অনবদ্য ফিফটির পথে ডেভিড উইসে/ক্রিকইনফো

নামিবিয়ানদের বিশ্বকাপ ইতিহাসটা মোটেও ভালো নয়। ২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে তাদের একমাত্র অংশগ্রহণ, সেবার ১৪ দলের মধ্যে ১৪তম হয়ে বিদায় নিয়েছিল দলটি। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস এর আগে এক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের বিশ্বকাপেই খেলেছে তিনবার। আছে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডকে হারানোর সুখস্মৃতিও। ধারে ভারে দুই দলের তুলনা চলে না আদৌ। কিন্তু সেই নামিবিয়াই কিনা এবার হারিয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডকে!

ডাচদের বিপক্ষে তাদেরকে এই জয় অবশ্য পাইয়ে দিয়েছেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ডেভিড ভিসে। তার অনবদ্য ফিফটিতে ভর করেই পুঁচকে নামিবিয়া ছয় উইকেটে হারিয়েছে ডাচদের।

তাতে একটা ইতিহাসও গড়া হয়ে গেছে আফ্রিকান দলটির। এর আগে কোনো বিশ্বকাপ মঞ্চে নামিবিয়া শেষবার খেলেছিল সেই ২০০৩ সালে। সেবার ৬ ম্যাচ খেলে জয় ছাড়াই বিশ্বকাপ শেষ হয়েছিল তাদের। চলতি আসরে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো বিশ্বকাপ মঞ্চে এসেছে দলটি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এই কীর্তিতে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো জয়ের স্বাদও পেয়ে গেছে ‘দ্য ঈগলরা’।

ইতিহাস গড়ার দিনে শুরু থেকেই যেন প্রকৃতি ইঙ্গিত দিচ্ছিল নামিবিয়ারই পক্ষে। টসে জেতেন অধিনায়ক গেরহার্ড ইরাসমাস। নেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। 

স্টিফেন মাইবার্গ আর ম্যাক্স ও'দউদের কল্যাণে শুরুটা ভালোই হয় ডাচদের। পাওয়ারপ্লেতে দলটা তুলে ফেলে ৪৫ রান। তবে এরপর ছন্দপতন ঘটে তাদের। ১৩ রানে দুই উইকেট হারায় ডাচরা। মাইবার্গ আর মারওয়ে বিদায় নেন।

তাদের বিদায়ের পর ওপেনার ও’দউদ অ্যাকারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস গড়ায় মন দেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দু’জনে যোগ করেন ৮২ রান। ১৮তম ওভারে অ্যাকারম্যান ফেরেন ৩৫ রান করে। তবে ও’দউদ লড়ে গেছেন শেষতক। ৫৬ বলে ৭০ রান করেছেন তিনি। নেদারল্যান্ডসকে লড়াকু পুঁজি এনে দিয়েছে এই ইনিংসটাই।

সঙ্গে শেষ দিকে স্কট অ্যাডওয়ার্ডসও খেলেছেন দারুণ। ১১ বলে ২১ রানের ইনিংস শেষ দিকে দ্রুত কিছু রান এনে দিয়েছে ডাচদের। যারই ফলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ডাচরা।

জবাবে নামিবিয়ার শুরুটাও হয়েছে বেশ ভালো। পাওয়ার প্লেতে এক উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৪১ রান। তবে সে শক্ত ভিতটা ধরে রানের গতি বাড়াতে পারেনি দলটি। ফলে দশ ওভার শেষে দলের স্কোরবোর্ডে জমা পড়ে মাত্র ৬৮ রান, পাওয়ার প্লের পর থেকে এ পর্যন্ত হারিয়েছে আরও তিনটি উইকেট। তাতে শেষ দশ ওভারে দলটির প্রয়োজন পড়ে ৯৭ রান।

ভিসের কীর্তির শুরু তার একটু আগে থেকে। পুরো ইনিংসে পাঁচটা ছক্কা হাঁকিয়েছেন। যার শুরুটা করেছিলেন আবার আরেক দক্ষিণ আফ্রিকানকে দিয়েই। রোয়েলফ ফন ডার মারওয়েকে মারা ছক্কাটা এসেছিল দশম ওভারে। এরপর থেকে অধিনায়ক ইরাসমাসকে সঙ্গে নিয়ে লড়ে গেছেন বুক চিতিয়ে, ম্যাচ শেষ করে যখন উঠছেন, নামের পাশে যোগ হয়ে গেছে আরও চারটি করে চার আর ছক্কা। মাঝে অধিনায়ককে হারিয়েছেন বটে, কিন্তু তা নামিবিয়ার জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ছয় উইকেটের জয়টা সহজেই তুলে নেয় নামিবিয়া, গড়া হয়ে যায় ইতিহাসটাও।

এনইউ