সমালোচনার পর চট্টগ্রামে বসছে নতুন চেয়ার
বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন অনেকটাই ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোর প্রায় সবই হয় মিরপুরে। চলতি বছর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যেখানে বাংলাদেশ দল তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছে ১৯টি, সেখানে ঢাকার বাইরে হয়েছে মোটে ৩ ম্যাচ।
সিলেট, কক্সবাজার, খুলনা, বগুড়া, রাজশাহীর মতো ভেন্যুগুলো ম্যাচ আয়োজন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঢাকার বাইরের ৩টি ম্যাচই আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে চট্টগ্রাম। এই ৩ ম্যাচের আবার দুটি টেস্ট, একটি ওয়ানডে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে দর্শক মাঠে প্রবেশ করতে পেরেছে শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে।
বিজ্ঞাপন
দর্শক মাঠে ফিরিয়ে তো মহা বেকায়দায় বিসিবি। মিরপুরে নিরাপত্তা বেষ্টনী টপকে এক সমর্থকের মাঠে প্রবেশ করার ঘটনা কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তুলকালাম শুরু হয়ে গ্যালারিতে বসা নিয়ে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দীর্ঘদিন পর দর্শক ফিরিয়েছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে, তবে বসবে কোথায়?
ভাঙা চেয়ারে সয়লাব গোটা স্টেডিয়াম। ১৮০০০ দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন গ্যালারিতে ৫০০০ সমর্থকদের জন্য টিকিট বিক্রয় হলেও সবাই চেয়ারে বসার সুযোগ পাচ্ছেন না। অধিকাংশ চেয়ারই ভাঙা, বসার অযোগ্য। এ নিয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান চট্টগ্রাম টেস্ট চলাকালে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে ভাঙা চেয়ারের বিষয়টি। সমালোচনাও হয়েছে অনেক। এতেই টনক নড়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সম্পত্তি নয়। এটি দেখভালের দায়িত্ব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। দীর্ঘদিন ধরে চেয়ার পরিবর্তনদের বিষয়টি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে জানিয়ে আসছে বিসিবি আর চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, তবে সুরাহা হচ্ছে না কিছুরই। অবশেষে এনএসসিকে বাদ দিয়েই নতুন চেয়ার স্থাপনের দায়িত্ব নিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বানের কাজ শেষ হয়েছে। দেশের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন তারা ইতোমধ্যে কিছু নমুনা চেয়ার স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশ-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজের পর আগামী জানুয়ারিতে আসন্ন বিপিএলের আগেই শেষ হবে ভাঙা চেয়ার সরিয়ে নতুন চেয়ার প্রতিস্থাপনের কাজ।
বিসিবির ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারি রুবেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘চেয়ারের বিষয়টা সমাধানের পথে। আমরা আরএফএলে অর্ডার করেছি। ইতোমধ্যে নমুনা হিসেবে কিছু চেয়ার বসানোও হয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট শেষ হলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব চেয়ার এসে পড়বে। আসন্ন বিপিএলের আগেই সব চেয়ার জায়গা মতো বসে যাবে বলে আশা করছি।’
কতগুলো চেয়ার এবার বসানো হবে জানতে চাইলে ফজলে বারির ব্যাখ্যা, ‘আমাদের স্টেডিয়ামে ১৮ হাজার ধারণক্ষমতা। তার মধ্যে সব চেয়ার তো নষ্ট না। ৬ হাজার চেয়ার ভালো আছে। বাকি ১২ হাজার আবার নতুন করে বসানো হবে।’
সবশেষ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ছিল দর্শক। এরপর করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতি, তা শেষে বাংলাদেশ পাকিস্তান সিরিজের সদ্যসমাপ্ত প্রথম টেস্টে আবার দর্শক ফিরেছে সেখানে। তবে তাদের ফেরাটা একেবারেই স্বস্তির নয়।
কতগুলো চেয়ার এবার বসানো হবে জানতে চাইলে ফজলে বারির ব্যাখ্যা, ‘আমাদের স্টেডিয়ামে ১৮ হাজার ধারণক্ষমতা। তার মধ্যে সব চেয়ার তো নষ্ট না। ৬ হাজার চেয়ার ভালো আছে। বাকি ১২ হাজার আবার নতুন করে বসানো হবে।’
গ্যালারির কোথাও চেয়ার আছে, কোথাও নেই। চেয়ার থাকলেও সেগুলোর অবস্থা একাবারেই নাজুক। রক্ষণাবেক্ষণের দুর্বলতায় অধিকাংশ চেয়ারই ভেঙে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, চেয়ারগুলো না থাকলেই যেন ভালো। কারণ এসব চেয়ারে বসে খেলা দেখা রীতিমত অসম্ভব।
অবশেষে মিলেছে স্বস্তির খবর। চট্টগ্রামের সমর্থকদের আক্ষেপ মিটছে। আগামী ২০ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের আসন্ন মৌসুম শুরুর সূচি আছে। সব ঠিক থাকলে চট্টগ্রামে ফিরবে বিপিএল। তার আগেই গ্যালারিতে বসে যাবে নতুন চেয়ার।
টিআইএস/এনইউ