তালিকা থেকেই এবার বাদ পড়ল মাশরাফির নাম
হঠাৎ করেই আলোচনায় মাশরাফি বিন মুর্তজা। দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেটের বাইরে আছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক এই সফল অধিনায়ক। গতকাল (শনিবার) আচমকা মিরপুর স্টেডিয়ামে হাজির মাশরাফি। যদিও পরে জানা যায়, ক্রিকেটীয় কোন কার্যক্রম নয়, স্রেফ দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন তিনি। তবে গুঞ্জন আছে, মাঠের মানুষটি আবার মাঠে ফিরতে চান। এমনকি আসন্ন জাতীয় ক্রিকেট লিগ দিয়ে লাল বলের ক্রিকেটে ফিরবেন বলে খবর চাওর হয়েছে।
২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর দেশের ক্রিকেটে অনিয়মিত হয়ে পড়েন মাশরাফি। এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় না বললেও বাংলাদেশের জার্সিতে সবশেষ ম্যাচ খেলেছেন প্রায় দেড় বছর আগে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত এই পেসার। সবশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছেন গত বছরের ডিসেম্বরে।
বিজ্ঞাপন
এরপর বাদ দিয়েছেন অনুশীলনও। তবে মাশরাফির ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, আবার সবুজ গালিচায় ফিরতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মাঝে ওজন বেড়ে হয়েছিল প্রায় ৯৭ কেজি। সেটি কমিতে ৭৯-তে এনেছেন মাশরাফি। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) আর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) শুরু থেকেই খেলতে চান, এজন্য তার প্রস্তুতি হিসেবে দীর্ঘদিন পর ফিরবেন এনসিএলে। তবে খুলনার বিভাগের এই প্রতিনিধির নাম তালিকাতেই নেই বলে জানা গেছে।
খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এসএম মুর্তজা রশিদী দারা ঢাকা পোস্টকে জানান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে আসন্ন এনসিএলের যে ৩০ জন খেলোয়াড়ের তালিকা পাঠানো হয়েছে, সেখানে নেই মাশরাফির নাম। তালিকার শুরুতে নাম থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে বাদ দেওয়া হয়েছে তাকে। মাশরাফি পরিবর্তে একজন স্পিনারকে বিবেচনা করা হয়েছে। মাশরাফির অনুপস্থিতিতে সাকিব আল হাসানের নাম উঠে এসেছে ৩০ জনের তালিকায় এক নম্বরে।
দারা বলছিলেন, ‘মাশরাফি যে খেলবে এটা তো প্রকাশ করতে হবে আমাদের কাছে। আমরা বুঝবো কিভাবে সে খেলবে! গতবারও আমরা তার নাম রেখেছিলাম ৩০ জনের তালিকায় শুরুতে। এবারও প্রথম আমি যে চিঠিটি স্বাক্ষর করি, সেখানে মাশরাফির নাম ছিল সবার আগে। পরে আমাদের যে কোচ, তিনি বললেন, মাশরাফি লিস্ট-এ বা টি-টোয়েন্টি হলে খেলতে পারবে, কিন্তু চারদিনের ম্যাচ মনেহয় খেলতে পারবে না। এজন্য তার নাম সরিয়ে রাজিবুল নামে এক স্পিনারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
এনসিএলে মাশরাফির খেলার বিষয়ে দারার ব্যাখ্যা, ‘মাশরাফির সঙ্গে এ বিষয়ে আমার কোন কথা হয়নি। আমাদের ম্যানেজারের সঙ্গেও কোন কথা হয়নি। আমাদের যে কোচ আছেন তার সঙ্গেও কোন কথা হয়নি। আমি যতদূর জেনেছি লঙ্গার ভার্সন ক্রিকেট খেলার মতো যতটুকু সময় লাগে সেটা সে পাবে না। এর জন্য ঠিকঠাক অনুশীলন করতে পারে না।’
এবারের এনসিএল শুরুর সম্ভাব্য তারিখ আগামী ১৫ থেকে ১৭ অক্টোবর। এর জন্য ক্রিকেটাররা অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন। তবে সে দলে যোগ দেননি মাশরাফি। জানা গেছে, নিরবে-নিভৃতে ফিটনেস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে এর পাশাপাশি ম্যাচ ফিটনেসও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০০৯ সালের পর দেশের হয়ে আর টেস্ট খেলেননি মাশরাফি। সবশেষ ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলেছেন ২০১৮ সালে সাউথ জোনের হয়ে।
দারা জানালেও, ফিটনেস টেস্টে পাস করার পর খেলার আগ্রহ প্রকাশ করলে মাশরাফির বিষয়ে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করবে খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা।
দারা বললেন, ‘সে খুলনা বিভাগকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে। এজন্য আমরা তার কাছে আমরা ঋণী। সে যদি আমাদেরকে কখনো জানায় সে খেলতে চায়, অবশ্যই আমরা তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিব।’
৩০ জনের তালিকায় না থাকলেও মাশরাফির ফেরার প্রক্রিয়াটা কি হবে সেটিও তুলে ধরলেন দারা, ‘আমাদের যে মিটিং হয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে, সেখানে কথা থাকে যে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের আমরা সব সময় পাব না। এজন্য আমরা যে ৩০ জনের তালিকা দিই, এই ৩০ জন ক্রিকেটারের বাইরে থেকে আরও ক্রিকেটার নেওয়ার সুযোগ আমাদের দিতে হবে। এটা একটা সুযোগ আছে আমাদের সামনে। যেহেতু এবার আমাদের অনেক ক্রিকেটার সে সময় বিশ্বকাপ খেলতে যাবে।’
টিআইএস/এটি