মুশফিকের হয়ে কথা বললেন মাশরাফি
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। এজন্য আগেই ১৯ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, সেখানে উইকেটরক্ষক আছেন তিনজন। মুশফিকুর রহিম আর লিটন দাস টানা দুই সিরিজ পর স্কোয়াডে ফিরেছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ে আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন নুরুল হাসান সোহান।
মুশফিক-লিটন ফেরায় প্রশ্ন ওঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেটের পিছনে দেখা যাবে কাকে! এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল (সোমবার) এক ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো জানান, পাঁচ ম্যাচের সিরিজে শুরুর দুই ম্যাচ কিপিং করবেন সোহান, পরের দুই ম্যাচে গ্লাভস উঠবে অভিজ্ঞ মুশফিকের হাতে। এই চার ম্যাচের পারফরম্যান্স বিবেচনায় পঞ্চম ও শেষ ম্যাচের উইকেটরক্ষক নির্বাচন করবে টিম ম্যানেজমেন্ট।
বিজ্ঞাপন
এমন সিদ্ধান্তের পর চটেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চুলচেড়া বিশ্লেষণ করে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন তিনি। তুলে ধরেছেন বিভিন্ন বিষয়। যেখানে আনন্দের পরিবর্তে বিষাদ-শঙ্কা দেখছেন মাশরাফি।
মাশরাফি লিখেছেন, ‘সোহান সম্ভবত দলের সেরা কিপার। সাথে লিটন। এক সিরিজ গ্যাপে যোগ হলো মুশফিক। এক দলে এতো কিপার এ তো আনন্দের, তা না হয়ে বের হয় বিষাদ। এতোটুকু সামাল দিতে না পারলে তো সমস্যা। যা এক পর্যায়ে দলের ভিতর অদৃশ্য এক বাজে প্রতিযোগিতা চলে আসবে। টিম ম্যানেজম্যান্টের সিদ্ধান্ত তারা তাদের মতো করে নিবে, এটাইতো স্বাভাবিক এবং অবশ্যই ভালোর জন্য নিবে।’
সঙ্গে যোগ করেন মাশরাফি, ‘১৬টা বছর যে মানুষটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছে তাকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে আপনি যতো বড় ক্ষমতাধর মানুষ হোন না কেন একটু জায়গা বুঝে বলা উচিত। মুশফিক কিভাবে জাতীয় দলে এসেছে তা সবাই জানে সিম্পিলি তার ব্যাটিং দক্ষতা।’
টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত বাইরে আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মাশরাফি। জানান, কে খেলবে, কোন পজিশনে খেলবে, কার রোল কি এগুলো তো দলের একান্ত পরিকল্পনা যা ড্রেসিং রুমে শুরু আবার ড্রেসিং রুমেই শেষ হয়। বাহিরে বলতে গেলে তো খেলোয়াড়ের ওপর চাপ সৃষ্টি হয় যা তার স্বাভাবিকতাকে বাঁধাগ্রস্ত করবে। সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের ভূয়সী প্রশংসা করেন মাশরাফি।
সাবেক অধিনায়কের ব্যাখ্যা, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের দুজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটারকে সেটা আবার নিজ দলের খেলোয়াড়কে, আপনি যুদ্ধ করে বাঁচতে বলবেন সেটা ড্রেসিং রুম পর্যন্ত থাকাই ভালো। অবশ্যই দলের স্বার্থ সবার আগে। দলের আগে কোন খেলোয়াড় হতে পারে না। কিন্তু যে ক্রিকেটারগুলো দেশের হয়ে খেলতে নামে তারা কোন সহানুভূতি নিয়ে নয় বরং তার শরীরের সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দলে জায়গা পায়। আর মুশফিকের সে গল্প আমরা সবাই জানি, তার নিবেদন কি পর্যায়ে। বাংলাদেশের হাজার হাজার উঠতি ক্রিকেটারদের আইডল সে।’
সঙ্গে যোগ করেন মাশরাফি, ‘কে খেলবে, কোন পজিশনে খেলবে, কার রোল কি এগুলো তো দলের একান্ত পরিকল্পনা যা ড্রেসিং রুমে শুরু আবার ড্রেসিং রুমেই শেষ হয়। বাহিরে বলতে গেলে তো খেলোয়াড়ের ওপর চাপ সৃষ্টি হয় যা তার স্বাভাবিকতাকে বাঁধাগ্রস্ত করবে। আমি শুধু ভাবছি এতে কি সোহানের জন্যও খুব ভালো হলো যে ছেলেটা দুই ম্যাচে সব দেখিয়ে টিকে থাকতে হবে, তাহলে বিগত দুই সিরিজ সে যা করলো তার কি হবে? আর লিটন কি বলবে? এখন ও তো কিপিং ভুলেই যাবে। আর মুশফিক কে পারফর্ম করতে হবে ১৬ বছর খেলার পর! এটা বলে দেওয়ার কিছু নাই সে খুব ভালো করেই জানে বরং বাহিরে এভাবে বললে তার নিবেদনকে অসম্মানিত করা হয়। যা তার প্রাপ্য না।’
টিআইএস/এটি