সাঈদ আজমল– পাকিস্তান ক্রিকেটে আবির্ভূত হয়েছিলেন এক ধূমকেতু হিসেবে। ম্যান ইন গ্রিনদের হয়ে ক্যারিয়ারটা টিকেছিল মোটে ৭ বছর। একজন ক্রিকেটার তো বটেই, অফ-স্পিনারের জন্য ক্যারিয়ারটা ছিল আরও ছোটো। কিন্তু যতদিনই খেলেছেন, ছিলেন এক দূর্বোধ্য স্পিনার হিসেবে। দেশে কিংবা দেশের বাইরে, প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্ক হয়েই ছিলেন সাঈদ আজমল। 

কিন্তু আজমলের ক্যারিয়ারটা লম্বা হয়নি অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগে। খেলা থেকেই দূরে ছিলেন। পরে বোলিং অ্যাকশন পালটে যখন দলে আবার আসলেন, ততদিনে হারিয়ে ফেলেছেন নিজের সেই ক্ষুরধার বোলিংটাকে। এখনও আজমল বিশ্বাস করেন, তৃতীয় কোনো পক্ষের কারণেই তার অ্যাকশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছিল। 

২০১৫ সালের ২৪ই এপ্রিল মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে খেলেছেন পাকিস্তানের হয়ে নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ২০১২ সালের এশিয়া কাপটাও জিতেছিলেন ঢাকার মাঠেই। খেলেছেন বিপিএলের শুরুর আসরগুলোতে। সেটাও ঢাকার জার্সিতে। অনেকগুলো বছর পর এবার ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজির মেন্টরের ভূমিকায় ফের এলেন সাঈদ আজমল। 

বিপিএলের সিলেট পর্বে পাকিস্তানি এই স্পিনিং উইজার্ড কথা বলেছেন ঢাকা পোস্টের সঙ্গে। স্বল্পভাষী সাঈদ আজমলের সেই সাক্ষাৎকার পাঠকের উদ্দেশে তুলে ধরা হলো– 

ঢাকা পোস্ট : অনেকদিন পর বাংলাদেশে এলেন। এখানের আপ্যায়ন কেমন উপভোগ করছেন?

বাংলাদেশ অসাধারণ। সত্যিই খুব উপভোগ করছি এখানে এসে। আগে এসেছিলাম খেলোয়াড় হিসেবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে। এবার নতুন ভূমিকায়। বেশ উপভোগ করছি। 

ঢাকা পোস্ট : বিপিএলে খেলোয়াড় থেকে মেন্টরের ভূমিকায়। কোনটা বেশি উপভোগ করছেন? 

মেন্টরের কাজটা আসলেই অনেক ভালো। অন্তত আমাকে খেলতে হচ্ছে না (হাসি)।

ঢাকা পোস্ট : ঢাকার শুরুটা ভালো হয়নি। কি মনে করেন, ঢাকা ক্যাপিটালস কী ঘুরে দাঁড়াতে পারবে?

কেন নয়। আমাদের আশা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। ইনশাআল্লাহ আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাবো। সিলেটে আশা করি শেষটা ভালোভাবে করে যেতে পারবো। 

ঢাকা পোস্ট : ঢাকা ক্যাপিটালসের মালিকানায় থাকা শাকিব খান বাংলাদেশের মুভি ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় তারকা। দেখা হয়েছে তার সঙ্গে? 

না। এখন পর্যন্ত না। আমি শুধু সিইও এর সাথেই এখন পর্যন্ত কথা বলেছি। হয়তো ভবিষ্যতে হবে। 

ঢাকা পোস্ট : বাংলাদেশে পাকিস্তানের অনেক ভালো স্মৃতি আছে। এখানে আসলে পাকিস্তান জাতীয় দলের কথা কি এখনো আপনার মনে পড়ে? 

সবকিছুই আমার স্পষ্ট মনে আছে। বাংলাদেশে আমরা দারুণ আতিথ্য পাই। এটা সত্যিই অনেক বড় পাওয়া। 

ঢাকা পোস্ট : ২০১২ সালের এশিয়া কাপে আপনাদের তিন স্পিনার ছিলেন যে কোনো দলের জন্যই ভয়ঙ্কর– আফ্রিদি, আপনি এবং হাফিজ…

আমরা তিনজনেই সে সময় দুর্দান্ত। যে কোনো প্রতিপক্ষকে ভোগানোর মতো সামর্থ্য আমাদের ছিল সেসময়। আমাদের স্পিন আক্রমণ খুবই অসামান্য ছিল। 

ঢাকা পোস্ট : বল হাতে অনেক ব্যাটারের জন্যই ছিলেন দুঃস্বপ্নের মতো। আপনার নিজের কাছে কি মনে হয় কাকে বেশি ভুগিয়েছেন?

কুমার সাঙ্গাকারা। ব্যাট হাতে সে ছিল খুবই পরিণত একজন ক্রিকেটার। 

ঢাকা পোস্ট : আপনার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে বিতর্ক আছে। আইসিসি থেকে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন। সম্প্রতি সাকিব আল হাসানের বোলিংও প্রশ্নবিদ্ধ হলো...

অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত কিছু না। আমার মতো ঠিক একই জিনিস সাকিব আল হাসানের সঙ্গে হয়েছে। সাকিবকে অন্যায়ভাবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ১৭ বছর ক্রিকেট খেলার পরে ইংলিশ ক্রিকেট তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কারও প্রশ্ন তোলার থাকলে শুরুতেই তোলা উচিত। এত বছরের পরীক্ষিত একজন খেলোয়াড়কে এভাবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্যায়।

ঢাকা পোস্ট : বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারের সঙ্গে আপনার ভালো পরিচয় আছে?

সাকিব। সে আমার খুবই ভালো বন্ধু। আমরা একসঙ্গে কাউন্টি ক্রিকেট খেলেছি। প্রায় ৫ থেকে ৬ বছর আমরা একসঙ্গে খেলেছি। 

ঢাকা পোস্ট : বাংলাদেশের ক্রিকেটে কাজ করার প্রস্তাব পেলে কি করবেন?

অবশ্যই লুফে নেবো। যদি আমাকে ভালো কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়, আমি কাজটা করতে দারুণ আগ্রহী। 

এসএইচ/জেএ