রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি) লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। বেশ কয়েকজন পরিচালকের পদত্যাগ এবং ফারুক আহমেদ বিসিবির সভাপতি হওয়ার পর গতকাল পর্যন্ত পাঁচটি বোর্ড সভা হয়েছে। এই সভায় দেশের নারী ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। কেবল তাই নয়, নারী ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি এবং উইনিং বোনাসও বাড়তে যাচ্ছে।

২০২৪-২৫ মৌসুম থেকে নিগার সুলতানা জ্যোতিদের নতুন বেতন কাঠামো প্রয়োগ করা হবে জানিয়েছে ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ। বিসিবির বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে, নারী দলের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ছে মাসে ২০ হাজার টাকা হারে। ফলে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ১ লাখ ২০ হাজার এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের মাসিক বেতন দাঁড়াবে ১ লাখ টাকায়।

এ ছাড়া ‘সি’ ও ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের বেতনও ১০ হাজার টাকা করে বাড়ছে। নতুন বেতন কাঠামোয় ‘সি’ ক্যাটাগরি ৭০ হাজার এবং ‘ডি’ ক্যাটাগরির জন্য মাসে ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে জাতীয় দলের নারী ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি ও উইনিং বোনাসও বাড়ছে আকর্ষণীয় অঙ্কে। 

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সম্প্রতি ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা

এক বিবৃতিতে বিসিবি জানিয়েছে, ‘এখন থেকে নারী ক্রিকেটাররা ১–৩ নম্বর র‌্যাঙ্কিংয়ে থাকা দলকে হারাতে পারলে প্রতি ওয়ানডেতে ১ লাখ টাকা করে পাবে। এ ছাড়া ৪–৬ র‌্যাঙ্কিংধারীদের বিপক্ষে ৭৫ হাজার এবং ৭–৯ নম্বরে থাকা দলের সঙ্গে জিতলে পাবে ৫০ হাজার টাকা। টি-টোয়েন্টিতে ১–৩ নম্বরের দলকে হারালে ৫০হাজার, ৪–৬ নম্বর দলের বিপক্ষে ৩৫ হাজার এবং ৭–৯ র‌্যাঙ্কিংয়ের দলকে হারালে ৩০ হাজার টাকা করে পাবে।’ এই দুই ফরম্যাটে সিরিজ জিতলেও একইভাবে বোনাস দেওয়া হবে জাতীয় নারী দলকে।

২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছেন—

এ ক্যাটাগরি : নিগার সুলতানা জ্যোতি, ফারজানা হক পিংকী, রিতু মনি ও নাহিদা আক্তার
বি ক্যাটাগরি : ফাহিমা খাতুন, শামীমা সুলতানা, শারমিন আক্তার সুপ্তা, মুর্শিদা খাতুন, মারুফা আক্তার ও রাবেয়া খান
সি ক্যাটাগরি : সোবহানা মোস্তারি, লতা মন্ডল, জাহানারা আক্তার ও সোমা আক্তার
ডি ক্যাটাগরি : দিশা বিশ্বাস, সুলতানা খাতুন, দিলারা আক্তার ও সাথী রানি

এদিকে, নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ১৮ জন থাকলেও, আরও ৩০ জন রয়েছেন ঘরোয়া চুক্তির অধীনে। এ নিয়ে গতকাল সভা শেষে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটাররা আমাদের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রয়েছে। এর বাইরে আরও ৩০ ক্রিকেটারকে আমরা চুক্তির আওতায় আনব। এটি হবে পুরুষ ক্রিকেট দলের মতো, যেখানে জাতীয় (ঘরোয়া) লিগ খেলা ক্রিকেটাররা চুক্তিতে থাকে। নারী ক্রিকেটেও চালু করা হবে সেটা।’

জাতীয় চুক্তিভুক্ত ৩০ ক্রিকেটার :

সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদ, ইশমা তানজিম, ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা, সুমাইয়া আক্তার, শারমিন সুলতানা, রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক, ফারজানা আক্তার লিসা, সুরাইয়া আজমিম, পূজা চক্রবর্তী, নিশিতা আক্তার নিশি, শম্পা বিশ্বাস, জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা, সাবিকুন নাহার জেসমিন, সানজিদা আক্তার মেঘলা, ফাতেমা জাহান সোনিয়া, রিয়া আক্তার শিখা, মিষ্টি রানি সাহা, জান্নাতুল ফেরদৌস তিথি, আয়েশা আক্তার (জুনিয়র), ফুয়ারা বেগম, মোসাম্মৎ ঈভা, সুমাইয়া আক্তার সুবর্ণা, জান্নাতুল মাওয়া, দিপা খাতুন, আফিয়া আসিমা ইরা, উন্নতি আক্তার, তাজ নেহার, শরিফা খাতুন।

এএইচএস