প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের স্পিনে কাবু হয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য স্পিনের চেয়ে বেশি অজিদের ভুগিয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং। দুই ম্যাচ মিলিয়ে মুস্তাফিজ অজিদের এতটাই ভুগিয়েছেন যে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার মোজেস হেনরিকেস বলেই বসলেন, এমন দারুণ বোলিং তিনি আইপিএলেও করতে দেখেননি মুস্তাফিজ।

মিরপুরের মন্থর উইকেটে মুস্তাফিজের স্লোয়ার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বেশ বিপাকে ফেলেছে অজিদের। শুরুটা জস ফিলিপকে ফিরিয়ে। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে লেগ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন বলটা। প্রত্যাশার চেয়ে ধীরগতির হওয়ায় ফিলিপের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বলটা গিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। বোকা হয়ে চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না ফিলিপের।

এরপর অধিনায়ক ওয়েডকেও মন্থর গতি দিয়েই বিদায় করেন। ১৭তম ওভারে যখন রান বাড়ানোর চাপ অজিদের ওপর ঠিক তখন। এবারও বলটা লেগ স্টাম্পে করেছিলেন মুস্তাফিজ, সেটা স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে তিনি পাঠাতে চেয়েছিলেন অজি অধিনায়ক, পিচ করার পর ধীরগতির হয়ে যাওয়ায় যেটা ব্যাটে বলে হয়নি তার। ফলে তা গিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। আরও একবার বোকা বনে যান মুস্তাফিজের প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান। 

এরপরের বলেই তিনি ফিরিয়েছেন অ্যাশটন অ্যাগারকে। আউটের ধরন না মিললেও আউট হওয়ার পর ব্যাটসম্যানের হতাশ, বোকাটে অভিব্যক্তি অবশ্য ছিল একই। মুস্তাফিজ বলটা অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন, তার ‘কাটারটা’ প্রত্যাশার চেয়ে নিচু বাউন্স নিয়ে ব্যাটসম্যানের ব্যাট ছুঁয়ে গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের গ্লাভসে। 

মিরপুরের ধীরগতির উইকেটকে যেভাবে বুদ্ধিদীপ্তভাবে কাজে লাগিয়েছেন মুস্তাফিজ, তার তারিফ না করেই পারলেন না হেনরিকেস। বললেন, ‘আজ মুস্তাফিজ দেখিয়েছে দ্রুত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তার কেমন। আমি মনে করি, আজ ২৪টা বলই স্লোয়ার করেছে, গতি দেওয়ার চেষ্টাই সে করেনি।’

মুস্তাফিজকে আইপিএলেও বল করতে দেখেছেন হেনরিকেস। কিন্তু অজি অলরাউন্ডারের মনে হয়েছে, সেখানেও এমন বোলিং করতে দেখেননি তাকে। তিনি বলেন, ‘তাকে আইপিএলে দেখেছি আমি। আমার মনে হয় না সেখানেও তাকে কখনো এমন বোলিং করতে দেখা গেছে। সেখানে সে যা করেনি, সম্ভবত সেটাই এখানে করে দেখিয়েছে সে।’

আইপিএলের সঙ্গে এখানের বোলিং কেন ভিন্ন, সেটাও ব্যাখ্যা করে বললেন হেনরিকেস। বললেন, ‘সঠিক পরিসংখ্যানটা ঠিক বলতে পারব না, তবে আমার মনে হয় সেখানে সে এখানকার অর্ধেক স্লোয়ার করে থাকে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘পরিস্থিতির সঙ্গে সে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছে সে। এর কৃতিত্ব পুরোপুরি তার। আর এখানে তার স্লোয়ারগুলোও বেশ দুর্বোধ্য। এখানে তো বটেই, এর থেকে ভালো উইকেটেও সে দারুণ স্লোয়ার দিতে পার। এসব খেলা সত্যিই অনেক কঠিন। পরিস্থিতি বদলাতে হলে দ্রুতই এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে আমাদের। স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলতে হবে দ্রুতই তাকে মোকাবেলা করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে আমাদের।’

এনইউ/এটি