‘প্রথম’ মোহনবাগান ও সালাউদ্দিন
অন্য সব বিদেশি ক্লাবের চেয়ে মোহনবাগান বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে বিশেষভাবে জড়িয়ে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম বিদেশি ফুটবল ক্লাব হিসেবে মোহনবাগান বাংলাদেশ সফর করেছিল।
১৯৭২ সালে ১৩ মে ঢাকা স্টেডিয়ামে মোহনবাগান বাংলাদেশ একাদশের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ নিজেদের মাটিতে বিদেশি ক্লাবের সঙ্গে খেলে। ফিফা ও এএফসির স্বীকৃতি না পাওয়ায় বাংলাদেশ একাদশ হিসেবে খেলতে হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ও প্রথম জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়কের মতো এই ম্যাচেও বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ একাদশ সেই ম্যাচটি ১-০ গোলে জেতে। জয়সূচক গোলদাতা ছিলেন কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
দেশের বিজ্ঞ ফুটবলপ্রেমী ও সালাউদ্দিন ভক্ত অনেকের দৃষ্টিতে ৭২ সালে মোহনবাগানের বিপক্ষে করা গোলটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা। আশি উর্ধ্ব জাকারিয়া পিন্টু ৫০ বছর আগের সেই গোল এখনও কিছুটা মনে রেখেছেন, ‘ওই ম্যাচটি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। সালাউদ্দিনের গোলেই আমরা জিতেছিলাম। সময় ও গোলের অ্যাকশন সেভাবে পুরোপুরি মনে নেই। যতটুকু মনে পড়ে অনেক দূর থেকে সালাউদ্দিন দুর্দান্ত শটে আকর্ষণীয় গোল করেছিল।’ গতকাল এক ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই স্মৃতিচারণ করছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে বিদেশি ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় জয় দিয়ে। আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থার স্বীকৃতি না থাকায় সেই ম্যাচের গোল ও রেকর্ড আন্তর্জাতিক মর্যাদা পায় না। আন্তর্জাতিক মর্যাদা না পেলেও বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে সেই ম্যাচ ও গোলটি অত্যন্ত ঐতিহাসিক।
বাংলাদেশ ফুটবল দলের কোচ হিসেবে ছিলেন শেখ সাহেব আলী। এই ম্যাচেও কোচ হিসেবে ছিলেন সাবেক এই ফুটবলার। মোহনবাগান ঢাকা আসার ছয় মাস পর দুটো ম্যাচ খেলতে এসেছিল কলকাতার আরেক ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল।
বাংলাদেশ একাদশে যারা ছিলেন : জাকারিয়া পিন্টু ( অধিনায়ক), শারফুদ্দিন আহমেদ ( সহ-অধিনায়ক), শহিদুর রহমান সান্টু, মোঃ কাশেম, আশরাফ আলী, মোকলেসুর রহমান, আইনুল হক, মনোয়ার হোসেন নান্নু, কানু, আব্দুল হাকিম, নাজির আহমেদ জুনিয়র, নাসির উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সলিমুল্লাহ, কায়কোবাদ, আলী ইমাম, বটু, তমিজউদদীন, এনায়েতুর রহমান খান, কাজী সালাউদ্দিন, নওশেরুজ্জামান, মালা ও সুলতান আহমেদ।
কোচ : সাহেব আলী
রেফারি : শহীদ উদ্দিন ইস্কান্দার (কচি) নোয়াখালী জেলা
এজেড/এটি