং ক্লাবকে বাঁচিয়ে রাখছেন।
আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া পাইওনিয়ার ফুটবল লিগে বরবারের মতো অংশ নিচ্ছে মনসুর স্পোর্টিং ক্লাব। পাইওনিয়ার ফুটবলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্লাবের তালিকায় মনসুরের ক্লাবটি অন্যতম। এবারও মনসুরের দলটি ভালো হয়েছে বলে জানান পাইওনিয়ার লিগ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান মহিদুর রহমান মিরাজ, ‘মনসুর আমাদের সবারই প্রিয়। ক্লাবটির সভাপতি আলম ভাই এবং তার বন্ধুবান্ধবরা এবার ভালো দল গড়েছে। মনসুর স্পোর্টিং ক্লাবকে তারা টিকিয়ে রাখবে।’
বিজ্ঞাপন
আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া পাইওনিয়ার লিগটি বিগত সময়ের চেয়ে একটু ভিন্ন। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এবারের দল সংখ্যা সবচেয়ে কম। মাত্র ৪৬ টি। বয়সের ক্ষেত্রে খুবই কঠোর অবস্থানে থাকায় অনেক দল বাদ পড়েছে। এই লিগটি অ-১৫ বয়স ভিত্তিক। অনেক দলের কয়েক জন খেলোয়াড়ের বয়স কয়েক মাস বেশি। পরবর্তী পাইওনিয়ার কমিটি দলে বেশি কমে যাওয়ার শঙ্কায় প্রতি দলে অ-১৬’র ছয় জন করে খেলানোর সুযোগ দিয়েছে।
পাইওনিয়ার ফুটবলের সঙ্গে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সম্পর্ক বহু দিনের। এই লিগটি সরকারের এই সংস্থাই পৃষ্ঠপোষকতা করত। এবার সেই সম্পর্কের ছেদ হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপই এই টুর্নামেন্ট পুরো পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এরপরও সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান বাফুফে সাধারণ সম্পাদক, ‘আমরা খুব ইতিবাচক মনোভাব পাইনি দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে। এরপরও আমরা আগামী সপ্তাহে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করব।’
বাফুফে সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান পাইওনিয়ার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি উদ্বোধনীর দিন ও অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোর আর্থিক অনুদান আগের চেয়ে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। পাইওনিয়ার উপলক্ষ্যে বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ অবশ্য উপস্থিত ছিলেন না তিনি।
ব্রাদার্স মাঠ, পল্টন ময়দান, মিরপুরের গোলারটেক মাঠ, উত্তরা ১৪ নং সেক্টর ও নারায়ণগঞ্জের আলীগঞ্জ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এই লিগ। পাঁচ ভেন্যুতে দু’টি করে গ্রুপ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপ থেকে দুইটি করে মোট ২০ টি দল সুপার লিগ খেলবে। সুপার লিগে ২০ টি দল চার গ্রুপে খেলবে। চার গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন খেলবে সেমিফাইনাল। এই চার সেমিফাইনালিস্ট তৃতীয় বিভাগে উন্নীত হবে।
সাবেক জাতীয় ফুটবলার ইলিয়াস হোসেন এই পাইওনিয়ার থেকে ভবিষ্যৎ সালাউদ্দিন, বাদল বের করে আনতে চান, ‘প্রতিটি ভেন্যুতে দুই জন করে বাফুফের কোচ থাকবে। তারা মেধাবী খেলোয়াড় খুঁজবে। সেই মেধাবী তালিকায় থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে আরেকটি ট্রায়াল হবে। সেই ট্রায়ালে যারা ভালো করবে তারা এলিট একাডেমীতে অনুশীলনের সুযোগ পাবে।’
পাইওনিয়ার মানেই বয়স চুরি, এক দলের খেলোয়াড় আরেক দলে, বাজে মাঠ সহ নানা অভিযোগ। বিগত যে কোনো আসরের চেয়ে এবার বয়সের ব্যাপারটি অনেক স্বচ্ছভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে বাফুফে। বাকি ব্যবস্থাপনাতেও নতুনত্ব থাকার ঘোষণা ডেপুটি চেয়ারম্যানের, ‘এবারের পাইওনিয়ার লিগ বিগত সময়ের চেয়ে একটু ভিন্ন মানে করার চেষ্টা হচ্ছে। আশা করি সেটা সবাই লিগ মাঠে গড়ালে বুঝতে পারবেন।’
এজেড/এনইউ