নতুন ইতিহাস লিখে সুপার টুয়েলভে নামিবিয়া
অঘটন বলবেন একে? নাহয় কী আখ্যা দেবেন এই ম্যাচকে? আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে নামিবিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের কোনো তুলনা চলে না। সেই আয়ারল্যান্ডকেই এবার স্তব্ধ করে সুপার টুয়েলভে চলে গেল ‘পুঁচকে’ নামিবিয়া!
‘পুঁচকে’ই তো! সব মিলিয়ে আইসিসি বিশ্বকাপের মঞ্চে নামিবিয়া দ্বিতীয়বারের মতো দর্শন দিচ্ছে এবার। বিশ্বকাপ ইতিহাসে নামিবিয়ার প্রথম জয়টাও এসেছে এই দুই দিন আগে, নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড? নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে ‘মুরগি নাচিয়ে’রা হারিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানকে, এরপর সুপার এইটে বাংলাদেশকে। পরের বিশ্বকাপগুলোতেও ছিল দলটির সরব উপস্থিতি। তবে এ সব ইতিহাসকে ‘বাজে আলাপ’ বানিয়ে আজ ইতিহাসটা নতুন করে লিখল নামিবিয়া।
বিজ্ঞাপন
ম্যাচটা মহাগুরুত্বপূর্ণ ছিল দুই দলের জন্যই। অঘোষিত নকআউট ম্যাচ ছিল এটি। টুর্নামেন্ট তো বটেই, নিজেদের জন্যও দুই দলের কাছে এই ম্যাচের মাহাত্ম্য ছিল বেশ। সে ২০১২ বিশ্বকাপে যে শেষবার পেরিয়েছিল গ্রুপ পর্বের বৈতরণী, এরপর থেকে যেন মূল লড়াইয়ের স্বাদটা ভুলেই গিয়েছে আইরিশরা। অন্যদিকে নামিবিয়া এবার দ্বিতীয়বার খেলতে এসেছে বিশ্বকাপে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথমবার। প্রথমবারেই বাজিমাতের সুযোগ কে হাতছাড়া করতে চায়? নামিবিয়া চায়নি, দিনশেষে করেওনি।
অথচ এ মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের শুরুটা কথা বলছিল আইরিশদের হয়েই। অধিনায়ক অ্যান্ড্রিউ বালবার্নি জিতলেন টসে, নিলেন ব্যাট করার সিদ্ধান্ত। সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন বড় ম্যাচে প্রতিপক্ষকে রান-পাহাড়ে চাপা দেওয়ার ইচ্ছেটা। ওপেনার পল স্টার্লিং আর কেভিন ও’ব্রায়েন মিলে পাওয়ার প্লেতে যখন তুললেন ৫৫ রান, তখন বড় রান হজমকেই মনে হচ্ছিল নামিবিয়ার নিয়তি।
তবে আফ্রিকান দলটা এরপরই ম্যাচে ফিরল দারুণভাবে। তাতে আইরিশ ব্যাটারদের ব্যর্থতার দায়ও আছে বৈকি। দুই ওপেনার স্টার্লিং আর কেভিন ৩৮ আর ২৫ এর পর এক বালবার্নি (২১) ছাড়া যে কেউ দুই অঙ্কের রানই ছুঁতে পারেননি! তাতে ইতিহাস গড়া থেকে মাত্র ১২৬ রানের দূরত্বে চলে আসে নামিবিয়া।
১২৬ রান টি-টোয়েন্টির বিচারে তেমন কিছু নয় আদৌ। বিশেষ করে তা যখন শারজাহর মন্থর উইকেটে হয়। পাওয়ারপ্লেতে যখন এক উইকেট হারিয়ে মোটে ২৭ রান উঠল নামিবদের স্কোরবোর্ডে, তখন তো তা আরও পরিষ্কারই হয়ে যায়।
ছয়ের ঘরের আস্কিং রেট ক্রমে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এক পর্যায়ে তা নয়েও চলে গিয়েছিল। তবে নামিবিয়া ছিল যথেষ্ট স্থিতধী, উইকেট হারায়নি এ সময়। শেষে সেটাই কাজে দিল যেন। ছয় ওভারে ৪৯ রান যখন দরকার, তখন নতুন ব্যাটার ডেভিড ভিসে ক্রেইগ ইয়াংয়ের এক ওভারেই মারলেন দুটো ছক্কা। আস্কিং রেটটা ছয়ের ঘরে নেমে তাতে। এরপর ঠাণ্ডা মাথায়ই ম্যাচটা বের করে নিয়েছে নামিবিয়া। আয়ারল্যান্ডের অপেক্ষা বেড়েছে তাতে। আর নামিবিয়া সুপার টুয়েলভে উঠে গড়ে ফেলে ইতিহাস।
এনইউ