প্রত্যাশার লাগাম ছেড়ে দিয়েছি আমরা অনেক আগেই। কিন্তু বাস্তবতা যদি বুঝতে পারি, ইতিহাসের পাতায় যদি চোখ রাখি, তবে অবশ্যই বুঝতে হবে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমরা সেই তিমিরেই দাঁড়িয়ে। দেশের মাঠে কিছু জয় ছাড়া সাফল্য কোথায়? এই যেমন ২০ ওভারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এক যুগ পেরিয়ে আসলেও জয় মাত্র একটি। বৈশ্বিক আসরে চেনাই যায় না টাইগারদের!

সেই ব্যর্থতার চোরাগলিতে এবার বন্দি বাংলাদেশ দল। আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবারও প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির দেখা হচ্ছে না কিছুতেই! তিন ম্যাচ খেলে হার তিনটিতেই। শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ- তিন প্রতিপক্ষের কাছে হেরে বিশ্বকাপ সেমি-ফাইনালে উঠার মিশনটাও কার্যত শেষ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের। তবে আরও দুটো ম্যাচ বাকি। যে দুটি জিতলে অন্তত জয়ের খাতা খুলবে বাংলাদেশের।

মঙ্গলবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা) প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের বিপক্ষে জয় চাইছে টাইগাররা। মাঠে আর মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় দলটার আত্মবিশ্বাসও তলানিতে। এখান থেকে জেগে উঠতে একটা জয় প্রয়োজন। আর সেটি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে হলে তো দারুণ হয়। বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গে জানিয়ে রাখলেন, এবার তারা খুলতে চান জয়ের খাতা।

সোমবার অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো বলছিলেন, ‘দেখুন, আমরা তো সব ম্যাচই জিততে চাই, জানি যে জয়ের তাড়নাটা অনেক সেই সঙ্গে হারলে হাতাশাটাও অনেক। আমাদের ফোকাসটা হল ওই ব্যাপারটায়, যে পথে এগিয়ে আমরা জয়টা পেতে পারি। আমরা সবাই জেতার চেষ্টা করছি।’

তবে জয়ে তো চোখ সেই শুরু থেকেই ছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে একের পর এক ভুলে সর্বনাশ। লিটন দাসের দুটো ক্যাচ মিস বিপাকে ফেলে দেয় দলকে। তারপর আর মাথা তুলে দাঁড়ানো হয়নি! পরের ম্যাচে ইংল্যান্ড আর সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জেতা ম্যাচটাও হেরে গেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। 

তাইতো ডমিঙ্গে বলছিলেন, ‘যখন শুধু জয় নিয়েই ভাবি তখন কি করা লাগবে তা অনেক সময় গুলিয়ে যায়। আমাদের ওই ব্যাপারটা হচ্ছে। আমাদের স্কিল ও প্রসেসের উপর নজর দিতে হবে। কালকের (মঙ্গলবার) ম্যাচে সেই কাজটা করলে হয়ত ফল আমাদের দিকে আসবে।’ 

দুঃখজনক হলেও সত্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচ খেলে হেরেছে তিনটিতেই। আবার বিশ্বকাপ ইতিহাসে সব মিলিয়ে টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে টাইগারদের মাত্র একটি জয়। সেই ব্যাপারটি মনে করিয়ে দিলেন টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে বাংলাদেশ মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে। এখন আমাদের সামনে এই রেকর্ডটা সমৃদ্ধ করার সুযোগ আছে। সামনের দুটি ম্যাচ জিতে আমরা তা করতে পারি। ভবিষ্যতের জন্য এটা অনেক বড় পদক্ষেপ হবে। আবশ্যই কাল (মঙ্গলবার) আমাদের জয়ের খাতা খুলতে হবে।’

রাসেল ডমিঙ্গো শেষ প্রত্যয়টা সত্য হলেই হয়। একটা জয় যে বড্ড প্রায়োজন বাংলাদেশের। তবে অস্বস্তির খবর হলো-প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এই লড়াইয়ে বাংলাদেশকে খেলতে হবে সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই। যিনি ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন বিশ্বকাপ থেকে! ‘প্রথম’ জয়ের দেখা পাবে তো সেরা তারকাবিহীন বাংলাদেশ?

এটি/টিআইএস