টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দল থেকে সরে গেলেন তামিম ইকবাল। স্বেচ্ছায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতীয় দলের এই তারকা ক্রিকেটার। নিজেই ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

বুধবার দুপুরে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এসে এমন ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। সালাম দিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে আমাদের বোর্ড প্রেসিডেন্ট পাপন ভাই, আমাদের চিফ সিলেক্টর নান্নু ভাইকে আমি ফোন করেছিলাম। ফোন করে তাদের সঙ্গে কিছু জিনিস আমি শেয়ার করেছি। যেটা আমি সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। আমি তাদের বলেছি যে আমার মনে হয় না ওয়ার্ল্ড কাপ টিমে আমার থাকা উচিত।’

বিশ্বকাপের বাকি নেই আর দুই মাসও। এর আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের শেষ সিরিজ। সেই সিরিজে চোটের কারণে নেই তামিম। এর আগে অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, কিংবা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও ছিলেন না তিনি। সবশেষ টি টোয়েন্টিটাও সেই ২০২০ এর মার্চে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেই তামিমেই ভরসা থাকবে কি না দলের, এমন একটা প্রশ্ন ছিলই। এবার তামিম নিজেই বিশ্বকাপ থেকে সরিয়ে নিলেন নিজেকে।

বিশ্বকাপ দল থেকে সরে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তামিম বলছিলেন, ‘সবচেয়ে বড় কারণ বেশ কিছুদিন ধরে আমি এই ফরম্যাটটা খেলছি না। আর দ্বিতীয়ত ইনজুরি। কিন্তু আমার মনে হয় না ইনজুরি বড় সমস্যা। আমি আশা করি ওয়ার্ল্ড কাপের আগেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যে জিনিসটা আমার কাছে প্রধান মনে হয়, এই সিদ্ধান্ত নিতে যে ব্যাপারটা বড় ভূমিকা রেখেছে সেটি হলো- যেহেতু আমি সর্বশেষ ১৫-১৬টা টি-টোয়েন্টি খেলি নাই, এই সময়টাতে আমার জায়গায় যারা খেলছিল, আমার মনে হয় না এটা ফেয়ার হবে তাদের প্রতি। যদি আমি হঠাৎ করে এসে তাদের জায়গাটা নিয়ে নিই।’

তামিমের বিশ্বাস বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে থাকতেন তিনি। এ কারণেই আগে থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ সপ্তাহে বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করার কথা ছিল। তার আগেই সরে গেলেন তামিম। ৩২ বছর বয়সী এই ওপেনার বলছিলেন, ‘হয়তো আমি বিশ্বকাপ দলে থাকতাম। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় না এটা ফেয়ার হতো। এ কারণেই বোর্ড প্রেসিডেন্ট আর নির্বাচকদের জানিয়েছি। সম্ভবত ওয়ার্ল্ড কাপে আপনারা আমাকে দেখবেন না। আমি এতটুকুই বলতে পারি, দলের জন্য সবসময় শুভকামনা।’

অবসর নিচ্ছেন না তামিম। সেটাও পরিষ্কার করলেন এই অভিজ্ঞ তারকা। বলেন, ‘আরেকবার পরিষ্কার করে দিই, আমি অবসর নিচ্ছি না। কিন্তু সম্ভবত এই বিশ্বকাপটা আমার খেলা হবে না। আমার কাছে মনে হয় যে, এটাই যথাযথ সিদ্ধান্ত। তরুণ যারা এখন জাতীয় দলে ওপেন করছে, ওদের সুযোগ পাওয়া উচিত। কারণ তারা শেষ ১৫-১৬ ম্যাচ ধরে খেলছে। ওদের প্রস্তুতিও আমার চেয়ে ভালো হবে। পাশাপাশি আমি এটাও মনে করি, তারা দলকে আমার চেয়ে ভালো সার্ভিস দিতে পারবে।’

মিডিয়ার প্রতিও অনুরোধ রেখেছেন তামিম। বলেন, ‘আমি আমার মতো করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং এই সিদ্ধান্তেই অটল থাকব। নতুন করে কিছু বলার নেই, আমি সব কারণ বলেছি। আশা করি আপনারা আমার প্রাইভেসিকে সম্মান করবেন। আর আমার সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন। এখানে কনট্রোভার্সির কিছু নেই, এটা আমি অনুভব করি মানুষ হিসেবে হয়তো আপনারা অনেকে আমাকে চেনেন না কিন্তু যারা আমার ক্লোজ তারা সবাই আমার ব্যাপারে জানেন, আমি যাই করি আমি আমার মন থেকে করি।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ২৩ অক্টোবর। তার আগে বিশ্বকাপের রাউন্ড ওয়ান শুরু ১৭ অক্টোবর, ওমানে। এবার রাউন্ড ওয়ান টপকেই বিশ্বকাপে খেলতে হবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের। সেই মিশনে তামিমের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

এটি/এনইউ/জেএস